দলিত ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রকে অপহরণ করে মারধর করার অভিযোগ উঠল তাঁরই পরিচিতদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি জেলায় ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনা শুরু হয়েছে নানা মহলে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিগৃহীত তরুণের নাম এ জেমস। ২২ বছর বয়সি ওই তরুণ নেলোর জেলার রেড্ডিপালেম গ্রামের বাসিন্দা। শ্রী বিদ্যা নিকেতন কলেজের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তিনি। অভিযোগ, গত ১১ মে জেমস এবং তাঁর বন্ধু গুরু সাই রেড্ডিকে তাঁদের হস্টেলের বাইরে থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় এক দল যুবক। তার পর তাঁকে একটি ঘরে আটকে রেখে তাঁর উপর অকথ্য অত্যাচার চালানো হয় বলে অভিযোগ। এমনকি, প্রস্রাব পান করতেও বাধ্য করা হয়। এর পরেই যশবন্ত, কিরণ, জগ্গা, ললিত, সাই গৌড়া, বংশী, রূপেশ এবং আরও কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান জেমস। সেখানে গিয়েও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা উল্টে জেমসকেই সতর্ক থাকতে বলেন।
আরও পড়ুন:
থানা থেকে ফিরে সমাজমাধ্যমে নিজের বয়ান-সহ একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন জেমস। ভিডিয়োবার্তায় তাঁর দাবি, দলিত হওয়ার কারণেই নিশানা করা হয়েছিল তাঁকে। জেমসের কথায়, ‘‘ওরা আমাকে নির্মম ভাবে মারধর করে, তা আমার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। আমাকে তিন-চার দিন ধরে আটকে রাখা হয়েছিল, অকথ্য শারীরিক নির্যাতনও চালানো হয়েছিল। থানায় গিয়েও কোনও লাভ হয়নি।’’ জেমস আরও অভিযোগ করেন যে, হামলাকারীরা তাঁকে বার বার জাত তুলে অপমান করছিলেন এবং তাঁকে প্রস্রাব পান করতে বাধ্য করেছিলেন। জেমসের কথায়, ‘‘ওরা বার বার বলছিল, তফসিলি জাতিভুক্ত হয়ে তোর এত কথা বলার সাহস কী ভাবে হল?’’ ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তৎপর হয় পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, জেমসকে শ্রীনিবাসপুরমের এলিট পার্ক হোটেলের ২০৯ নম্বর কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল। সেখানে তাঁকে রড এবং বেল্ট দিয়ে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। ঘটনায় তদন্তে নেমেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। ঘটনার নিন্দা করেছেন ওয়াইএসআরসিপি নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগনমোহন রেড্ডিও। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। দলিতদের কোনও নিরাপত্তা নেই। এই ঘটনাটিই তার উদাহরণ।’’