ধরা দিতে চেয়েছিলেন, নাকি চাননি। ১৯৯৩ সালে মুম্বই বিস্ফোরণে মূল অভিযুক্ত দাউদ ইব্রাহিমকে নিয়ে ফের সরগরম ভারত। দাউদ ধরা দিতে চেয়েছিলেন বলে সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন প্রাক্তন সিবিআই কর্তা নীরজ কুমার। কিন্তু আজ সে কথা অস্বীকার করেছেন তিনি।
মুম্বই বিস্ফোরণের জন্য গঠিত সিবিআই দলে ছিলেন ১৯৭৬ ব্যাচের আইপিএস অফিসার নীরজ। পরে দিল্লির পুলিশ কমিশনার হন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নীরজ দাবি করেন, ১৯৯৪-এর জুনে দাউদ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এমনকী আত্মসমর্পণেও রাজি ছিলেন। ভারতে এলে অন্য মাফিয়া ডনেরা তাঁকে খুন করবে, আশঙ্কা ছিল দাউদের। নীরজ সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘দাউদকে জানাই, ধরা দিলে নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে সিবিআই। শেষ পর্যন্ত সিবিআইয়ের শীর্ষ কর্তারাই বিষয়টি নিয়ে এগোতে নিষেধ করেন।’’
সম্প্রতি এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে নীরজ দাবি করেন, পাকিস্তানে এক ব্যক্তিকে ধরতে সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরের শক্তিকে ব্যবহারের কথা ভেবেছিল সিবিআই। রাজনীতিকদের চাপে পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়। নাম না করলেও নীরজ দাউদের কথাই বলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। নীরজের এই বক্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়। প্রাক্তন সিবিআই প্রধান বিজয় রাম রাওয়ের দাবি, দাউদের আত্মসমর্পণের প্রস্তাবের কথা তিনি জানতে পারেননি। বিজয়ের বক্তব্য, ‘‘দাউদকে ধরতে সিবিআই অনেক চেষ্টা করেছে। এমন কোনও প্রস্তাব এলে সিবিআই বা ভারত সরকার সেই সুযোগ হারাত না।’’ চাপের মুখে আজ নীরজের দাবি, সংবাদমাধ্যম তাঁর কথার ভুল ব্যাখ্যা করেছে। তিনি দাউদের ধরা দেওয়ার প্রস্তাবের কথা বলেননি। তবে দাউদ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।
এক সময় প্রাক্তন আইনমন্ত্রী রাম জেঠমলানীও দাবি করেন, দাউদ আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিলেন। দাউদ তাঁকে ফোনও করেছিলেন। তা তিনি মহারাষ্ট্রের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শরদ পওয়ারকে জানান বলেও দাবি জেঠমলানীর। পুলিশ দাউদের প্রস্তাব মানেনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একাংশের দাবি, দাউদ একাধিক বার বিভিন্ন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব পাঠান। গোয়েন্দাদের মতে, যখনই দাউদের উপরে চাপ বেড়েছে তখনই এই প্রস্তাব পাওয়া গিয়েছে। নয়াদিল্লিকে এ ভাবে ভুল বার্তা দিয়ে চাপ কমানোর চেষ্টা করেছেন ডি কোম্পানির মাথা। আগরা শীর্ষ বৈঠকের সময় দাউদকে ভারতের হাতে তুলে দিতে পারভেজ মুশারফকে অনুরোধ করেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবাণী। মুশারফ জানান, দাউদ নামে কেউ পাকিস্তানে নেই। গোয়েন্দারা জানতে পারেন, মুশারফের সফরের আগে দাউদকে দুবাইয়ে সরিয়েছে আইএসআই।