Advertisement
E-Paper

মহারাষ্ট্রে কীটনাশকের বিষক্রিয়ার ২০ কৃষকের মৃত্যু, দৃষ্টি খোয়ালেন বহু

মাঠে কীটনাশক ছড়াতে গিয়ে তার কিছু অংশ উড়ে এসে পড়ে আদিকের চোখে। আর তার পর থেকেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন তিনি। প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা এবং গায়ে র‌্যাশ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনিও।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ১৫:০০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ এলাকার ইন্দের রাঠৌর। কীটনাশক নিয়ে মাঠে স্প্রে করছিলেন। কিছু ক্ষণের মধ্যে চোখ জ্বালা করতে শুরু করে। দৃষ্টিশক্তি ক্রমে ক্ষীণ হয়ে আসে। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইন্দের। দৃষ্টি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। আদৌ হবে কি না, নিশ্চয়তা নেই তারও। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ইন্দের দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ায় অবসাদের জেরে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন।

একই ঘটনা ঘটে ৩৯ বছরের ব্রক্ষ্মানন্দ আদিকের সঙ্গেও। মাঠে কীটনাশক ছড়াতে গিয়ে তার কিছু অংশ উড়ে এসে পড়ে আদিকের চোখে। আর তার পর থেকেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন তিনি। প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা এবং গায়ে র‌্যাশ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনিও।

আরও পড়ুন: নিজের জন্মস্থানে গিয়ে আবেগে ভাসলেন প্রধানমন্ত্রী

শুধু ইন্দের বা ব্রক্ষ্মানন্দ নন, জেলা হাসপাতালে গেলে চোখে পড়বে একই কারণে শ’য়ে শ’য়ে কৃষক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কারও অবস্থা আবার আশঙ্কাজনক। কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় গত দু’মাসে যেখানে মৃত্যু হয়েছে ২০ কৃষকের। হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন প্রায় ৬০০ কৃষক। মুম্বই থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দূরে ইভাটমল জেলার ঘটনা।

ঘটনার শুরু চলতি বছরে অগস্টে। বাজারে নতুন প্রফেক্স সুপার কীটনাশক কেনেন চাষিরা। আর সেই কীটনাশক ব্যবহার করেই নাকি মৃত্যু হয় এক কৃষকের। কিন্তু তখন বিষয়টিতে কেউ ততটা গুরুত্ব দেননি। রাশ টানা হয়নি এই কীটনাশকের উপরেও। এমনকী রাজ্য সরকারের দাবি, বিষয়টি যে কতটা গুরুতর তা বুঝতে না পেরে সরকারকে জানানোরই প্রয়োজন মনে করেনি জেলা প্রশাসন। যার জন্য ওই একই কীটনাশক ব্যবহার করে একের পর এক কৃষিমৃত্যু হয়। সম্প্রতি কৃষিমৃত্যু নিয়ে বম্বে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়। তার পরই নড়েচড়ে বসে সরকার। জানা যায়, ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২০ জনের। এক চিকিৎসক জানান, নতুন নতুন বাজার চলতি এই সমস্ত কীটনাশকের কোনও প্রতিষেধক নেই। কীটনাশকের গায়ে তা লেখা থাকে। শুধুমাত্র রোগের লক্ষণগুলির উপর নির্ভর করে চিকিৎসা করা হচ্ছে।

মহারাষ্ট্র পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তের পর পাঁচটি বেসরকারি কৃষি সেবা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই পাঁচ কেন্দ্র থেকেই ওই কীটনাশক সরবরাহ করা হয়েছিল। উপযুক্ত পরীক্ষা ছাড়া ভয়ঙ্কর এমন একটা কীটনাশক কেন বাজারে ছাড়া হল, কারণ জানতে চেয়ে সরবরাহকারী ওই পাঁচ বেসরকারি সংস্থা এবং এর নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় কীটনাশক বোর্ড সদস্যদের নোটিস জারি করেছে বম্বে হাইকোর্ট।

সঠিক সময়ে ব্যবস্থা না নেওয়ার ব্যর্থতা স্বীকার করেছে মহারাষ্ট্র সরকারও। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস ক্ষতিপূরণ হিসাবে আক্রান্ত পরিবার পিছু দু’লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে যাতে এরকম ঘটনা না ঘটে তার জন্য কীটনাশক বিক্রির উপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে চলেছে সরকার। বাজারে আসার আগে কীটনাশক ব্যবহারের ছাড়পত্র এবং তা স্প্রে করার সময় কৃষকরা যথেষ্ট নিরাপত্তা নিচ্ছেন কি না তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

Maharastra Insecticides Farmer মহারাষ্ট্র কীটনাশক কৃষক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy