ছবি: পিটিআই।
বিজেপির ‘শেষ কলসি’ পশ্চিমবঙ্গেই ডুববে বলে মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লির ভোটে বিজেপির পরাজয়ের পরে এভাবেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূলনেত্রী। মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় এক দলীয় সভায় তিনি বলেন, ‘‘ওদের আর কোন রাজ্য আছে? বিজেপি আস্তে আস্তে স্টেটলেস ( রাজ্যহীন) হয়ে যাচ্ছে। একটা উত্তরপ্রদেশ আর একটা কর্নাটক ছাড়া সব জায়গায় ভরাডুবি। ২০২১ সালে বাংলাই শেষ কলস ডুবিয়ে দেবে।’’
দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে জবরদস্ত ধাক্কা দিয়েছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। মঙ্গলবার এই ফলাফল স্পষ্ট হতেই কেজরীবালকে অভিনন্দন জানান মমতা। দিল্লির ফলাফলেই সূত্রেই বিকেলে বাঁকুড়ায় দলীয় সভায় বিজেপিকে আক্রমণ করে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘মাত্র আট মাস আগে নির্বাচন ( লোকসভা) হয়েছে। তার মধ্যে মহারাষ্ট্রে নির্বাচন হয়েছে, হেরেছে। ঝাড়খণ্ডে নির্বাচন হয়েছে, হেরেছে। দিল্লিতে নির্বাচন হয়েছে, হেরেছে।’’ পরে টুইটে বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগ করে মমতার বার্তা, ‘‘যাঁরা প্রতিশ্রুতি রাখেন তাঁরা পুরষ্কৃত হন।’’ সকালে টেলিফোনেই মমতাকে তাঁর শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কেজরীবাল।
পরপর হার নিয়ে এদিন বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এনআরসি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে ‘ক্রনোলজি’র ( পর্যায়ক্রম) কথা বলেছিলেন, তা নিয়ে খোঁচা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, ‘‘ঝাড়খন্ডের পরে দিল্লি। এরপর বিহার, তারপর পশ্চিমবঙ্গ। ক্রনোলজি সমঝ লিজিয়ে!’’
আরও পড়ুন: টুইটারে কেজরীবালকে শুভেচ্ছা জানালেন মোদী
এদিন দুপুরে বাঁকুড়ায় রওনা হন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই গণনায় দিল্লিতে বিজেপির পরাজয়ের প্রবণতা স্পষ্ট। হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের হেলিপ্যাডে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা একসঙ্গে কাজ করি। কেজরীবালের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার যখন অন্যায় করছিল তখন আমি গিয়েছিলাম।’’ তারপরই দিল্লির ফল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘এত ধর্মান্ধ ও বিভাজনের রাজনীতির পরেও মানুষের জয় হয়েছে।’’ প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মানুষ ঘৃণার রাজনীতি, ভাগাভাগির রাজনীতি পছন্দ করে না। মানুষ উন্নয়ন চান।’’ তাঁর অভিযোগ, বিজেপি পুরো কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ে, সব মেশিনারি নিয়ে, টাকার ঝুলি নিয়েও কিছু করতে পারেনি।’’
দিল্লিতেও লোকসভায় তৃণমূলের সংসদীয় দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই সুরে বিঁধেছেন বিজেপিকে। তিনি বলেন, ‘‘আপ-এর জয়ের পরে কেন্দ্রের শাসকদল সংযত হতে বাধ্য হবে।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘কেজরীবালের এই জয় প্রমাণ করল, মানুষের প্রয়োজনে নজর রাখলে ভাল ফল পাওয়া যায়।’’
বিকেলে বাঁকুড়ার দলীয় সভায় সুর চড়িয়ে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘তৈরি থাকুন এর জন্য। টাকা দিয়ে হবে না। আপনার টাকার থেকে আমার মা-বোনেদের শঙ্খের জোর, আদিবাসী ভাইবোনেদের ধামসা-মাদলের জোর বাউলের গানের জোর অনেক বেশি।’’
এদিনের সভায়ও রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘সব কারখানা বন্ধ। রেল বেচে দিচ্ছে। বিএসএনএল বেচে দিচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়া বেচে দিচ্ছে। বার্ন স্ট্যান্ডার্ড বেচে দিচ্ছে। পুরো দেশটাই বেচে দিচ্ছে। বাবুরা যে বাজেট করল তাতে কী দিয়েছে? আমাদের পাওনা এক লক্ষ কোটি টাকার উপরে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy