Advertisement
E-Paper

সুলতানপুরীতে জড়িত আরও ২, জানাল পুলিশ

আজ রোহিণী আদালতে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে ধৃতদের পাঁচ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার অনুরোধ করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, অভিযুক্ত সাত জনের মধ্যে দু’জন এখনও পলাতক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৫২
ঘাতক গাড়ির পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ।

ঘাতক গাড়ির পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। ফাইল চিত্র।

বর্ষবরণের রাতে দিল্লির সুলতানপুরীর ঘটনার তদন্ত আজ ফের নতুন মোড় নিল।

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, এক তরুণীকে গাড়িতে হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ওই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া পাঁচ জনের পাশাপাশি আরও দু’জন জড়িত রয়েছে। তারা বর্তমানে পলাতক। দু’জনের একজন গাড়ির মালিক আশুতোষ এবং অন্য জন ধৃত এক অভিযুক্তের ভাই। তার নাম অঙ্কুশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় প্রমাণ লোপের অভিযোগ আনা হয়েছে। আজ দিল্লির রোহিণী আদালত ধৃতদের আরও চার দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

বর্ষবরণের রাতে সুলতানপুরী এলাকায় একটি স্কুটিকে ধাক্কা মেরেছিল গাড়িটি। ধাক্কা খেয়ে স্কুটিচালক তরুণী রাস্তায় পড়ে যান। পুলিশ জানিয়েছে, ঘাতক গাড়ির নীচে ওই তরুণীর পা আটকে যাওয়া সত্ত্বেও ওই অবস্থাতেই তাঁকে প্রায় ১২ কিলোমিটার টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় গাড়িটি। পরে একটি মোড় ঘুরতে গিয়ে গাড়ির তলা থেকে ওই তরুণীর দেহ বেরিয়ে এলে তাঁকে সেখানে ফেলে রেখেই চম্পট দেয় আরোহীরা। পরে পুলিশ তরুণীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে ওঠে গোটা দেশ। বিষয়টি নিয়ে সব মহলে দিল্লি পুলিশের সমালোচনা শুরু হয়। ঘাতক গাড়ির পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ।

আজ পাঁচ দিন পরে ওই ঘটনার সঙ্গে আরও দু’জন ব্যক্তি যুক্ত বলে জানালেন দিল্লি পুলিশের স্পেশাল কমিশনার (আইনশৃঙ্খলা) সাগরপ্রীত হুডা। তিনি জানান, নতুন একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে ওই পাঁচ জন গাড়ি রাখার সময়ে আরও দুই ব্যক্তি, আশুতোষ ও অঙ্কুশের সঙ্গে ওই দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনা করে। দু’জনেই বর্তমানে ফেরার। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ এও জানিয়েছে, গোড়ায় ঘাতক গাড়ির আরোহী দীপক দাবি করেছিল দুর্ঘটনার সময়ে সে-ই গাড়িটি চালাচ্ছিল। কিন্তু তদন্তে দেখা যায়, গাড়ির চালাচ্ছিল অমিত বলে আর এক আরোহী। অমিতের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। কিন্তু দীপকের তা থাকায় দুর্ঘটনার সময়ে সে গাড়ি চালাচ্ছিল বলে পুলিশকে বলার পরামর্শ দেয় অঙ্কুশ। হুডা জানান, ওই দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাট, তদন্তকে ভুল পথে চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ মৃত তরুণী ও অভিযুক্তদের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখে জানিয়েছে, উভয় পক্ষ পরস্পরের অপরিচিত ছিলেন। মৃত তরুণীর যে বান্ধবী দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করেছিল পুলিশ, তাঁরও বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে। ওই তরুণীর সঙ্গেও অভিযুক্তদের পুরনো কোনও সম্পর্ক ছিল না বলে জানিয়েছে পুলিশ। মৃতার বন্ধুর মা আজ দাবি করেছেন, অভিযুক্তরা তাঁর মেয়ের বন্ধুকে ধাক্কা মারার পরে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করতে তরুণীর উপর দিয়ে বারংবার গাড়ি চালায়। ধাক্কায় ছিটকে পড়া তাঁর মেয়েকেও পিষে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক গাড়ির আরোহীরা। কিন্তু সে দূরে পালিয়ে যাওয়ায় বেঁচে যায়। মা ওই দাবি করলেও মৃতা তরুণীর পরিবার অবশ্য ওই ঘটনায় বন্ধুর ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করছে। গাড়ির আরোহীদের সঙ্গেই বন্ধুর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনার দাবিতে সরব রয়েছে তারা।

আজ রোহিণী আদালতে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে ধৃতদের পাঁচ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার অনুরোধ করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, অভিযুক্ত সাত জনের মধ্যে দু’জন এখনও পলাতক। যে পাঁচ জন রয়েছে তাদের প্রত্যেককে আলাদা করে জেরা ও ১২ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে ঘটনাটির পুনর্নির্মাণের প্রয়োজন রয়েছে। সেই কারণে পাঁচ দিন সময় প্রয়োজন। আদালত চার দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছে। দিল্লি পুলিশ জানায়, তাদের কমপক্ষে ১৮টি দল গোটা তদন্তের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। খুব দ্রুত চার্জশিট আদালতে পেশ করা হবে। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল, তা-ও আলাদা করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাফিলতির প্রমাণ যদি পাওয়া যায়, তা হলে সে বিষয়েও আলাদা করে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে।

Delhi hit and run Anjali Singh Delhi Police Delhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy