আন্তর্জাতিক মাদকপাচার চক্রের বিরুদ্ধে অভিযানে ফের এক বড় সাফল্য পেল নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেলের সঙ্গে যৌথ অভিযানে সম্প্রতি উদ্ধার হয়েছে ২৬২ কোটি টাকার মাদক। পাওয়া গিয়েছে ৩২৯ কেজি মেথামফেটামিন। এটি এক ধরনের সিন্থেটিক মাদক, যা ক্রিস্টাল মেথ বা মেথ নামে অধিক পরিচিত। দিল্লিতে মাদকবিরোধী ওই অভিযান ‘অপারেশন ক্রিস্টাল ফোর্ট্রেস’ চলাকালীন দু’জনকে গ্রেফতারও করেছেন তদন্তকারীরা। এনসিবি এবং দিল্লি পুলিশের এই অভিযানে সাহায্য করেছে নাগাল্যান্ড পুলিশও।
তদন্তকারী আধিকারিকদের সন্দেহ, এই মাদকপাচারের নেপথ্যে রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক চক্র। গত বছর দিল্লিতেই এক অভিযানে প্রায় ৮৩ কেজি কোকেন উদ্ধার হয়েছিল। ওই ঘটনাতেও এক বিদেশি চক্রের যোগ থাকার কথা উঠে আসে। অনুমান করা হচ্ছে, ওই চক্রের মাথাই সাম্প্রতিক ঘটনার সঙ্গেও জড়িত। সূত্রের দাবি, ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এবং অন্য দেশগুলিতেও মাদক সরবরাহের জন্য দিল্লিকে একটি মজুতকেন্দ্র (হাব) হিসাবে ব্যবহারের চেষ্টা করছে এই চক্র। মাদক পাচারের এই চক্রটি নিষিদ্ধ সামগ্রী মজুত করার জন্য বেশ কিছু গোপন আস্তানা (সেফ হাউজ়) ব্যবহার করছে দিল্লিতে। এই চক্রের সঙ্গে বেশ কয়েক জন পোড়খাওয়া হ্যান্ডলার এবং সরবরাহকারী জড়িত রয়েছেন বলে সন্দেহ করছেন আধিকারিকেরা।
গোপন সূত্র মারফত তদন্তকারীদের কাছে আগে থেকেই এ বিষয়ে খবর ছিল। সেই সূত্র ধরেই সম্প্রতি নয়ডার সেক্টর ফাইভে হানা দেয় এনসিবি এবং দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। পাকড়াও করা হয় শেন ওয়ারিস নামে ২৫ বছর বয়সি এক তরুণকে। পেশায় সেল্স ম্যানেজার ওয়ারিসের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের আমরোহায়। তদন্তকারীদের সন্দেহ, তিনি ওই চক্রের অন্যতম সরবরাহকারী। হ্যান্ডলারের নির্দেশ মতোই তিনি কাজ করতেন বলে সন্দেহ আধিকারিকদের। সেই সূত্র ধরেই প্রথমে তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নেন ওয়ারিস। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে, তাঁকে ভুয়ো সিম কার্ড ব্যবহার করতে বলা হয়েছিল। এ ছাড়া হোয়াট্সঅ্যাপ-সহ বেশ কিছু অ্যাপের মাধ্যমেও গোপনে তাঁর যোগাযোগ ছিল চক্রের সঙ্গে। তার পরেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে তদন্তকারীদের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও দেন ওয়ারিস।
আরও পড়ুন:
ওয়ারিসের কাছ থেকেই এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অপর এক মহিলার সন্ধান পান তদন্তকারীরা। নাম এস্থার কিনিমি। বাড়ি নাগাল্যান্ডে। তবে এখন তিনি থাকেন দক্ষিণ দিল্লির ছত্তরপুর এলাকায়। ওয়ারিসের থেকেই এস্থারের ঠিকানা, মোবাইল নম্বর এবং অন্য তথ্য পেয়ে যান আধিকারিকেরা। সেই মতো ছত্তরপুরায় এস্থারের আস্তানায় হানা দেয় এনসিবি। নাগাল্যান্ড পুলিশের সাহায্যে ওই অভিযানেই উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। গ্রেফতার করা হয় এস্থারকেও।