আজ ওই মুনিরকা স্টপ থেকেই বাসে উঠলাম সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ। দ্বারকামুখী বাস। কথা হচ্ছিল মহিলা যাত্রীদের সঙ্গে। এক যাত্রী সুনীতা বললেন, “২০১২ সালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতাম। ১৭ ডিসেম্বর সকালে মন্দিরে পুজো দিতে যাচ্ছিলাম। মুনিরকা থেকে বসন্ত বিহার থানা পর্যন্ত রাস্তা পুরো পুলিশে ভর্তি ছিল। তখনও জানতাম না, আগের রাতে কী হয়েছে। পরে টিভি দেখে জানতে পারি। এখন আগে দেখি, বাসে লোক আছে কি না, বিশেষত মহিলা আছেন কি না। নির্ভয়ার ঘটনার আগে কিন্তু ফাঁকা বাস পছন্দ করতাম, যাতে ভিড়টা এড়ানো যায়। এখন বাসে যতই ভিড় থাকুক না কেন, সেখানেই উঠি।“
আরও পড়ুন: আবার উত্তপ্ত তিনসুকিয়া, চলছে আসুর জেল ভরো
সুনীতা জানান, বেশ কয়েক মাস আগে নজফগড় যাওয়ার জন্য মুনিরকা স্টপ থেকে দিল্লি পরিবহণ নিগমের বাসে উঠেছিলেন, চারটে বাস স্টপ পেরিয়ে যাওয়ার পর খেয়াল করেন, বাস একটাতেও থামেনি। পরের স্টপেই হুড়মুড়িয়ে বাস থেকে নেমে যান তিনি। শুনতে শুনতে আর এক যাত্রী পূজা গৌড় বলেন, “আগেও মহিলাদের সঙ্গে জঘন্য অপরাধ হয়েছে, কিন্তু নির্ভয়া ধর্ষণ-কাণ্ডের পরে একটা অন্য রকম আতঙ্ক কাজ করে। যদি কখনও বাসে শুধু পুরুষযাত্রী থাকেন, তখন ভয় হয়। সকলে তো খারাপ নন। কিন্তু আগে এই ভয়টা ছিল না।“
গুরুগ্রামে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত এক তরুণী অফিসের বাসেই ফেরেন। নাম বলতে চাইলেন না। অফিসের বাস তাঁকে আর কে পুরমে নামিয়ে দেয়, তারপর সাধারণ বাসেই মুনিরকা যান। হায়দরাবাদ, আমদাবাদ, মুম্বই, বেঙ্গালুরুতে কাজ করার পর গুরুগ্রামে আসেন ২০১৬ সালে। তরুণী বলেন, “এখনও পর্যন্ত যত জায়গায় কাজ করেছি, মেয়েদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ মনে হয়েছে আমদাবাদ। গুরুগ্রামে অফিস হওয়া সত্ত্বেও দিল্লি থেকে রোজ যাতায়াত করি। অন্তত দিল্লির রাস্তায় এখন অনেক পুলিশ থাকে। বাসে মার্শাল থাকেন। কিন্তু গুরুগ্রাম বা নয়ডায় রাত আটটার পর বাইরে যাওয়াই ঝুঁকির।’’
সেই ভয়। এখনও কাটেনি।