Advertisement
E-Paper

হারলেন দীনেশ, দিল্লিতে স্নাতক ফের তিন বছরেই

অবশেষে বিতর্কের অবসান। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে টানাপড়েন চলার পরে পিছু হটল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশ মেনে আজ চার বছরের পাঠ্যক্রম বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফিরে এল তিন বছরের পুরনো স্নাতক পাঠ্যক্রম। আর দেরি না করে আগামী সপ্তাহ থেকে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি শুরু করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিল মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৪ ০৩:২৮

অবশেষে বিতর্কের অবসান। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে টানাপড়েন চলার পরে পিছু হটল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশ মেনে আজ চার বছরের পাঠ্যক্রম বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফিরে এল তিন বছরের পুরনো স্নাতক পাঠ্যক্রম। আর দেরি না করে আগামী সপ্তাহ থেকে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি শুরু করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিল মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক।

গত বছর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছরের পাঠ্যক্রম চালু করেছিলেন উপাচার্য দীনেশ সিংহ। প্রথম থেকেই ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব হন বিজেপি নেতৃত্ব। ক্ষমতায় এসেই চার বছরের ওই পাঠ্যক্রম বাতিল করার জন্য তৎপর হন তাঁরা। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সুপারিশ অনুযায়ী ইউজিসি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়কে চার বছরের পাঠ্যক্রম বাতিল করার নির্দেশ দেয়। প্রথমে অনড় থাকলেও অবশেষে সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীনেশ সিংহ। আজ সকালে একটি বিবৃতি দিয়ে তিনি জানান, ইউজিসির নির্দেশ মতো দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বছরের পাঠ্যক্রম প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। পরিবর্তে তিন বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রম ফের চালু করা হবে। তিনি সমস্ত কলেজকে অবিলম্বে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়ারও অনুরোধ জানান।

দীনেশের ওই সিদ্ধান্তকে আজ স্বাগত জানিয়েছে ছাত্র সংগঠন ও দিল্লি ইউনিভার্সিটি টিচার অ্যাসোসিয়েশন বা ডুটা। ওই সংগঠনের বর্তমান সভাপতি নন্দিতা নারায়ণ বলেন, “ওই সিদ্ধান্ত আগেই মেনে নেওয়া হলে ছাত্র-ছাত্রীদের এত হেনস্থা হত না।” কিন্তু যে ভাবে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরে চাপ সৃষ্টি করে ওই পাঠ্যক্রম প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য করা হল তা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বলেই মনে করছেন ডুটা’র প্রাক্তন সভাপতি আদিত্যনারায়ণ মিশ্র। শিক্ষাবিদদের একাংশের মতে, বিজেপি ও সঙ্ঘের আপত্তিতেই সময়োপযোগী ওই পাঠ্যক্রমকে বাতিল করতে হল। কারণ, খোদ ইউজিসি শীর্ষ কর্তারাই এত দিন ওই পাঠ্যক্রমের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। সরকার পরিবর্তন হতেই ইউজিসির মনোভাব পরিবর্তনের পিছনে রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করেছে বলেই মনে করছে দীনেশ ঘনিষ্ঠ শিবির। যদিও ওই অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে আজ মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, “আমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বশাসনের পক্ষে। কিন্তু ভুললে চলবে না, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়েছে মানুষের সেবা করার জন্য। ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থের কথা ভেবে অহঙ্কারকে ভুলতে হবে।”

অহঙ্কারের কথা বলে স্মৃতি দীনেশ সিংহকেই নিশানা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। পাঠ্যক্রম বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলেও এখনও নিজের পদে রয়ে গিয়েছেন দীনেশ। মন্ত্রক কর্তারা মনে করছেন, কেবলমাত্র তাঁর জেদেই বিষয়টি জটিল হয়। ভোগান্তির শিকার হন ছাত্র-ছাত্রীরা। মন্ত্রক চাইছে নিজে থেকেই ইস্তফা দিন দীনেশ। কারণ, ইউজিসি ও মন্ত্রকের সঙ্গে দীনেশের যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তাতে আগামী দিনে তাঁর পক্ষে স্বাধীন ভাবে কাজ করা বেশ কঠিন হবে।

দীনেশের ভাগ্যের মতোই এখনও বেশ কিছু প্রশ্ন অমীমাংসিত রয়ে গেল। প্রথমত, গত বছরে ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের কী হবে। এক বছর কেটে গিয়েছে। ফলে বাকি তিন বছরের সিলেবাস কী ভাবে দু’বছরে পড়ানো হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। ইতিমধ্যেই নতুন পাঠ্যক্রমের রূপরেখা তৈরি করতে ১২টি কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিটির সুপারিশের দিকে এখন তাকিয়ে পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-সকলেই।

দ্বিতীয়ত, চার বছরের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত। ইউজিসির আশ্বাস বি-টেক পাঠ্যক্রম চার বছরেই থাকবে। কিন্তু এখনও এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনও দিশা দেখাতে ব্যর্থ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব আর পি সিসৌদিয়া আজ জানিয়েছেন, পাঠ্যক্রমের বিষয়ে কোনও ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না মন্ত্রক। এ বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই নেবেন।

তৃতীয়ত, নতুন পাঠ্যক্রমে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও কলা বিভাগের সিলেবাসের খোলনালচে পাল্টে ফেলা হয়েছিল। সেই সিলেবাসের ভিত্তিতেই নানা শাখায় ভর্তির আবেদন জানিয়েছেন পড়ুয়ারা। সে ক্ষেত্রে সিলেবাস বদল হলে অনেকে মত পরিবর্তন করতে পারেন। তাঁদের পুরনো আবেদনই গ্রাহ্য হবে না নয়া আবেদন নেওয়া হবে তা জানাতে পারেননি কেউই। আপাতত পাঠ্যক্রম পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্ত দায় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টে ঠেলতেই ব্যস্ত মন্ত্রক ও ইউজিসি।

delhi university FYUP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy