যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানকে আরও বেশি করে সামরিক সহায়তা করতে চলেছে ভারত।
ভারত-আফগানিস্তান স্ট্র্যাটেজিক কাউন্সিল-এর বৈঠকে যোগ দিতে নয়াদিল্লি এসেছে সে দেশের বিদেশমন্ত্রী সালাউদ্দিন রব্বানি। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বৈঠকের পরে স্থির হয়েছে, আফগানিস্তানের নিরাপত্তা এবং পুনর্গঠনে আরও বেশি করে সহায়তার হাত বাড়ানো হবে। সুষমার কথায়, ‘‘ভারত এবং আফগানিস্তান নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সমন্বয় আরও জোরদার করবে।’’ অন্য দিকে রব্বানি জানিয়েছেন, ‘‘আফগানিস্তানের জাতীয় সেনাবাহিনীকে আরও বেশি করে সহায়তা করতে রাজি হয়েছে ভারত।’’
কিছু দিন আগেই তাদের আফগানিস্তান নীতি ঘোষণা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নয়াদিল্লিকে আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানকেও। গোটা বিষয়টিকে অবশ্য ট্রাম্পের কথা মতো সাদা-কালোয় দেখছেন না কূটনীতিকেরা। তার কারণ, ভূকৌশলগত ভাবে পাকিস্তানকে বাদ দিয়ে আফগানিস্তানের জন্য উন্নয়নের কাজ এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। ট্রাম্প যতই চান, মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের এই কট্টর মনোভাবের সমালোচনা শুরু করেছে বলে ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর। পাশাপাশি এটাও সাউথ ব্লক মনে করছে, এটা আমেরিকার একটি চাল। ভারতকে কিছুটা প্রশ্রয় দিয়ে পাকিস্তানকে নিজের শর্তে তালিবান বিরোধিতায় রাজি করানোটাই প্রকৃত উদ্দেশ্য হোয়াইট হাউসের।
কিন্তু এহ বাহ্য। বিদেশ মন্ত্রকের মতে, দীর্ঘ দিন বাদে আফগানিস্তানে প্রভাব বাড়ানোর মত আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যখন তৈরি হয়েছে তখন যত দ্রুত সম্ভব তাকে ব্যবহার করা উচিত। কাবুলে নিজেদের জমি আরও পোক্ত করার অর্থ দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ায় নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধেজনক অবস্থায় চলে যাওয়া। যেটা বছরের পর বছর করতে দেয়নি পাকিস্তান। এর আগের মার্কিন সরকারও কখনও প্রত্যক্ষ কখনও পরোক্ষে প্রশ্রয় দিয়েছে পাকিস্তানকে।
এখন সেই সুযোগ আসায় দেরি না করে আজ রব্বানির সঙ্গে বৈঠকে সামরিক ক্ষেত্রে বাড়তি সহযোগিতার বিষয়টি স্থির করে ফেলা হয়েছে। সেইসঙ্গে দু’দেশের নেতা একযোগে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর ই তইবা, জইশ ই মহম্মদের নিন্দা করেছেন। গোটা অঞ্চলের স্থিতি নষ্ট করার জন্য প্রকারান্তরে দায়ী করা হয়েছে ইসলামাবাদকে। সুষমা বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তানের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আমরা সে দেশের সঙ্গে উন্নয়নের প্রশ্নে এক নতুন অংশিদারিত্ব শুরু করছি। ১১৬টি নতুন হাই ইমপ্যাক্ট উন্নয়ন প্রকল্প যৌথ ভাবে রূপায়ণ করা হবে যা কাবুলের আর্থ-সামাজিক এবং পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বদল আনবে।’’ আজ বৈঠকের পরে মোটর ভেহিক্ল-সহ মোট চারটি ক্ষেত্রে চুক্তি সই করেছে দুই দেশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy