Advertisement
E-Paper

গরিবকে দেখুন, কষ্ট কমানোর ব্যবস্থা করুন, পরামর্শ প্রণবের

নোট বাতিলের ফলে কালো টাকা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার সাময়িক ভাবে কমতে পারে বলে আশঙ্কা রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী প্রণববাবুর মতে, গরিবের কষ্ট কমাতে বাড়তি সতর্ক হতে হবে সরকারকেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:১৬

নোট বাতিলের ফলে কালো টাকা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার সাময়িক ভাবে কমতে পারে বলে আশঙ্কা রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী প্রণববাবুর মতে, গরিবের কষ্ট কমাতে বাড়তি সতর্ক হতে হবে সরকারকেই।

নোট বাতিলের পরে গোড়াতেই ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি। তাঁর সেই মন্তব্যকে প্রচারের হাতিয়ারও করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি নেতারা। কিন্তু নোট বাতিলের ৫০ দিন পরেও সমস্যা কাটেনি। পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি নগদের জোগান। ব্যাঙ্ক, এটিএমের লাইনে দাঁড়িয়ে একশোরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ছোট শিল্প ধুঁকছে। মার খাচ্ছে অন্যান্য ক্ষেত্রও। ব্যবসা ধাক্কা খাওয়ায় কর কমানোর জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে বার বার দরবার করছে শিল্পমহল। এই পরিস্থিতিতে আজ রাজ্যপাল ও উপ-রাজ্যপালদের নতুন বছরের বার্তা দেওয়ার সময়ে নিজের উদ্বেগ গোপন রাখেননি রাষ্ট্রপতি।

প্রণববাবুর কথায়, ‘‘নোট বাতিলের ফলে কালো টাকার গতিবিধি বন্ধ হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইও জোরদার হবে। কিন্তু আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যেতে পারে।’’ বৃদ্ধির হার কমা নিয়ে আগেই সতর্ক করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। একই পূর্বাভাস দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও। আগামিকালই আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস প্রকাশ করার কথা কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের। তার আগে উদ্বিগ্ন প্রণববাবুর মন্তব্য, ‘‘গরিব মানুষের কষ্ট কমাতে আমাদের উদ্যোগী হতে হবে। তাঁরা দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে পারেন না।’’

রাষ্ট্রপতির মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘নোট বাতিলের পরে মানুষের অসহায়তার কথা তাঁকে জানিয়েছিলাম। তিনি মানুষের জন্য মুখ খোলায় আমরা কৃতজ্ঞ।’’ আর কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার বক্তব্য, ‘‘নরেন্দ্র মোদীকে কান ধরে চলার পথ দেখিয়ে দিয়েছেন দেশের রাষ্ট্রপতি। মোদী সেই পথে চলবেন কি না, সেটা তাঁর ব্যাপার।’’

নোট বাতিলের পরে ক্রমে দেশ জুড়ে মোদী-বিরোধী স্বর তীব্র হয়েছে। জোট বেঁধেছে বিরোধী দলগুলি। রাষ্ট্রপতির কাছেও দরবার করেছেন বিরোধী নেতারা। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির এমন মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা।

রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রে খবর, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী। তখনও নিজের উদ্বেগ গোপন করেননি প্রণববাবু। কিন্তু তাও সরকারের অনুরোধ মেনে সিদ্ধান্তের পক্ষে বিবৃতি দেন তিনি। তবে বিজেপি রাজনৈতিক প্রচারে তাঁর মন্তব্য ব্যবহার করায় ক্ষুব্ধ হন প্রণববাবু।

মোদী সরকার নগদহীন অর্থনীতির কথা বলছে। ঘনিষ্ঠ মহলে প্রণববাবু জানিয়েছেন, দিনমজুর বা ওই ধরনের পেশার মানুষ যা আয় করেন, তাতে আয়কর দিতে হয় না। কিন্তু ডিজিটাল লেনদেন করলে তাঁরাও লেনদেন করের আওতায় পড়বেন। ফলে তাঁদের সমস্যা হবে। সূত্রের খবর, ১৯৭০-এর দশকে নোট বাতিল করতে চেয়েছিলেন তৎকালীন অর্থ প্রতিমন্ত্রী প্রণব। কিন্তু ইন্দিরা গাঁধী তাঁকে নিষেধ করেন। ভারতের মতো দেশে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যাবে না বলেই মনে করতেন ইন্দিরা। তা-ও তখন কেবল ১০০০ টাকার নোট বাতিলের কথাই ভাবা হয়েছিল। এবং বাজারে ১০০০ টাকার নোটের সংখ্যা ছিল খুবই কম।

Pranab Mukherjee President
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy