Advertisement
E-Paper

বহুতলে বুথ তৈরি নিয়ে জমা পড়েনি আবেদন, ডিইও-দের কাজে অসন্তুষ্ট কমিশন! আবার সমীক্ষা করার নির্দেশ

কমিশন জানিয়েছে, দু’বার বলা সত্ত্বেও কোনও নতুন ভোটকেন্দ্রের প্রস্তাব পশ্চিমবঙ্গে থেকে তাদের কাছে পাঠানো হয়নি। তাতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কমিশন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:০৯

— প্রতীকী চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গে আবাসনগুলিতে পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরি করা নিয়ে জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (ডিইও)-দের রিপোর্টে অসন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন। নতুন ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরিতে কেন কোনও আবেদন জমা পড়ল না, সেই প্রশ্ন তুলল কমিশন। এ রাজ্য থেকে মাত্র দু’টি আবেদন জমা পড়েছিল। এই তথ্যই কমিশনকে অবাক করেছে বলে খবর। তারা মনে করছে, নতুন ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরি করা নিয়ে ডিইও-দের উদাসীন মনোভাব রয়েছে। এই কাজে তাঁদের সমীক্ষার অভাব রয়েছে বলেও জানিয়েছে কমিশন।

বুধবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) মনোজকুমার আগরওয়ালকে চিঠি পাঠিয়ে কমিশন জানিয়েছে, এই বিষয়টি খুবই গুরুতর। আইন মোতাবেক ডিইও-রা কমিশনের নির্দেশ মানতে বাধ্য। নতুন করে ডিইও-দের সমীক্ষা করতে বলেছে কমিশন। তাদের নির্দেশ, নতুন করে সমীক্ষা করে প্রস্তাবিত বুথের তালিকা জমা দিতে হবে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই কাজ করতে হবে ডিইও-দের। এই নির্দেশ অমান্য হলে কড়া অবস্থান নেওয়ারও হুঁশিয়ারিও দিয়েছে কমিশন।

এর আগে কমিশন জানিয়েছিল, ২৫০টি বাড়ি অথবা ৫০০ জন ভোটার রয়েছেন এমন বহুতল ভবন, গ্রুপ হাউজিং সোসাইটি, কলোনি, বস্তি এলাকা এবং গেটেড সোসাইটিতে নতুন ভোটগ্রহণ তৈরি নিয়ে সমীক্ষা করতে হবে। প্রস্তাবিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের তালিকা পাঠাতে বলেছিল কমিশন। ওই বিষয়ে গত সোমবার ছিল রিপোর্ট দেওয়ার শেষ দিন। সব জেলা মিলিয়ে মাত্র দু'টি রিপোর্ট পাঠায় ডিইও-রা। এতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কমিশন।

কমিশন জানিয়েছে, দু’বার বলা সত্ত্বেও কোনও নতুন ভোটকেন্দ্রের প্রস্তাব পশ্চিমবঙ্গে থেকে তাদের কাছে পাঠানো হয়নি। এই বিষয়টিকে তারা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলে জানা গিয়েছে। কমিশনের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, জনপ্রতিনিধি আইনে জেলাশাসকদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলা রয়েছে। তাই প্রয়োজনীয় জায়গায় বুথ না হলে তার দায় জেলা ডিইও-দের নিতে হবে।

কমিশনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, রাজ্যের বিধানসভা ভিত্তিক খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে। ওই তালিকা প্রকাশের পরে বহুতল ভবন, গ্রুপ হাউজিং সোসাইটি, আরডব্লিউএ কলোনি, বস্তি এলাকা এবং গেটেড সোসাইটিতে বুথ নিয়ে নতুন সমীক্ষা করতে হবে। সমীক্ষা করে ২৫০টি বাড়ি অথবা ৫০০ জন ভোটার রয়েছেন, এমন জায়গায় ভোটকেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দিতে হবে। সব ডিইও-দের এই নির্দেশ কঠোর ভাবে মানতে হবে।

আবাসনে বুথ তৈরির জন্য জেলার নির্বাচনী আধিকারিকদের (ডিইও) কাছে রিপোর্ট চেয়েছিল কমিশন। সোমবার পর্যন্ত সেই রিপোর্ট পাঠানোর সময়সীমা ছিল। কমিশন সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বুথ করা নিয়ে মাত্র দু’টি রিপোর্ট এসেছে। রাজনৈতিক দল এবং আবাসনগুলির তরফে এ ব্যাপারে তেমন কোনও আগ্রহ দেখা যায়নি। সেই কারণেই আবাসনে বুথ তৈরির পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে যায় কমিশন।

কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশ কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে অভিজাত বহুতল আবাসনের সংখ্যা গত দু’দশকে চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির হিসাব বলছে, কলকাতার ক্ষেত্রে এই বহুতলবাসীরা মোট ভোটের ৮-১০ শতাংশ। কিন্তু এই সব অভিজাত বহুতলবাসীদের অনেকেই ভোটের দিনে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে ভোটকেন্দ্রে যান না বলে অভিযোগ। কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভাবনা ছিল, যে কোনও আবাসনে ৩০০-র বেশি ভোটার থাকলে সেই আবাসন চত্বরের ভিতরেই পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরি করে দেওয়া হবে।

তৃণমূল কমিশনের এই ভাবনার বিরোধী ছিল। এসআইআর চলাকালীন গত মাসে কয়েক দিনের ব্যবধানে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে জোড়া চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে অন্যতম বিষয় ছিল আবাসনে বুথ তৈরিতে আপত্তি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘বুথ সব সময়েই সরকারি বা আধা-সরকারি জায়গায় হয়ে থাকে। আবাসনে বুথ তৈরি হয় কী ভাবে?’’ মমতার চিঠির পরে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল বলেছিলেন, ‘‘জাতীয় নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিইও এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।’’ কমিশন সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে যায়। এ বার তারা এই বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল। তারা এ-ও জানিয়েছে, এর দায় নিতে হবে ডিইও-দের। এই নিয়ে নতুন সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy