Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
অভিযোগ ওড়ালেন গডকড়ী

এক দরপত্রে দশ হাজার কোটির বরাত ঘনিষ্ঠকে

কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভায় অন্যতম কাজের লোক হিসেবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু সেই নিতিন গডকড়ীর বিরুদ্ধে আজ গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রীর পদ থেকে তাঁর ইস্তফা দাবি করল কংগ্রেস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:৩০
Share: Save:

কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভায় অন্যতম কাজের লোক হিসেবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু সেই নিতিন গডকড়ীর বিরুদ্ধে আজ গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রীর পদ থেকে তাঁর ইস্তফা দাবি করল কংগ্রেস।

জম্মু-কাশ্মীরে জোজি লা-র কাছে দেশের সব থেকে দীর্ঘ সুড়ঙ্গপথ তৈরির জন্য গডকড়ীর মন্ত্রক একটি সংস্থাকে দশ হাজার কোটি টাকার বরাত দিয়েছে। মহারাষ্ট্রের ওই সংস্থার নাম ‘আই আর বি ইনফ্রাস্ট্রাকচারস’। কংগ্রেসের অভিযোগ, প্রকল্পটির বরাত পেতে ওই একটি সংস্থাই আবেদন করেছিল। এবং নিয়ম ভেঙে সংস্থাটিকে বরাত দেওয়া হয়েছে।

কংগ্রেসের অভিযোগ নিয়ে বিজেপি দলীয় তরফে কিছু বলেনি। গডকড়ীকেই আত্মপক্ষ সমর্থনে মুখ খোলার পরামর্শ দিয়েছে। সেই অনুযায়ী গডকড়ীই আজ মুখ খোলেন এ নিয়ে। উড়িয়ে দেন কংগ্রেসের যাবতীয় অভিযোগ।

কংগ্রেসের অভিযোগটি ঠিক কী?

কোনও প্রকল্পের জন্য একটি মাত্র দরপত্র জমা পড়লে তা সরকারকে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাতে হয়। সেটাই কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনারের শর্ত। এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। দিগ্বিজয় সিংহের অভিযোগ, গডকড়ী চেয়েছিলেন, প্রকল্পের কথা যেন আর কেউ না জানে। যাতে দত্তাত্রেয়ই এর বরাত পান। এটা পরিষ্কার দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ।

স্বজনপোষণ কেন?

কংগ্রেসের বক্তব্য, গডকড়ীর সঙ্গে সংস্থাটির কর্ণধার দত্রাত্তেয় মহেশকরের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। গডকড়ী যখন মহারাষ্ট্রে পূর্তমন্ত্রী ছিলেন, তখন তাঁর দফতরের অধিকাংশ কাজের বরাত এই সংস্থাই পেত। গডকড়ীর সংস্থা পূর্তি গ্রুপেও বিনিয়োগ করেছিলেন দত্রাত্তেয়। আবার দত্তাত্রেয়র ‘আই আর বি ইনফ্রাস্ট্রাকচারস’-এ অংশীদার ছিলেন গডকড়ীর ছেলে নিখিল। ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত নিখিলের কাছে আইআরবি-র অনেক শেয়ার ছিল। পরে নিখিল তা বিক্রি করে দেন নিখিল। তিনি এক সময় সংস্থাটির ডিরেক্টর ছিলেন বলেও আজ দাবি করেছে কংগ্রেস। এর প্রমাণ হিসেবে কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ এ দিন ‘রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ’-এর খাতার প্রতিলিপি প্রকাশ করেন।

গডকড়ীর অবশ্য দাবি, আইআরবি-তে তাঁর বা তাঁর ছেলের কোনও শেয়ার ছিল না। নিখিল সেখানে ডিরেক্টর ছিলেন না। এবং আইআরবি-কে বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে বেআইনি কিছু করা হয়নি। তা ছাড়া, ইউপিএ জমানায় ওই সংস্থাটির হিসেব খতিয়ে দেখে কোনও অনিয়মও পায়নি আয়কর দফতর।

কংগ্রেস দরপত্র হাঁকার নিয়ম ভাঙা নিয়ে কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনার কে ভি চৌধুরির কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে এ দিন। দিগ্বিজয় জানিয়েছেন, এই দুর্নীতি সংক্রান্ত যাবতীয় নথি তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও দেবেন। দিগ্বিজয়ের কথায়, ‘‘দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ প্রশাসন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছেন মোদী। তাঁর উচিত সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করা। গডকড়ীকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করা।’’ সরকার বা বিজেপির তরফে এ দিন কিছু বলা না হলেও গডকড়ীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির নয়া অভিযোগ নিয়ে কংগ্রেস কতটা এগোয়, সে দিকে নজর রাখছেন মোদী, অমিত শাহরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

national news nitin Gadkari corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE