Advertisement
E-Paper

খুন করে প্রাক্তন স্ত্রী-কে সাত মাস ফেসবুকে ‘বাঁচিয়ে’ রাখলেন চিকিত্সক

লিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মহিলার নাম রাখী শ্রীবাস্তব ওরফে রাজলক্ষ্মী। আদতে বিছিয়ার বাসিন্দা তিনি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:৪৯
রাখী শ্রীবাস্তব ওরফে রাজলক্ষ্মী। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

রাখী শ্রীবাস্তব ওরফে রাজলক্ষ্মী। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

বেড়াতে গিয়ে প্রাক্তন স্ত্রীকে খুন করেন চিকিত্সক। প্রায় সাত মাস সে খবর চেপে রেখেছিলেন তিনি। সন্দেহ এড়াতে প্রাক্তন স্ত্রী-র ফেসবুক অ্যাকাউন্টও চালু রেখেছিলেন। তবে শেষ রক্ষা হল না। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেলেন তিনি।

উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুরের ঘটনা। অভিযুক্তের নাম ধর্মেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ। শল্য চিকিত্সক হিসাবে গোরক্ষপুরে বেশ নাম ডাক রয়েছে তাঁর। একটি নার্সিংহোমও চালান। দুই সঙ্গী প্রমোদ কুমার সিংহ ও দেশদীপক নিষাদ সহ শুক্রবার দাউদপুর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মহিলার নাম রাখী শ্রীবাস্তব ওরফে রাজলক্ষ্মী। আদতে বিছিয়ার বাসিন্দা তিনি। ২০০৬ সালে বিবাহিত শল্য চিকিত্সক ধর্মেন্দ্র প্রতাপের সঙ্গে আলাপ তাঁর। অল্পদিনের মধ্যে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। শাহপুরে তাঁকে একটি ফ্ল্যাটও কিনে দেন ধর্মেন্দ্র। গোপনে ২০১১ সালে বিয়েও করেন দু’জনে। কিন্তু সব কিছু জানতে পেরে যান ধর্মেন্দ্র প্রথম স্ত্রী ঊষা সিংহ। স্বামীকে ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন: রথযাত্রা চেয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা বিজেপির​

এর পর ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মণীশ সিংহ নামে আর এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন রাখী। তবে দ্বিতীয় বিয়ের পরও ধর্মেন্দ্র-র সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। শাহপুরের ফ্ল্যাটটি তাঁর নামে লিখে দেওয়ার জন্য ধর্মেন্দ্র-র উপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন তিনি।

তার মধ্যেই এ বছর জুন মাসে স্বামী মণীশের সঙ্গে নেপাল বেড়াতে যান রাখী। জানতে পারেন বন্ধুদের সঙ্গে সেখানে আসছেন ধর্মেন্দ্রও। তাই তড়িঘড়ি স্বামীকে ফেরত পাঠিয়ে দেন তিনি। নিজে থেকে যান পোখরায়। দেখা করতে গিয়ে পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাঁকে খাইয়ে দেন ধর্মেন্দ্র ও তাঁর সঙ্গীরা। তার পর পাহাড়ের উপর থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। রাখীকে খুন করে তিনজনই দেশে ফিরে আসেন। এক সহচরের মাধ্যমে রাখীর ফোনটিকে অসমে পাঠিয়ে দেন ধর্মেন্দ্র। যার মাধ্যমে রাখীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চালু রাখেন তিনি। নিয়মিত আপডেটও দিতে থাকেন, যাতে মনে হয় অসমে রয়েছেন রাখী।

কিন্তু মেয়ের হদিশ না পেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রাখীর পরিবারের লোকজন। প্রথমে দ্বিতীয় স্বামী মণীশের উপরই সন্দেহ ছিল পুলিশের। তাঁর ফোনের রেকর্ডও খতিয়ে দেখা হয়েছিল। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী বাহিনী সিট তদন্তের ভার নিলে দেখা যায়, ওই সময় নেপালে ছিলেন ধর্মেন্দ্রও। তাতেই তদন্ত অন্য দিকে মোড় নেয়।

আরও পড়ুন: ঘরে টেবিলে ঘুমোচ্ছেন সুন্দরাইয়া, বারান্দায় শুয়ে থাকতেন স্বেচ্ছাসেবক নিরুপম

তদন্তকারীদের একটি দল নেপালের পোখরায় গেলে রাখীর দেহ উদ্ধারের কথা নিশ্চিত করে সেখানকার পুলিশ। পরে সেটি রাখীর দেহ বলে শনাক্ত করা যায়। তার পরই ধর্মেন্দ্র প্রতাপকে চেপে ধরা হয়। লাগাতার জেরার মুখে শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়েন তিনি। টাকা ও সম্পত্তির জন্য হুমকি পাচ্ছিলেন বলেই প্রাক্তন স্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।

একটি স্কর্পিও গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে রাখীকে পাহাড় থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। সেই গাড়িটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রাখীর ভোটার কার্ড, নেপালের একটি মোবাইল রিচার্জ কার্ড, দু’টি প্যান কার্ড, একটি এটিএম কার্ড এবং চারটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার হয়েছে ধৃতদের কাছ থেকে।

Crime Murder Uttar Pradesh Gorakhpur Nepal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy