বক্তা: শ্রীনগরের সভায় মেহবুবা মুফতি। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
কাশ্মীর উপত্যকায় অশান্তির জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকার পাকিস্তানকে দায়ী করছেন। পাক গুপ্তচর সংস্থার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শ্রীনগর ও অন্যান্য শহরে পাথর ছোড়া ও উত্তেজনা তৈরির জন্য সম্প্রতি হুরিয়তের কিছু নেতাকে গ্রেফতারও করেছে এনআইএ। অশান্তির কারণে নিয়ন্ত্রণ রেখার চেকপোস্টগুলি দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে বিজেপি। কিন্তু তার বিরোধী জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। তাঁর কথায়— দুই কাশ্মীরের মধ্যে আদানপ্রদান যত বাড়বে, উপত্যকায় উত্তেজনাও কমবে।
শুক্রবার দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে মেহবুবা মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী এখন আমার নেতা ঠিকই, তবে আমার কাছে ইন্ডিয়া মানে ইন্দিরা। ইন্দিরা গাঁধী। অনেকের এটা পছন্দ না-হলেও কিছু করার নেই!’’
নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা যখন গাঁধী পরিবারকে নিশানা করেছেন, সে সময়ে কাশ্মীরে শরিক দলের নেত্রীর এই ঘোষণাকে বিজেপি যে ভাল ভাবে নেবে না, সেটাই স্বাভাবিক। একই সঙ্গে কাশ্মীরের জন্য বরাদ্দ ৩৭০ এবং ৩৫-এ (নিজস্ব পতাকা) ধারা তুলে নেওয়ারও বিরোধিতা করেন মেহবুবা। তিনি বলেন, ‘‘আজাদি-র মোকাবিলায় গ্রহণযোগ্য কিছু দেওয়াটা আমাদের কর্তব্য।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে বিজেপির কাশ্মীর শাখার মুখপাত্রের দাবি— ওই দুই ধারায় কাশ্মীরকে যে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তা অস্থায়ী। ভাবা হয়েছিল, কাশ্মীর ধীরে ধীরে ভারতের অঙ্গ হয়ে উঠবে। কিন্তু তা হয়নি। ভারতের পতাকা বহনের কোনও লোক আজ কাশ্মীরে মেলা ভার।
শনিবার শ্রীনগরে একটি জনসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে মেহবুবা বলেন, ওয়াঘা চেকপোস্ট নিয়ে অনেক সমস্যা রয়েছে। সেখান দিয়ে মাদক ও অস্ত্রশস্ত্র পাচারের কথা প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু ওয়াঘা চেকপোস্ট বন্ধের কথা তো ওঠে না! কিন্তু কিছু একটা হলেই দুই কাশ্মীরের মধ্যে চেকপোস্টগুলি বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। মেহবুবা বলেন, ‘‘আমরা এটা হতে দিতে পারি না। কেন্দ্রের বরং উচিত আরও চেকপোস্ট বাড়ানো। সেখানে সুযোগ-সুবিধাও বাড়ানো।’’
সম্প্রতি শ্রীনগর-মুজফ্ফরাবাদ সড়কে হেরোইন বোঝাই একটি ট্রাক ধরা পড়ার পরে নিয়ন্ত্রণ রেখার চেকপোস্ট বন্ধ করে দেওয়ার দাবি তুলেছেন বিজেপির কোনও কোনও নেতা। মেহবুবা এ দিন বলেন, ‘‘বন্ধ তো নয়ই, সেখানে ব্যাঙ্কিং ও অন্যান্য আধুনিক সুযোগ বাড়ানো হোক।’’ শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য নয়, পর্যটন, তীর্থযাত্রা ও অন্যান্য ক্ষেত্রেও দুই কাশ্মীরের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর সওয়ালও করেন মুখ্যমন্ত্রী। দুই কাশ্মীরের ছাত্র ও জনপ্রতিনিধিদের আদানপ্রদানের ব্যবস্থাও করা হোক।
প্রশ্ন উঠছে, বিজেপির সঙ্গে মেহবুবার এই মতভেদ কি জম্মু ও কাশ্মীরে দু’ দলের সরকারে ভাঙনের ইঙ্গিত?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy