আমেরিকা আগেই ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে রেখেছে। এ বার আমেরিকার এক পড়শি দেশও ভারতের উপর একই হারে শুল্ক চাপানোর পথে এগোচ্ছে। শুধু ভারতের উপরেই নয়, চিন, তাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার পণ্যের উপরেও আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত করার পরিকল্পনা করছে মেক্সিকো। আগামী বছর থেকে এই শুল্ক কার্যকর করার কথা ভাবছে তারা।
যে দেশগুলির সঙ্গে মেক্সিকোর কোনও বাণিজ্যচুক্তি নেই, সেই দেশগুলির উপরে চড়া হারে শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেক্সিকো। এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব আগেই পাশ হয়েছে সে দেশের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ ‘চেম্বার অফ ডেপুটিস’-এ। বুধবার উচ্চকক্ষ সেনেটও সেই প্রস্তাবে সবুজসঙ্কেত দেয়। নতুন শুল্কপ্রস্তাব অনুসারে, ভারত, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া-সহ যে দেশগুলির সঙ্গে মেক্সিকোর কোনও বাণিজ্যচুক্তি নেই, তাদের থেকে আমদানি করা নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপাবে তারা। এই পণ্যের তালিকায় রয়েছে গাড়ি, গাড়ির যন্ত্রাংশ, পোশাক, প্লাস্টিক এবং ইস্পাত। এ ছাড়া বেশির ভাগ পণ্যের উপর ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ধার্য করার পরিকল্পনা রয়েছে মেক্সিকোর।
বুধবার মেক্সিকোর সেনেটে এই বিলটির পক্ষে ৭৬টি ভোট পড়েছে। বিপক্ষে গিয়েছে ৫টি ভোট। সেনেটের ৩৫ জন সদস্য ভোটদানে বিরত থেকেছেন। বস্তুত, মেক্সিকোর কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে যে বিলটি প্রথমে গৃহীত হয়েছিল, তার তুলনায় সেনেটের ছাড়পত্র পাওয়া বিলটি কিছুটা নমনীয়। মূল প্রস্তাবে যতগুলি পণ্যের উপর শুল্ক চাপানোর কথা বলা হয়েছিল, তার প্রায় এক তৃতীয়াংশ পণ্যকে শুল্ক-কোপের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে অনুমোদিত বিলে।
আরও পড়ুন:
গত কয়েক বছরে ভারত এবং মেক্সিকোর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে দ্বিমুখী বাণিজ্য হয়েছে হয়েছে ১১৪০ কোটি ডলারের। যদিও ২০২৩ সালে তা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১০৬০ কোটি ডলারে। পরের বছরে, ২০২৪ সালে তা ফের কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১১৭০ কোটি ডলার। মেক্সিকোর সেনেট এই বিলে অনুমোদন দেওয়ার পরে ভারতের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে চিনা বাণিজ্য মন্ত্রক ইতিমধ্যে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে। বেজিং জানিয়েছে, তারা মেক্সিকোর নয়া শুল্ক ব্যবস্থার উপর নজর রাখছে এবং এর প্রভাব মূল্যায়ন করা হবে। তবে মেক্সিকোর এই ধরনের পদক্ষেপ দু’দেশের বাণিজ্যিক স্বার্থকে ‘উল্লেখযোগ্য ভাবে ক্ষুণ্ণ’ করবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে চিন। মেক্সিকো দ্রুত এই একতরফা নীতি সংশোধন করবে বলেও আশাবাদী বেজিং।