প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ছবি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা চলল আমেরিকার আইনসভায়। ওই ছবি দেখিয়েই মার্কিন আইনসভার ডেমোক্র্যাট সদস্য সিডনি কামলাগের-ডাভ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন। দাবি করলেন, ভারতের মতো ‘বন্ধু’কে কার্যত ‘শত্রুদেশের’ ঘনিষ্ঠ হতে বাধ্য করা হচ্ছে। ট্রাম্পের ভারত সংক্রান্ত নীতি নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রাভঙ্গ করার শামিল বলেও কটাক্ষ করেন ওই রাজনীতিক।
পুতিন এবং মোদীর এই ছবিই দেখানো হয় মার্কিন আইনসভায়। —ফাইল চিত্র।
রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক (মোট ৫০ শতাংশ) আরোপ করেছেন ট্রাম্প। এইচ১-বি ভিসা নিয়েও কড়াকড়ির জেরে অসুবিধার মুখে পড়েছেন আমেরিকার অভিবাসী ভারতীয়েরা। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প-বিরোধীদের একাংশ দীর্ঘ দিন ধরেই আমেরিকার ‘ভারতবিরোধী’ নীতি নিয়ে সরব হচ্ছেন। বুধবার এই বিষয়ে সুর চড়ান আমেরিকার ডেমোক্র্যাট নেত্রী সিডনি।
বুধবার আমেরিকার বিদেশ নীতি নিয়ে একটি পর্যালোচনা বৈঠক ছিল মার্কিন আইনসভায়। ওই বৈঠকেই যোগ দিয়েছিলেন সিডনি। তিনি যখন বক্ততা করছিলেন, তখন তাঁর পিছনে একটি পোস্টার দেখা যায়। পোস্টারের উপরের অংশে ছিল এসসিও বৈঠকে মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের করমদর্নের ছবি। আর পোস্টারের নীচের অংশে ছিল একই গাড়িতে বসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং পুতিনের ছবি। গত সপ্তাহেই ভারত সফরে এসেছিলেন পুতিন।
ওই পোস্ট়ার দেখিয়ে সিডনি বলেন, “এই ছবি অনেক কথা বলে দিচ্ছে। আমেরিকার কৌশলগত সঙ্গীদের শত্রুদের হাতে তুলে দিয়ে আপনারা নোবেল শান্তি পুরস্কার পাবেন না কিন্তু।” এখনই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত বলে জানান ওই ডেমোক্র্যাট নেত্রী। তিনি বলেন, “কোনও মূল্যেই গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গীকে হাতছাড়া করা যায় না।”
প্রসঙ্গত, গত ৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত আমেরিকার নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট (ন্যাশনাল সিকিয়োরিটি স্ট্র্যাটেজি ডকুমেন্ট)-এ বলা হয়েছিল, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের প্রভাব কমাতে কৌশলগত সঙ্গী ভারতই। ২৯ পাতার ওই রিপোর্টে বলা হয়, “ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে নয়াদিল্লিকে উৎসাহিত করতে আমাদের ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক (এবং অন্যান্য) সম্পর্ক উন্নত করতে হবে।” তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ওই রিপোর্টে পাকিস্তানের নামমাত্র উল্লেখ করা হয়েছে। ভারত-পাক যুদ্ধ থামানো নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি ছাড়া পাকিস্তানের প্রসঙ্গই উল্লেখ করা হয়নি ওই প্রতিবেদনে।