খসড়া ভোটার তালিকায় তাঁর নাম নেই বলে সরব হলেন বিহারের বিরোধী দলনেতা ও রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। নির্বাচন কমিশন পত্রপাঠ সেই অভিযোগ খারিজ করে জানিয়ে দিল, আরজেডি নেতার নাম খসড়া তালিকায় আছে। তেজস্বীর নাম সংবলিত তালিকার প্রতিলিপিও দিয়েছে তারা। তারই পাশাপাশি কমিশনের তথ্য, বিহারে খসড়া তালিকা প্রকাশের পরে প্রথম ২৪ ঘণ্টায় কোনও দলের তরফেই কোনও আপত্তি বা আবেদন জমা পড়েনি।
তেজস্বী শনিবার দাবি করেছেন, ‘‘আমার ভোটার পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে তালিকায় খুঁজে দেখেছি। খসড়া তালিকায় আমার নাম খুঁজে পাইনি। নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। বিহারে সামনে নির্বাচন। ভোটার তালিকা থেকে নাম কেটে দিলে ভোট দেব কী ভাবে, ভোটে লড়বই বা কী ভাবে?’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বিরোধী নেতার যদি এই অবস্থা হয়, বিহারে সাধারণ জনতার হাল তা হলে কী!’’
ভোটের মুখে সরগরম বিহারে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আসরে নামেন শাসক বিজেপির নেতারা। রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘‘বিরোধী নেতার যোগ্যতায় শুধু আমরা নই, ওঁর পরিবারও আর ভরসা রাখতে পারছে না! খসড়া তালিকায় কী ভাবে নাম খুঁজতে হয়, সেটা উনি বুঝতে পারছেন না। আমরা দেখিয়ে দিচ্ছি, ওঁর নাম তালিকায় ঠিকই আছে।’’ বিজেপি নেতার আরও মন্তব্য, ‘‘আপনাদের এই ভাঁওতা আর মিথ্যের দোকান এ বার বন্ধ করুন!’’
বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) প্রথম পর্বের শেষে বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় বাদ গিয়েছে ৬৫ লক্ষের বেশি নাম। তার পরে প্রথম ২৪ ঘণ্টায় রাজ্য জুড়ে কোনও আপত্তি বা আবেদন জমা পড়েনি বলেই জানাচ্ছে কমিশন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী নিজের নাম বাদ যাওয়ার অভিযোগ তুললেও এই নিয়ে তাঁর বা আরজেডি-র তরফে এ দিন বিকাল পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানানো হয়নি। স্বীকৃত ১২টি দলের মোট এক লক্ষ ৬০ হাজার ৮১৩ জন বুথ লেভল এজেন্টদের (বিএলএ) কেউই প্রথম ২৪ ঘণ্টায় কোনও অভিযোগ-আবেদন করেননি। খসড়া তালিকা শুক্রবার ওয়েবসাইটে উঠে যাওয়ার পরে আগামী ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আপত্তি বা আবেদন জানানো যাবে। এই প্রক্রিয়ার সুবিধার জন্য রাজ্য জুড়ে বিশেষ শিবির খুলেছে কমিশন। নতুন ভোটারদের আবেদন করার ব্যবস্থাও রয়েছে। এসআইআর সম্পূর্ণ হলে ভোটার তালিকা ধরে নতুন পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। তার জন্য ভোটারদের ছবি জমা দেওয়ার আবেদনও জানানো হয়েছে কমিশনের তরফে।
কমিশন তাঁর প্রথম অভিযোগ খারিজ করলেও তেজস্বী অবশ্য সরব। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কমিশন দ্রুত একটা তথ্য দিয়েছে। কিন্তু কমিশন এই এসআইআর প্রক্রিয়ায় চালাকি করছে। সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে বলে তারা ভুল-ত্রুটি আড়াল করতে ব্যস্ত। পার্ট নম্বর ধরে যে ভাবে রাজনৈতিক দলগুলিকে তালিকা দেওয়া হয়েছে, সেখানে কে মৃত, কে অনুপস্থিত কী ভাবে বোঝা যাবে? যাঁদের বাদ গিয়েছে, তাঁদের তালিকা আলাদা করে দিতে হবে।’’ অনুপস্থিতদের বুথভিত্তিক তালিকা দেওয়ার দাবিতে আগেই সরব হয়েছে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন এবং সিপিএম।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)