E-Paper

গণনাপত্র তৈরির ক্ষমতাই নেই কমিশনের, দাবি

এই মামলায় আজ প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ বলেছে, ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধন হলে তার প্রক্রিয়া যুক্তিসঙ্গত হওয়া উচিত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৩
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বিহারের পরে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২টি রাজ্যে গণনাপত্র (এনুমারেশন ফর্ম) বিলি করে নির্বাচন কমিশন এসআইআর-এর কাজ করছে। সেই গণনাপত্র তৈরি করার কোনও ক্ষমতাই কমিশনের নেই, আজ এমনই অভিযোগ উঠল সুপ্রিম কোর্টে।

এসআইআর-এর সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলার শুনানিতে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আজ যুক্তি দেন, ১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে শুধু তিনটি ফর্মের কথা বলা হয়েছে। এক, নতুন ভোটারদের নাম তোলার ফর্ম। দুই, ঠিকানা বা অন্য তথ্য বদলের ফর্ম। তিন, ভোটার তালিকায় কারও নাম নিয়ে আপত্তি জানানোর ফর্ম। এর বাইরে কমিশন নিজের মতো এনুমারেশন ফর্ম তৈরি করতে পারে না। যে ক্ষমতা জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে দেওয়া নেই, কমিশন নিজের হাতে তা তুলে নিতে পারে না। শুধু সংসদ আইনে বদল করতে পারে। কমিশন কি আচমকা নিজের মতো ফর্ম তৈরি করে তার সঙ্গে ১১টা বা ১২টা নথি চাইতে পারে? কোন আইনে কমিশনকে সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে?

এই মামলায় আজ প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ বলেছে, ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধন হলে তার প্রক্রিয়া যুক্তিসঙ্গত হওয়া উচিত। সিঙ্ঘভি যুক্তি দেন, ভোটার তালিকায় সংশোধনকে এখন ভারতে অনুপ্রবেশ রোখার সমাধান হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। একের পর এক রাজ্যে মানুষকে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে বলা হচ্ছে। তাঁর প্রশ্ন, ২০২৪, ২০২৫ সালে যে সব ভোটার ভোট দিয়েছেন, তাঁরা কি অতিথি হিসেবে ভোট দিয়েছেন বলে অনুমান করে নেওয়া হবে?

এসআইআর-এর বিরোধিতা করে আইনজীবী কপিল সিব্বল আজ অভিযোগ তুলেছেন, এনুমারেশন ফর্ম তৈরি করে কমিশন নাগরিকত্ব প্রমাণের দায় মানুষের উপরে চাপিয়ে দিয়েছে। যে ভাবে বিদেশিদের উপরে দায় চাপানো হয়। এক জন বিএলও, যিনি স্কুল শিক্ষক, তাঁকে নাগরিকত্ব নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া যায় না। কেবল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নাগরিকত্ব নির্ধারণ করতে পারে। কারও বাবা যদি ২০০৩-এ ভোট না দিয়ে থাকেন, তাঁর নাম যদি ভোটার তালিকায় না থাকে, তা হলে কেউ কী ভাবে নিজের নাগরিকত্ব প্রমাণ করবে? মামলাকারীদের আইনজীবী হিসেবে সিঙ্ঘভি যুক্তি দেন, বর্তমান পদ্ধতিতে এসআইআর করার ক্ষমতা বা এক্তিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই। কমিশন সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদকে হাতিয়ার করে এসআইআর-এর যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে চাইছে। এই অনুচ্ছেদে কমিশনের ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কমিশনকে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন মেনে কাজ করতে হবে। আইনে বলা হয়েছে, কমিশন শুধুমাত্র একটি কেন্দ্র বা তার অন্তর্গত এলাকায় এসআইআর করতে পারে। গোটা দেশে ঢালাও এসআইআর-এর কথা বলা নেই। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এই যুক্তি অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের কখনও এসআইআর-এর ক্ষমতা থাকবে না।’’ আগামী মঙ্গলবার ফের শুনানি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Supreme Court of India Election Commission of India

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy