বিহারের ভোটের আগে ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এই প্রক্রিয়ায় বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে তারা। কমিশন অবশ্য ‘ভুতুড়ে ভোটার’ বাদ দেওয়ার যুক্তিতে অনড় রয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই দেশেরনির্বাচনী ব্যবস্থাকে পরিচ্ছন্ন করার যুক্তি দেখিয়ে আজ ৩৩৪টি নথিভুক্ত স্বীকৃতিবিহীন রাজনৈতিক দলকে বাতিল করে দিল নির্বাচন কমিশন। এই দলগুলি কমিশনের নির্ধারিত শর্ত মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে বলেই জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের একটি বিবৃতিতে আজ এই ৩৩৪টি রাজনৈতিক দলকে বাতিল করার কথা জানানো হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। কমিশনের তরফে দাবি করা হয়েছে, ‘সার্বিক এবং নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ রাখার স্বার্থেই’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, ভারতে ৬টি জাতীয় দল, ৬৭টি রাজ্যভিত্তিক দল এবং ২৮৫৪টি নথিভুক্ত স্বীকৃতিবিহীন রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব ছিল। তবে আজকের পদক্ষেপের ফলে নথিভুক্ত স্বীকৃতিবিহীন রাজনৈতিক দলের সংখ্যা দাঁড়াল ২৫২০।
কমিশন জানিয়েছে, কোনও রাজনৈতিক দলকে নথিভুক্ত থাকার জন্য পর পর ছয় বছরের জন্য ভোটে লড়তে হয়। ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী দলগুলিকে নাম, ঠিকানা, সাংগঠনিক পদাধিকারীদের নাম কমিশনকে জানাতে হয়। এ সবের বদল হলে দ্রুত তা কমিশনকে জানানোই নিয়ম। এ বছরের জুন মাসে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের নির্দেশ দেয় ৩৪৫টি রাজনৈতিক দলের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য। সেই মতো ওই দলগুলিকে ‘কারণ দর্শাও’ নোটিস দেওয়া হয়। দেখা যায়, ৩৩৪টি দল নথিভুক্তকরণের নিয়মনীতি মেনে চলেনি। তবে ১১টি দলের ক্ষেত্রে আরও তথ্য যাচাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে বলেই কমিশন মনে করেছে। এই ৩৩৪টি রাজনৈতিক দলকেই আজ বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। এই দলগুলি এখন থেকে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২৯বি ও ২৯সি ধারার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।
পাশাপাশি, এরা ১৯৬১ সালের আয়কর আইন ও ১৯৬৮ সালের নির্বাচনী প্রতীক (সংরক্ষণ ও বরাদ্দ) নির্দেশের সুবিধাও পাবে না। তবে কমিশনের আজকের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন থাকলে দলগুলি ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে পারবে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে নির্বাচন কমিশন নথিভুক্ত স্বীকৃতিবিহীন রাজনৈতিক দলগুলির জন্য নির্দিষ্ট প্রতীক, আয়ের উৎস এবং তিন বছরের জন্য বার্ষিক হিসাবের রিপোর্ট দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছিল। এছাড়া, শেষ দু’টি নির্বাচনী লড়াইয়ের খরচের হিসাব দিতেও বলা হয়েছিল এই দলগুলিকে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)