যুদ্ধ রোম্যান্টিক কোনও ব্যাপার নয়, বলিউডের সিনেমাও নয়। দেশ যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলে সেনাবাহিনীকে অংশ নিতে হবে ঠিকই। তবে যুদ্ধে যাওয়ার আগে কূটনীতিকেই তিনি গুরুত্ব দিতে চান বলে জানিয়ে দিলেন ভারতের প্রাক্তন সেনাপ্রধান মনোজ নরবনে।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি এবং শেষপর্যন্ত সংঘর্ষবিরতিতে যোগ দিয়েছে ভারত। এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তার কড়া সমালোচনাও করেছেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান। পুণেতে আজ একটি অনুষ্ঠানে নরবনের যুক্তি, সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি এবং নিজেদের বাসস্থান ছেড়ে চলে যাওয়া সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিশুদের জীবনে বিরাট প্রভাব ফেলে। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা নিজেদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের যন্ত্রণা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত থেকে যায়। ভয়ঙ্কর দৃশ্য যাঁরা দেখেন, ২০ বছর পরও সেই আতঙ্ক পিছু ছাড়ে না তাঁদের। মনোচিকিৎসার প্রয়োজন হয়।’’ নরবনের কথায়, ‘‘যুদ্ধ রোম্যান্টিক কোনও ব্যাপার নয়। বলিউডের সিনেমাও নয়। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্তের বিষয়। সব রাস্তা শেষ হয়ে গেলে তবেই যুদ্ধের কথা ভাবা উচিত। সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, এটা যুদ্ধের যুগ নয়। যদিও কিছু অবিবেচক মানুষ আমাদের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু তা নিয়ে আনন্দ করার কিছু নেই।’’
ভারতের প্রাক্তন সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘আজও অনেকে বলছেন, আমরা পুরোপুরি ভাবে যুদ্ধে গেলাম না কেন? একজন সামরিক কর্মী হিসেবে আমি মনে করি, সিদ্ধান্ত হলে আমাদের যুদ্ধে যেতেই হবে। কিন্তু সেটা আমার প্রথম পছন্দ নয়।’’ প্রাক্তন সেনাপ্রধান নরবনে জানান, কূটনীতিকেই নিজের প্রথম পছন্দ হিসেবে রাখেন তিনি। কূটনীতির পথেই অস্ত্রের সংঘাত এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। নরবনের মতে, হিংসা কোনও সমাধান নয়। ফলে শুধু দেশগুলির ভিতরেই নয়, পরিবার, এলাকা কিংবা সম্প্রদায়ের মধ্যেও বিভেদ দূর করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)