প্রাতর্ভ্রমণে দেখা হয়েছিল তামিলনাড়ুর দুই মুখ্যমন্ত্রীর। এক জন প্রাক্তন, অপর জন বর্তমান। তার পরেই বদলে গেল রাজনৈতিক সমীকরণ। দলবল নিয়ে এনডিএ ছাড়লেন জয়ললিতার দল এডিএমকে-র বহিষ্কৃত নেতা ও পনীরসেলভম, যিনি রাজ্য রাজনীতিতে ‘ওপিএস’ নামেই সমধিক পরিচিত।
বৃহস্পতিবার সকালেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিনের সঙ্গে প্রাতর্ভ্রমণে দেখা গিয়েছিল ওপিএস-কে। তার পরেই বেলায় তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী তথা তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মন্ত্রী পিএস রামচন্দ্রন ঘোষণা করেন যে, তাঁরা এনডিএ ছাড়ছেন। এই ঘোষণার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন পনীরসেলভমও। বহু বার জয়ললিতার অনুপস্থিতিতে দল এবং প্রশাসনের ভার গ্রহণ করেছেন ওপিএস। জয়ললিতার মৃত্যুর পরে অবশ্য এডিএমকে-র রাশ হাতছাড়া হয় পনীরসেলভমের। তাঁকে সরিয়ে দল এবং তৎকালীন এডিএমকে সরকারের প্রধান হন কে পলানীস্বামী। এডিএমকে-র পলানীস্বামী গোষ্ঠী যখন এনডিএ এবং বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছিল, সেই সময় কেন্দ্রের শাসকজোটে শামিল হয়েছিল ওপিএস গোষ্ঠী। বর্তমানে অবশ্য ফের জোট বেঁধেছে এডিএমকে-বিজেপি। সেই সময় এনডিএ ছাড়লেন ওপিএস।
২০২৬ সালের এপ্রিল-মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা তামিলনাড়ুতে। স্ট্যালিন-সাক্ষাতের পর অনেকেই মনে করছিলেন নিজের গোষ্ঠীকে একদা প্রতিদ্বন্দ্বী দল ডিএমকে-র সঙ্গে মিশিয়ে দেবেন তিনি। বৃহস্পতিবার অবশ্য সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে পনীরসেলভম বলেন, “এই মুহূর্তে আমরা কোনও দলের সঙ্গে জোট করছি না। তবে ভবিষ্যতে নির্বাচনের আগে আমরা এই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করব।” খুব শীঘ্রই তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জেলায় সফর করবেন বলে জানিয়েছেন জয়ললিতার ‘আস্থাভাজন’ ওপিএস।
পনীরসেলভমকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তিনি তামিল অভিনেতা বিজয়ের দল তামিলাগা ভেট্টেরি কাঝাগাম বা টিভিকে-র সঙ্গে জোটে যাবেন কি না। উত্তরে ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে ওপিএস বলেন, “সময় উত্তর দেবে।” এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা করার জন্য যথেষ্ট সময় আছে বলেও জানান তিনি। জনপ্রিয় অভিনেতা বিজয় সম্প্রতি রাজনীতিতে এসেছেন। খুলেছেন নতুন দল। ইতিমধ্যেই বিজেপি এবং ডিএমকে-র বিরুদ্ধে সুর চড়ালেও এডিএমকে-কে নিয়ে বিশেষ বাক্যব্যয় করতে শোনা যায়নি তাঁকে। বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বিজয় কি এডিএমকে-র সঙ্গে জোটে যেতে পারবেন? না কি স্ট্যালিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা ওপিএস-এর সঙ্গে জোট করবেন? সব মিলিয়ে ভোটের আগে জমজমাট তামিলনাড়ুর রাজ্য রাজনীতি। অনেকেই মনে করছেন, যাই ঘটুক না-কেন, বিধানসভা নির্বাচনের আগে দক্ষিণের এই রাজ্যে নতুন এক রাজনৈতিক সমীকরণ হয়ে যাবে।