Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ফেসবুক পোস্ট পাল্টে দিল জীবন, স্কুলে যেতে পারবে গরিব কিশোর

ফেসবুকের একটা পোস্ট পাল্টে দিল নয়ডার কিশোরের জীবন। গতকাল পর্যন্তও যার জীবন নির্ভর ছিল মানুষের ছুঁড়ে দেওয়া পয়সায়, আজ থেকে তার যাবতীয় দায়িত্ব নিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী!

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৭:১৬
Share: Save:

ফেসবুকের একটা পোস্ট পাল্টে দিল নয়ডার কিশোরের জীবন। গতকাল পর্যন্তও যার জীবন নির্ভর ছিল মানুষের ছুঁড়ে দেওয়া পয়সায়, আজ থেকে তার যাবতীয় দায়িত্ব নিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী!

গতকাল পর্যন্তও রোগা শরীরটা তার কুঁজো হয়ে থাকত ফুটপাথে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বই-খাতার উপর। ঠিক পাশেই থাকত একটা ওজন মাপার যন্ত্রও। ওটাই তার রোজগারের উপায়। কিন্তু, সে দিকে তার মন থাকলে তো! পথচারীরা যাওয়া-আসার মাঝে মর্জি হলে ওজন মেপে পয়সা ছুঁড়ে দিয়ে চলে যেত যে যার পথে। কিশোর হরেন্দ্র কোনও দিকেই ভ্রুক্ষেপ করত না। পথের আলোয় চালিয়ে যেত তার লেখাপড়া। নয়ডা মেট্রো স্টেশন থেকে বেরোলে সন্ধেবেলা এই দৃশ্য দেখা যেত রোজ।

সেই ছবিই এক পথচারী ক্যামেরা-বন্দি করে পোস্ট করেছিলেন ফেসবুকে। তার পর থেকেই হরেন্দ্র রাতারাতি ফেসবুক ‘সেনসেশন’! ফেসবুকের ওই পোস্ট বদলে দিয়েছে তার জীবনযাত্রাও।

নয়ডার সেই বাসিন্দার নাম বিকাশ সারদা। রোজ মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হরেন্দ্রর পড়াশোনা চোখ টেনে নেয় তাঁর। হরেন্দ্র সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, শ্রী কৃষ্ণ ইন্টার কলেজের ক্লাস নাইনের ওই ছাত্রর বাবার চাকরি গিয়েছে। শরীরটাও ভাল যাচ্ছে না তার পর থেকেই। কিন্তু, হরেন্দ্র পড়াশোনা ছাড়তে চায় না। তাই রোজগারের আশায় ওই ওজন মাপার যন্ত্র নিয়ে সে রোজ সন্ধে সাতটা থেকে বসে থাকে মেট্রোর বাইরে। কোনও দিন পথচারীদের দাক্ষিণ্যে গোটা সত্তর টাকা জুটে যায়, কোনও দিন আবার হাতে আসে তারও কম! ওই টাকাতেই তার পরিবারের এক বেলার খাবার জোটে!

হরেন্দ্রর সঙ্গে কথা বলে এ সব কিছু জানতে পারেন বিকাশ। তার পরেই ছবিটা তিনি পোস্ট করেন নিজের ফেসবুদের দেওয়ালে। সঙ্গে লিখে দেন, ‘সন্ধে সাতটার পর নয়ডা মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে হরেন্দ্রকে একটু সাহায্য করুন। তাহলে ও পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে পারবে! তবে দয়া করে ওর সঙ্গে ভিখিরির মতো ব্যবহার করবেন না।”

হরেন্দ্র অবশ্য জানে না তার ছবি ফেসবুকে এবং তার মাধ্যমে দেশে কী ঝড় তুলেছে! ইতিমধ্যেই ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যাপারটা জানতে পেরে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব তার জন্য পাঁচ লাখ টাকার অনুদান ঘোষণা করেছেন। এও কথা দিয়েছেন, তার পড়াশোনার যাবতীয় খরচ রাজ্য পালন করবে।

হরেন্দ্র আপাতত স্বস্তিতেই আছে। ফেসবুকের ব্যাপারটা না জানলেও মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার কথাটা তার কানে এসেছে ঠিকই। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে বলে তার আনন্দ আর ধরছে না। ঠিক করেছে, পড়াশোনা শেষ করে সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে সে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

facebook boy teen school student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE