১০ বছরে ৪০ দেশে ভ্রমণ করেছিলেন গাজ়িয়াবাদের ভুয়ো কূটনীতিক হর্ষবর্ধন জৈন! শুধু দেশে নয়, বিদেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে তাঁর নামে অ্যাকাউন্টও রয়েছে। সেই সব অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের হদিস পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে হর্ষের নামে বেশ কয়েকটি ‘ভুয়ো’ কোম্পানিও রয়েছে!
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) নয়ডা ইউনিট ইতিমধ্যেই ‘ব্লু কর্নার’ নোটিস জারি করে হর্ষের বিদেশে কার্যকলাপ এবং আর্থিক লেনদেনের খোঁজখবর শুরু করেছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে তুরস্কের নাগরিক সৈয়দ এহসান আলির সঙ্গে ২০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। তাঁর নামে ভারতে মোট ১২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়াও, দুবাইতে পাঁচটি, লন্ডনে দু’টি এবং মরিশাসে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে হর্ষের নামে!
সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমেরিকা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, মরিশাস, ফ্রান্স, তুরস্ক, ইটালি, ক্যামেরুন, বুলগেরিয়া, সুইৎজ়ারল্যান্ড, পোলান্ড, শ্রীলঙ্কা, বেলজিয়ামের মতো দেশে ভ্রমণ করেছিলেন হর্ষ। তদন্তকারীদের মতে, বিদেশি কোম্পানিতে চাকরির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা হাতিয়েছেন!
আরও পড়ুন:
‘ওয়েস্টার্কটিকা’ নামে আন্টার্কটিকা মহাদেশের এক ক্ষুদ্র দেশের ভুয়ো দূতাবাস চালানোর অভিযোগে গত বুধবার হর্ষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, গাজ়িয়াবাদের কবিনগর এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে দূতাবাস তৈরি করেছিলেন হর্ষ। ওই বাড়ির বাইরে সব সময় পার্ক করা থাকত একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি। সেই সব গাড়ির নম্বরপ্লেটও কোনও কূটনীতিকের গাড়ি মতোই। হর্ষ সর্বদা নিজেকে এক জন কূটনীতিক হিসাবে পরিচয় দিতেন। ওয়েস্টার্কটিকা তো বটেই, সাবোরগা, পুলভিয়া, লোডোনিয়ার মতো ছোট ছোট দেশের ‘রাষ্ট্রদূত’ বলেও নিজেকে জাহির করতেন হর্ষ। কূটনৈতিক নম্বরপ্লেটযুক্ত চারটি বিলাসবহুল গাড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও, ১২টি কূটনৈতিক পাসপোর্টও ওই বাড়ি থেকে খুঁজে পেয়েছেন এসটিএফের সদস্যেরা। পাশাপাশি, ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের স্ট্যাম্প-সহ জাল নথি পাওয়া গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, দু’টি জাল প্যান কার্ড, বিভিন্ন দেশ এবং কোম্পানির ৩৪টি রবার স্ট্যাম্পও উদ্ধার করেছে পুলিশ। মিলেছে নগদও।