Advertisement
E-Paper

ভাল রেজাল্ট করলেই হাতে হাতে স্কলারশিপ, গুজবে হয়রান প্রধানমন্ত্রীর দফতর

‘দশম শ্রেণিতে পঁচাত্তর শতাংশ পেলেই মোদী সরকার দেবে দশ হাজার টাকার স্কলারশিপ। আর দ্বাদশ শ্রেণিতে পঁচাশি শতাংশ পেলে পঁচিশ হাজার টাকা।’ পরীক্ষার ফল হাতে নিয়ে পুরসভা থেকে ফর্ম তুলে জমা দিলেই নাকি হাতেনাতে স্কলারশিপ।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ১৪:০৫

‘দশম শ্রেণিতে পঁচাত্তর শতাংশ পেলেই মোদী সরকার দেবে দশ হাজার টাকার স্কলারশিপ। আর দ্বাদশ শ্রেণিতে পঁচাশি শতাংশ পেলে পঁচিশ হাজার টাকা।’

পরীক্ষার ফল হাতে নিয়ে পুরসভা থেকে ফর্ম তুলে জমা দিলেই নাকি হাতেনাতে স্কলারশিপ। পরীক্ষার ফল প্রকাশের এই মরসুমে এমন একটি বার্তা হু-হু করে ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তা নিয়েই ত্রাহি ত্রাহি রব দিল্লির প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ে।

কারণ, অনেক রাজ্য থেকে খবর আসছে, মার্কশিট হাতে নিয়ে অনেক ছাত্র-ছাত্রী পৌঁছে যাচ্ছেন পুরসভার দফতরে। রাজ্য থেকে বিজেপি নেতারাও ফোন করে দিল্লিতে দলের নেতৃত্বের কাছে খোঁজখবর নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী সচিবলায়ের তো মাথায় হাত! সরকারের দু’বছর পূর্তিতে দেশ জুড়ে ঢাকঢোল পেটানো হচ্ছে বটে। কিন্তু সেগুলি মূলত গত দু’বছরের ঘোষিত প্রকল্পের রিপোর্ট কার্ড। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মন্ত্রীরাও দৌড়চ্ছেন দেশের কোনায় কোনায়। কিন্তু দশম ও দ্বাদশ শ্রেণিতে সফল হলেই স্কলারশিপ! এ হেন ঘোষণা তো প্রধানমন্ত্রী কোনও দিন করেননি।

রেস্ত খরচ করে দু’বছরের ঘোষিত প্রকল্পের ঢাক পেটাতে গিয়েই সময় পাওয়া যায় না। তার উপর এখন নতুন বিপদ এসে দাড়িয়েছে অঘোষিত প্রকল্পের প্রচার ঠেকানো। প্রাথমিক তদন্ত করে দেখা গিয়েছে, এমন প্রচার হচ্ছে মূলত ভোটমুখী রাজ্য উত্তরপ্রদেশে। বিজেপি নেতাদের কোনও সন্দেহ নেই, এর পিছনে বিরোধীদের হাতই রয়েছে। কারণ, মোদী সরকারের নামে ভুয়ো প্রকল্প প্রচার করে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। যাতে পুরসভায় গিয়ে স্কলারশিপ না পেয়ে মোদীর প্রতিই মোহভঙ্গ হয় মানুষের। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন থানায় গিয়ে এফআইআরও দায়ের করেছেন বিজেপি কর্মীরা। ভুল প্রচারের বিরুদ্ধে।

প্রধানমন্ত্রী সচিবলায় সূত্রের মতে, এমন প্রচার আগেও হয়েছে। একবার তো এমন প্রচার হয়ে গেল, মোদী সরকার এমন প্রকল্প ঘোষণা করেছে, যে ফোন করলেই চার ঘন্টার মধ্যে দোরগোড়ায় চলে আসবে রক্তের বোতল। অথচ গত দু’বছরে এমন কোনও প্রকল্প কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করাই হয়নি। মহারাষ্ট্র-সহ কয়েকটি রাজ্যে ১০৪ নম্বরে ফোন করলে রক্ত পৌঁছে দেওয়ার একটি প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু গোটা দেশে এমন কোনও প্রকল্প ঘোষণাই হয়নি কেন্দ্রীয় স্তর থেকে। তা-ও মোদী সরকারের নামে। আর এক বার তো পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে প্রধানমন্ত্রী সচিবলায়ের একটি ভুয়ো ওয়েবসাইট চালানোর চক্রও ধরা পড়ে। ‘প্রধানমন্ত্রী আদর্শ যোজনা’ নামে এই ভুয়ো ওয়েবসাইটের নামে ঠকানো হত সাধারণ মানুষকে।

বিজেপির এক নেতার কথায়, আসলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারে গরিবদের জন্য ভুরি-ভুরি প্রকল্প ঘোষণা করছেন। তাতে সমস্যায় পড়ছে বিরোধীরা। তাই মোদী সরকারের নামে সাধারণ মানুষকে এমনভাবে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, যাতে সেটিকে পুঁজি করে পাল্টা রাজনৈতিক প্রচার চালানো যায়। একটি ভুয়ো ওয়েবসাইট চালালে সেটি দ্রুত ধরা পড়ে যায়। কিন্তু সোশ্যাস মিডিয়া, হোয়াটসঅ্যাপে এ ধরণের ভুয়ো বার্তা ছড়ালে তার সূত্র ধরা মুশকিল। ভুয়ো স্কলারশিপ বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার সময় সেটিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে একটি সরকারি ওয়েবসাইটের লিঙ্কও দেওয়া হয়েছে- http://www.desw.gov.in/scholarship। কিন্তু সেই ওয়েবসাইট খুললে দেখা যাবে, এ ভাবে ঢালাও স্কলারশিপের কোনও প্রকল্পের উল্লেখ নেই সেখানে। সেটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি ওয়েবসাইট, যেখানে প্রাক্তন সেনাকর্মী বা বিধবাদের প্রোফেশনাল কোর্সের জন্য স্কলারশিপের কথা বলা আছে মাত্র।

whatsapp narendra modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy