Advertisement
E-Paper

Fali Sam Narima: ‘ঘৃণাভাষণকে কার্যত সমর্থন করছে শাসক দল’

ঘৃণাভাষণ প্রসঙ্গে নাম না করে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধেছেন নরিম্যান।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:০৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

হরিদ্বারের ‘ধর্ম সংসদ’-এ ঘৃণাভাষণের ঘটনা নিয়ে আপাতত তোলপাড় দেশ। তার মধ্যেই ঘৃণাভাষণ নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রোহিনটন ফলি নরিম্যান। সেই সঙ্গে নাম না করে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধলেন তিনি। তাঁর মতে, শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কার্যত ঘৃণাভাষণকে সমর্থন করছেন।

আজ আইনের শাসন প্রসঙ্গে এক অনুষ্ঠানে নরিম্যান বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক কালে সরকারের সমালোচনা করার জন্য পড়ুয়া, কৌতুকশিল্পী এবং আরও অনেক তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই রাষ্ট্রদ্রোহ আইন পুরোপুরি ঔপনিবেশিক যুগের। আমাদের সংবিধানে তার কোনও স্থান নেই। অন্য দিকে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে নির্মূল করার ডাক দেওয়া সত্ত্বেও কয়েক জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে কর্তৃপক্ষের অনীহা দেখা গিয়েছে।’’ হরিদ্বারের ‘ধর্ম সংসদ’-এ সংখ্যালঘু নিধনের ডাক দেওয়ার অভিযোগ সত্ত্বেও প্রথমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেনি উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার। পরে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের ফলে দশনা মন্দিরের পুরোহিত যতি নরসিংহানন্দ-সহ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নরিম্যানের কথায়, ‘‘কয়েক দিন পরে উপরাষ্ট্রপতি এক বক্তৃতায় ঘৃণাভাষণকে অসাংবিধানিক বলেন। সেটা শুনে খুশি হয়েছি। তবে ওটা শুধু অসাংবিধানিক নয়, ফৌজদারি অপরাধ।’’ নরিম্যানের বক্তব্য, ‘‘আইন অনুযায়ী ঘৃণাভাষণের জন্য কোনও ব্যক্তির তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। দুর্ভাগ্যবশত আইনে ন্যূনতম শাস্তির কথা বলা নেই। ফলে কারও শাস্তি হয় না। যদি আইনের শাসন মজবুত করতে হয় তবে সংসদকে আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধন করে ন্যূনতম শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবেই ঘৃণাভাষণের মামলায় শাস্তির ভয় তৈরি হবে।’’

ঘৃণাভাষণ প্রসঙ্গে নাম না করে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধেছেন নরিম্যান। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ঘৃণাভাষণ নিয়ে কেবল চুপ করেই নেই, তাঁরা কার্যত বিষয়টিকে সমর্থন করছেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সম্প্রতি শাসক দলের প্রধানের মুখে ধর্মান্ধ হিসেবে পরিচিত মোগল বাদশা আওরঙ্গজ়েবের সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষ শাসক হিসেবে পরিচিত শিবাজির তুলনা শুনলাম আমরা। কিন্তু সংবিধান মেনে যদি সৌভ্রাত্রের বার্তা দিতে হয় তাহলে বাবর বা তাঁর নাতি আকবরের কথা বলা উচিত। আকবর সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদের অন্যতম।’’ সম্প্রতি বারাণসীতে এক বক্তৃতায় মোদী বলেন, ‘‘এ দেশে যদি আওরঙ্গজ়েব আসেন, তবে শিবাজিও দেখা দেন।’’

হুমায়ুনকে লেখা বাবরের একটি চিঠি পড়ে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন নরিম্যান। তাঁর কথায়, ‘‘ওই চিঠিতে ভারতের বৈচিত্রের কথা বলেছেন বাবর। সেই সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের কথা মাথায় রেখে কী ভাবে দেশ শাসন করতে হবে তা নিয়ে ছেলেকে পরামর্শ দিয়েছেন। ভারতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন খারিজ করা উচিত। উৎসাহ দেওয়া উচিত বাক্‌স্বাধীনতাকে। তবে বাক্‌স্বাধীনতাকে ব্যবহার করে কাউকে হিংসার দিকে ঠেলে দেওয়া হলে তা সমর্থনযোগ্য নয়। সেটাই আসলে ঘৃণাভাষণ।’’

BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy