Advertisement
E-Paper

ধ্বংসস্তূপ ভেবে বন্ধুর শরীরের উপর দিয়ে বেশ কয়েক বার হেঁটেছি! হুমায়ুনের সমাধিচত্বরে দুর্ঘটনার পর বললেন যুবক

শুক্রবার দিল্লির পূর্ব নিজামুদ্দিন এলাকায় মোগল সম্রাট হুমায়ুনের সমাধিক্ষেত্র সংলগ্ন শরিফ পট্টে শাহ দরগায় ছাদ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয় ছ’জনের। সমাধিক্ষেত্র চত্বরের দরগার ছাদ ও সংলগ্ন প্রাচীরের একটি অংশ ভেঙে পড়েই এই দুর্ঘটনা ঘটে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২৫ ১৭:০৫
দুর্ঘটনার পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং উদ্ধারকারী দল।

দুর্ঘটনার পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং উদ্ধারকারী দল। ছবি: পিটিআই।

ধ্বংসস্তূপ ভেবে বন্ধুর শরীরের উপর দিয়ে বেশ কয়েক বার হেঁটেছি! এমনই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছিলেন যুবক। শুক্রবার দিল্লির পূর্ব নিজামুদ্দিন এলাকায় মোগল সম্রাট হুমায়ুনের সমাধিক্ষেত্র সংলগ্ন শরিফ পট্টে শাহ দরগায় ছাদ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয় ছ’জনের। সমাধিক্ষেত্র চত্বরের দরগার ছাদ ও সংলগ্ন প্রাচীরের একটি অংশ ভেঙে পড়েই এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার সময় অনেকেই ওই দরগার ভিতরে ছিলেন। যেমন শুক্রবার ছুটি থাকায় বন্ধু নাদিমকে নিয়ে ওই দরগায় গিয়েছিলেন বছর ত্রিশের মুইনুদ্দিন। নাদিম জানিয়েছেন, দরগার ভিতরে মইনুদ্দিন ঢুকে গেলেও তিনি কয়েক জনের পিছনে ছিলেন। সেই সময় হঠাৎই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে দরগার ছাদ। বন্ধুকে খুঁজতে ছোটাছুটি শুরু করেন নাদিম। ধ্বংসস্তূপ সরিয়েও বন্ধুকে খোঁজার চেষ্টা করেন। পরে উদ্ধারকারী দল ধ্বংসস্তূপ সরিয়েই মইনুদ্দিনের দেহ উদ্ধার করে। নাদিমের কথায়, “যে জায়গা থেকে ওর দেহ উদ্ধার হল, দুর্ঘটনার পর সেখান দিয়ে বহু বার হাঁটাচলা করেছি। অনেক পরে বুঝেছি, আমার বন্ধুর দেহের উপর দিয়ে বেশ কয়েক বার হেঁটেছি।”

এ রকম বহু করুণ কাহিনি এখন শোনা যাচ্ছে রাজধানীর আনাচেকানাচে। একের পর এক বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে ছোট ছেলে। তাই ওই দরগায় মৌলবীর কাছে পরামর্শ চাইতে গিয়েছিলেন বছর ষাটের অনিতা সাইনি। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁরও। মায়ের মৃত্যু সংবাদ শুনে কেঁদে ফেলেন তাঁর ছোট ছেলে। আর বড় ছেলে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করে এমস থেকে মায়ের দেহ হাতে পান।

ইউনেস্কোর ‘হেরিটেজ স্থাপত্যে’র তালিকায় রয়েছে দ্বিতীয় মোগল সম্রাট হুমায়ুনের সমাধিক্ষেত্র। ১৫২৬ থেকে ১৮৫৮, এই ৩৩২ বছরের মোগল শাসনকালে ভারত জুড়ে গড়ে উঠেছিল বহু স্থাপত্য। তার বড় অংশের মধ্যেই হুমায়ুনের সমাধিক্ষেত্রের ‘প্রভাব’ রয়েছে। ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপথের যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদিকে হারিয়ে বাবর দিল্লি দখল করেছিলেন। কিন্তু পুরো পাঁচ বছরও রাজত্ব করতে পারেননি তিনি। বাবরের পুত্র হুমায়ুনকে শের শাহ সুরির কাছে যুদ্ধে হেরে গিয়ে ভারত ছেড়ে পালাতে হয়েছিল। তবে শের শাহের অকালমৃত্যুর পরে নিজের শক্তি বাড়িয়ে, নতুন উদ্যমে ফিরে এসে ফের মোগল সাম্রাজ্যের সিংহাসন দখল করেছিলেন তিনি। দিল্লির ‘পুরানা কিলা’য় শের মণ্ডল, আর আগরায় কাচপুরার মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন তিনি। ১৫৩৩ সালে যে দিনা-পানাহ বা ‘পুরনো কেল্লা’ হুমায়ুন নির্মাণ করেছিলেন, তার কাছেই এই সমাধিসৌধটি অবস্থিত। ১৫৫৬ সালে হুমায়ুন মারা যান। ১৫৬২ সালে তাঁর স্ত্রী হামিদা বানু বেগম বুখারার স্থপতি মির্জা গিয়াসকে দিয়ে বেলেপাথরের ওই সমাধিক্ষেত্র নির্মাণ করিয়েছিলেন। মোগল ইতিহাসে এটিই প্রথম উদ্যান সমাধিক্ষেত্র।

Death Delhi humayun
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy