E-Paper

কচ্ছথিবুর পাল্টা, ফারুকের প্রশ্ন চিনা আগ্রাসন নিয়ে

সীমান্তে চিনা আগ্রাসন এবং ভারত-চিন আলোচনার অগ্রগতি না হওয়া নিয়েও মোদী সরকারকে বিঁধেছেন বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’-র এই প্রবীণ কাশ্মীরি নেতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:০৭
Farooq Abdullah

ফারুক আবদুল্লা। — ফাইল চিত্র।

বিজেপি এ দেশে চিন বা রাশিয়ার মতো শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে বলে অভিযোগ তুললেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ফারুক আবদুল্লা। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি সংবিধানকে শেষ করে দেবে বলে অনেকে আঁচ করছেন। তারা আজীবন শাসনক্ষমতায় থেকে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সেই কারণেই সংবিধানকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে ‘ইন্ডিয়া’ ব্লক তৈরি করা হয়েছে। বি আর অম্বেডকরের দেওয়া সংবিধানকে আমরা প্রাণ দিয়ে হলেও রক্ষা করব।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সিপিএম নেতা মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি আজ জানিয়েছেন, বিজেপি-বিরোধী ভোট এককাট্টা করার উদ্দেশ্যেই এ বারের লোকসভা ভোটে জম্মু-কাশ্মীরে লড়বে না তাঁদের দল।

সীমান্তে চিনা আগ্রাসন এবং ভারত-চিন আলোচনার অগ্রগতি না হওয়া নিয়েও মোদী সরকারকে বিঁধেছেন বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’-র এই প্রবীণ কাশ্মীরি নেতা। কংগ্রেস আমলে শ্রীলঙ্কার হাতে কচ্ছথিবু দ্বীপ তুলে দেওয়া হয়েছিল বলে ভোটের মুখে নয়া আক্রমণ শানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তার প্রেক্ষিতে ফারুক প্রশ্ন তুলেছেন, লাদাখ এবং অরুণাচল প্রদেশে চিনের সক্রিয়তা নিয়ে সরকার কেন নীরব? গত কালই চিন অরুণাচলের ৩০টি এলাকার নিজেদের মতো নামকরণ করায় বিবৃতি দিয়ে তা খণ্ডন করতে হয়েছে বিদেশ মন্ত্রককে। ফারুকের মতে, শ্রীলঙ্কা নিয়ে মাথা ঘামানোর বদলে ভারতের উচিত নিজের
জমির দিকে নজর দেওয়া, বিশেষত লাদাখের দিকে।

জম্মু লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী রমন ভল্লার মনোনয়ন জমা উপলক্ষে জম্মুতে গিয়েছিলেন ফারুক। এ দিকে, কাশ্মীর উপত্যকার তিনটি আসনে ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের আর এক শরিক পিডিপি-র আদৌ সমঝোতা হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি অনন্তনাগ-রাজৌরি আসনটি থেকে অতীতে জিতেছিলেন। অন্তত ওই আসনটি চায় পিডিপি। এ দিকে ন্যাশনাল কনফারেন্স সেই আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, কাশ্মীরের দুই দলকে এক সূত্রে গাঁথতে কংগ্রেসের উদ্যোগ কি বিফলে গেল? ফারুকের অবশ্য দাবি, ‘‘ইন্ডিয়া ব্লক শক্তিশালী ও মজবুত আছে। এই জোট কেউ ভাঙতে পারবে না।’’

আর এক ধাপ এগিয়ে ফারুক-পুত্র ওমর আবদুল্লার দাবি, কাশ্মীর উপত্যকার কোনও আসনেই হয়তো ন্যাশনাল কনফারেন্সের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে না পিডিপি। মেহবুবা তেমন কোনও লক্ষণও দেখাননি। কারণ, দু’টি দলই ‘ইন্ডিয়া’-র শরিক। দিল্লিতে বিরোধী মঞ্চের সাম্প্রতিক সভায় ফারুকের সঙ্গে মেহবুবাও উপস্থিত ছিলেন বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন ওমর। উল্লেখ্য, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া বিরোধী গুপকর
জোট (পিএজিডি)-এ ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে পিডিপি-ও ছিল। জোটে আসন-জট নিয়ে চর্চাকে আমল দিতে না চেয়ে সিপিএম নেতা তারিগামি বলেছেন, ওই জোট শুধুই রাজনৈতিক নয়। প্রত্যেকটি কেন্দ্রের আলাদা রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। তারিগামির দাবি, বিজেপি জম্মু ও কাশ্মীরের গুরুতর ক্ষতি করেছে। তাই তাদের হারাতে অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়ে তিনি বলেছেন, মানুষের অসন্তোষ চাপা দিয়ে একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে চাইছে বিজেপি।

গুলাম নবি আজ়াদের ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ আজ়াদ পার্টি, আলতাফ বুখারির আপনি পার্টি, সাজ্জাদ লোনের পিপলস কনফারেন্সের মতো দলগুলির কাছাকাছি আসা নিয়ে জল্পনার আবহে তারিগামি কাশ্মীরের মানুষের প্রতি এই দলগুলির আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ওমরেরও দাবি, বিজেপির ছায়া হয়ে কিছু দল উপত্যকায় জোট বেঁধেছে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ করে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে ওমরের অভিযোগ। পাশাপাশি তিনি মনে করেন, অরবিন্দ কেজরীওয়াল বিজেপির ভ্রান্ত নীতির শিকার। কেজরীওয়াল এবং হেমন্ত সোরেনের গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারিগামিও।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Farooq Abdullah BJP China

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy