জম্মু-কাশ্মীরের ভোটে সাম্প্রতিক হিংসার পিছনে পিডিপি রয়েছে বলে প্রথম থেকেই দাবি করছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা। এ বার তাঁর দাবি, উপত্যকায় যে বিক্ষোভকারীরা পাথর ছুড়ছে তাদের একাংশকে টাকা জোগায় পিডিপি সরকার। ফারুকের এই মন্তব্যে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে শ্রীনগর ও দিল্লির রাজনীতিকদের মধ্যে। তারই মধ্যে সেনার জিপে বিক্ষোভকারীকে বেঁধে ঘোরার ভিডিও নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়িয়েছেন প্রাক্তন সেনা কর্তা ও আপ নেতা এইচ এস পনাগ।
ফারুকের বক্তব্য, ‘‘যে বিক্ষোভকারীরা পাথর ছুড়ছে তাদের পিছনে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সইদের মদত আছে বলে মন্তব্য করেছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণীও। তবে সকলের পিছনেই যে সরকারি মদত আছে, তা নয়।’’ ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতার দাবি, বিজেপিকে ঠেকাতে পিডিপি প্রচার চালিয়েছিল। পরে তারাই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। ফলে মেহবুবা মুফতির দল তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে মনে করছেন উপত্যকার মানুষ।
পিডিপি-বিজেপি জোট নিয়ে সমস্যার কথা মেনে নিচ্ছেন মেহবুবার দলের নেতারাও। পিডিপি নেতা বিক্রমাদিত্য সিংহের কথায়, ‘‘কিন্তু তখন সরকার গড়তে বিজেপির সঙ্গে জোট করা ছাড়া পথ ছিল না। নরেন্দ্র মোদী সরকার চাইলে কাশ্মীরের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারত। তারা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।’’
জনতার হাত থেকে বাঁচতে বিক্ষোভকারীকে সেনার জিপে বেঁধে ঘোরার ভিডিও উপত্যকায় ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে। এই ঘটনায় দায়ী জওয়ানদের শাস্তি দেওয়া হবে বলে মেহবুবা মুফতিকে আশ্বাস দিয়েছেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত। কিন্তু সেই ভিডিও নিয়ে মুখ খুলে টুইটারে ঝড় তুলেছেন সেনার নর্দার্ন কম্যান্ডের প্রাক্তন প্রধান ও আপ নেতা এইচ এস পনাগ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই দৃশ্য সেনা ও দেশকে দীর্ঘ দিন যন্ত্রণা দেবে।’’ এর পরেই টুইটারে তোপের মুখে পড়েন পনাগ। গায়ক অভিজিৎ বলেন, ‘‘আপনি পাকিস্তানের দলে ভিড়েছেন। কাশ্মীরে আপনাকে লাথি খেতে দেখলে বেশ ভাল লাগত।’’ প্রাক্তন ইনফোসিস কর্তা মোহনদাস পাইয়ের প্রশ্ন, ‘‘সেনাদের কি আত্মরক্ষার অধিকার নেই? ৯০০ জঙ্গি আপনাকে খুন করতে চাইলে কি করতেন?’’ অনেকে আবার পনাগের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ওই ঘটনায় সেনা জওয়ানদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে পুলিশ। দোষী জওয়ানদের শাস্তি দেওয়া হবে বলে মেহবুবা মুফতিকে আশ্বাস দিয়েছেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়তও।
অনন্তনাগে উপ-নির্বাচনের আগে দক্ষিণ কাশ্মীরে আতঙ্ক বাড়িয়েছে নতুন দু’টি ভিডিও। তাতে দেখা যাচ্ছে, আক্ষরিক অর্থেই মুখের কাছে একে-৪৭ ধরে পিডিপি কর্মীদের ভারত-বিরোধী স্লোগান দিতে বাধ্য করছে জঙ্গিরা। রাজনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।