Advertisement
E-Paper

মেরে দেবে বুঝলে বাপের বাড়ি ফিরতেই দিতাম না

দু’দিন আগে ফোনটা এসেছিল হঠাৎই। ও পারের পুলিশকর্মীটি জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী মারা গিয়েছেন। দিল্লি থেকে কয়েক ক্রোশ দূরে উত্তরপ্রদেশে শ্বশুরের গ্রামের ভিটেতে দাহও সারা হয়ে গিয়েছে! এর পর জল গড়িয়েছে বহু দূর। পুলিশের জেরার মুখে শ্বশুর স্বীকার করেছেন, মেয়ে ভিন্ জাতের ছেলেকে বিয়ে করেছে, এটা মেনে নিতে পারেননি তিনি। পরিবারের সম্মান রক্ষায় তিনিই দিল্লির বেঙ্কটেশ্বর কলেজে সংস্কৃতের ছাত্রী ২১ বছরের ভাবনাকে খুন করেছেন। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না বছর চব্বিশের যুবক অভিষেক শেঠ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০৬

দু’দিন আগে ফোনটা এসেছিল হঠাৎই। ও পারের পুলিশকর্মীটি জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী মারা গিয়েছেন। দিল্লি থেকে কয়েক ক্রোশ দূরে উত্তরপ্রদেশে শ্বশুরের গ্রামের ভিটেতে দাহও সারা হয়ে গিয়েছে!

এর পর জল গড়িয়েছে বহু দূর। পুলিশের জেরার মুখে শ্বশুর স্বীকার করেছেন, মেয়ে ভিন্ জাতের ছেলেকে বিয়ে করেছে, এটা মেনে নিতে পারেননি তিনি। পরিবারের সম্মান রক্ষায় তিনিই দিল্লির বেঙ্কটেশ্বর কলেজে সংস্কৃতের ছাত্রী ২১ বছরের ভাবনাকে খুন করেছেন। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না বছর চব্বিশের যুবক অভিষেক শেঠ। মানতে পারছেন না, কয়েক সপ্তাহ আগে যে মেয়েটিকে ভালবেসে বিয়ে করেন, তাঁকে খুন করা হয়েছে। নিজের মেয়েকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে বাবা-মা। আজ বললেন, “এতটুকুও যদি আঁচ পেতাম, কিছুতেই ওকে বাড়ি ফিরে যেতে দিতাম না। আসলে কেউ কি ভাবতে পারে, নিজের বাবা-মা খুন করবে!”

কলেজেরই এক বন্ধুর মাধ্যমে আলাপ হয় সরকারি চাকুরে অভিষেক শেঠের সঙ্গে। বন্ধুত্ব গড়ায় প্রেমে। সে খবর জানার পরই বেঁকে বসে ভাবনার মা-বাবা। ভিন্ জাতে বিয়ে চলবে না, মেয়েকে সাফ জানিয়ে দেয় তারা। শেষে পরিবারের মত অগ্রাহ্য করেই গত ১২ নভেম্বর মন্দিরে গাঁটছড়া বাঁধেন ভাবনা-অভিষেক। ছেলের বৌ-কে মেনেছিল অভিষেকের পরিবারও।

কিন্তু সে দিনই রাতে তাঁদের বাড়িতে হাজির হয় ভাবনার বাবা জগমোহন যাদব ও মা সাবিত্রী দেবী। মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান জাঁকজমক করে হবে, এই বুঝিয়ে সঙ্গে নিয়ে আসে মেয়েকে। অভিষেকের দাবি, বাড়ি পৌঁছেই পুরনো মেজাজে ফিরে যায় তারা। এই বিয়ে তারা মানে না, নতুন করে আবার বিয়ে দেবে এই বলে শাসিয়েওছিল মেয়েকে। দু’দিন বাদে ভাবনা ফিরে আসেন অভিষেকের কাছেই। সে দিনই তাঁর মা-বাবা এসে ফের মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যায়। আশ্বাসও দেয়, দেরি না করে রবিবারই বাগদান পর্ব সেরে ফেলা হবে।

অভিষেক জানিয়েছেন, রবিবার সকাল থেকে বহু বার চেষ্টা করেও আর ভাবনার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এর পরই সোমবার পুলিশের থেকে ফোনটা পান। স্ত্রীর মৃত্যুটা যে স্বাভাবিক নয়, সন্দেহ হতেই দ্বারকা থানায় অভিযোগ করেন অভিষেক।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, “আমাদের সম্পর্কটা বাঁচিয়ে রাখতে ভাবনা অনেক লড়াই করেছিল।” কিন্তু শেষমেশ আর জিতে ফেরা হল না।

স্ত্রীকে হারানোর পাশাপাশিই এখন তাড়া করে বেড়াচ্ছে আতঙ্ক। অভিষেক জানান, পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়ে রয়েছেন। হুমকি ফোন আসছে। চাপ দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য। অভিষেকের কথায়, “এখনও পুলিশকে কিছু জানাইনি। তবে সাংবাদিকদের বলছি, অন্তত এক জন কনস্টেবল যদি আমাদের দেওয়া হত। আমার সন্দেহ, ওরা ফোনেও নজরদারি চালাচ্ছে।” তিনি কোথায় আছেন, কী করছেন এই নিয়ে সাংবাদিকদের না লিখতে অনুরোধ জানান অভিষেক। বলেন, “ছ’মাস আগে যখন ভাবনার মা-বাবার সঙ্গে বিয়ে নিয়ে কথা বলেছিলাম, ওরা বলে, “তুমি পঞ্জাবি। আমাদের মেয়ের থেকে দূরে থাকো। আমরা যাদব। এই সম্পর্ক হতে পারে না।”

honour killing national news online national news father Uttar Pradesh different state's boy married police investigation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy