Advertisement
E-Paper

ভাঁড়ারে টান, দু’টাকার সদস্যপদ ৫ টাকা

বৃদ্ধি এক লাফে প্রায় ১৫০ শতাংশ! কয়েক যুগ ধরে একই অঙ্কে নট-নড়নচড়ন ছিল সিপিএমের প্রাথমিক সদস্যপদের চাঁদা। অবশেষে চলতি পার্টি কংগ্রেসে দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে সেটা বাড়ানো হল। এবং তা কাকতালীয় ভাবে এমন একটা সময়ে, যখন তৃণমূলের তহবিলের হিসেব এবং আয়ের উত্স নিয়ে বাংলার রাজনীতি সরগরম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৩৪

বৃদ্ধি এক লাফে প্রায় ১৫০ শতাংশ!

কয়েক যুগ ধরে একই অঙ্কে নট-নড়নচড়ন ছিল সিপিএমের প্রাথমিক সদস্যপদের চাঁদা। অবশেষে চলতি পার্টি কংগ্রেসে দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে সেটা বাড়ানো হল। এবং তা কাকতালীয় ভাবে এমন একটা সময়ে, যখন তৃণমূলের তহবিলের হিসেব এবং আয়ের উত্স নিয়ে বাংলার রাজনীতি সরগরম।

কত ছিল চাঁদা? হলই বা কত?

ছিল ২ টাকা। হল ৫! এ বারের পার্টি কংগ্রেসে জমা পড়া সর্বশেষ তথ্য বলছে, সারা দেশে সিপিএমের সদস্য সংখ্যা এখন ১০ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭৫০ জন। এঁদের সকলকেই এ বার থেকে প্রতি বছর সদস্যপদ নবীকরণের সময় দু’টাকার বদলে পাঁচ টাকা দিতে হবে।

নেতারা বলছেন, দলের আয় বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। টানাটানির সংসারে বর্ধিত চাঁদা ও দলীয় সদস্যদের লেভি বাবদ প্রাপ্ত টাকা কিছুটা স্বস্তি আনবে। পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘শুনে হয়তো আশ্চর্য লাগছে! কিন্তু আমাদের দলে এখনও বার্ষিক দু’টাকা চাঁদাই চালু ছিল। এ বার গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ওটা ৫ টাকা করতে হল।’’

কিন্তু বাস্তবে কতটা সচ্ছলতা আনবে ৩ টাকার এই বৃদ্ধি? অনেকেই কিন্তু প্রশ্নটা তুলছেন। তাঁদের বক্তব্য, পাঁচ টাকারও বা কী মূল্য আছে? আজকের বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চাঁদাটা ১০০, ৫০ বা নিদেনপক্ষে ২০ টাকাও হতে পারত!

এখানেই বৃন্দাদের যুক্তি, চাঁদার অঙ্ক এর চেয়ে বেশি হলে ধাক্কা খেত দলের ভাবমূর্তি। হইচই শুরু হতো, ‘সিপিএম আর গরিব, মেহনতি মানুষের পার্টি নয়’ বলে। স্বল্প আয়ের কর্মী মহলেও অসন্তোষ দেখা দিত। তাই ভেবেই ৫ টাকা চাঁদা করা হয়েছে। দলকে কর্মীরা যে লেভি দেন, তার পরিমাণেও রদবদল করা হয়েছে। যে কর্মীরা মাসে খুব সামান্য টাকা আয় করেন, তাঁদের লেভির পরিমাণ কমানো হয়েছে। নেতাদের বক্তব্য, সব মিলিয়ে ব্যাপারটা ঠিকই থাকবে। একদিকে সদস্যপদের চাঁদা বাড়ানো, অন্য দিকে কম আয়ের কর্মীদের লেভির ‘ভার’ কমানো— এই দুইয়ের ভারসাম্যে দলের গড় আয় বাড়বে।

সম্মেলনে আসা এক নেতার কথায়, ‘‘জমানো টাকায় আর ক’দিন চলে! বিরোধীরা মনে করে, অতীতে পশ্চিমবঙ্গ ও কেরল এবং বর্তমানে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় থাকার সুবাদে সিপিএম বহু টাকার সম্পত্তি করে নিয়েছে! অথচ ত্রিপুরায় এখনও দলের ভাঁড়ারের অবস্থা ভাল নয়। পশ্চিমবঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের জন্য হাজার হাজার মামলা লড়তে জলের মতো টাকা খরচ হচ্ছে। ক্ষমতায় না থেকেও কেরল দলীয় তহবিলে সব চেয়ে বেশি অবদান রাখে ঠিকই, কিন্তু তা টানাটানি ঘোচার পক্ষে যথেষ্ট নয়।’’

সত্যি কি এতটাই টানাটানির সংসার? নেতাটি বললেন, ‘‘আমাদের লুকোছাপার কিছু নেই! পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসক দল প্রায়ই হুমকি দেয়, এজেসি বোস রোডের দু’পাশে সিপিএমের যত ‘কালো সম্পত্তি’ তারা খুঁড়ে বের করবে! করুক না। ওই সব সম্পত্তি স্নেহাংশু আচার্যের মতো কমরেডদের দান। দান নিয়েই আমাদের পার্টি চলে এসেছে বরাবর।’’

আর তাই হিসেবিরা যা-ই বলুন, আস্থা রইল ৫ টাকায়!

membership cpm left front visakhapatnam trinamool tmc money west bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy