E-Paper

প্লেটে খাবার, সবুজে শুকনো রক্তের দাগ

অমিত শাহের মতো ভিভিআইপিদের উপস্থিতির কারণে গতকাল আমজনতার প্রবেশ নিষেধ ছিল পহেলগামে।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৫১
থমথমে বৈসরন উপত্যকা। এখনও ছড়িয়ে রয়েছে মঙ্গলবারের জঙ্গিহানার চিহ্ন। বৃহস্পতিবার ছবিটি তুলেছেন অনমিত্র সেনগুপ্ত।

থমথমে বৈসরন উপত্যকা। এখনও ছড়িয়ে রয়েছে মঙ্গলবারের জঙ্গিহানার চিহ্ন। বৃহস্পতিবার ছবিটি তুলেছেন অনমিত্র সেনগুপ্ত।

২৪ এপ্রিল: লোহার গেটটা তখনও আধ খোলা। পাশ কাটিয়ে এগোতেই ধাক্কাটা খেলাম। সবুজ গালিচায় চাপ চাপ শুকনো কালচে রক্ত। মাছি উড়ছে ভনভন করে। পাশেই উল্টে রয়েছে চেয়ার, টেবিলের উপরে আধখাওয়া খাবার, চায়ের কাপ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জুতো, মাফলার, গরম টুপি। সময় যেন থমকে গিয়েছে বৈসরনে।

অমিত শাহের মতো ভিভিআইপিদের উপস্থিতির কারণে গতকাল আমজনতার প্রবেশ নিষেধ ছিল পহেলগামে। আজ তাই সকাল সকাল পৌঁছে গিয়েছিলাম। হামলার দিনের দুপুর পর্যন্ত যেখানে গাড়ি দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না, সেখানে আজ নিস্তব্ধতা। অধিকাংশ হোটেল ও রেস্তরাঁ বন্ধ। দু’-একটি চায়ের দোকান খোলা থাকলেও পয়সা নিতে চাইলেন না কেউই। মঙ্গলবারের হামলা কেবল ২৬টি পরিবারের নয়, পাল্টে দিয়েছে স্থানীয়দের জীবনও। ভরা মরসুম হওয়া সত্ত্বেও গত দু’দিনে ব্যবসা তলানিতে। বন্ধ করে দিতে হচ্ছে একের পর এক হোটেল। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন স্থানীয় হোটেলের অস্থায়ী কর্মীরা। পহেলগামমুখী সড়ক খুলে দেওয়ায় শ্রীনগর থেকে আজই পহেলগামে এসেছিলেন মুম্বইয়ের ফারহান, পরিবার-পরিজন নিয়ে। দু’দিনের বুকিং বাতিল করে আগামিকাল সকালেই শ্রীনগরে
ফিরে যাচ্ছেন।

ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের পাশ দিয়ে, সিআরপিএফের ডি/১১৬ ব্যাটেলিয়নকে পাশ কাটিয়ে বৈসরন উপত্যকা যাওয়ার রাস্তা। রাস্তা বলা ভুল। এবড়ো-খেবড়ো বোল্ডার ভরা জঙ্গুলে পাহাড়ি পথ। কোথাও কোমর সমান উঁচু পাথরের চাঁই পথ আটকায়, কোথাও হাঁটু সমান কাদা। নড়বড়, ভঙ্গুর নরম মাটিতে পড়ে গেলে হাত-পা ভাঙার সম্ভাবনা প্রবল। পাশ দিয়ে ঝোরার জল নেমে যাচ্ছে প্রায়শই পা ভেজাতে ভেজাতে। অপেক্ষাকৃত ভাল রাস্তা একটি আছে। তা মূলত ঘোড়া ও স্কুটারের ধাঁচে ‘অল টেরেন ভেহিকলে’র জন্য। অবশ্য গত দু’দিনে সে রাস্তার দখল নিয়েছে সেনা-আধা সেনার কনভয়।

পাহাড় ডিঙানো প্রায় ছয় কিলোমিটার খাড়া চড়াইয়ের শেষে বৈসরন উপত্যকা। গোটা এলাকা ঘিরে ঘন পাইনের বন। মাঝে এক টুকরো সমতল। দূর থেকে দেখে মনে হবে এক ফালি সবুজ কার্পেট ভুল করে মেলে

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pahalgam

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy