Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ষষ্ঠ ছবির কী হবে, ভক্তেরা উদ্বেগেই

ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহের ফিল্মি কেরিয়ারও কিন্তু কম বর্ণময় নয়। তাঁর যেমন গানের অ্যালবাম রয়েছে। তেমনই ঝুলিতে রয়েছে পাঁচ-পাঁচটা ছবিও। প্রতিটি ছবিরই তিনিই প্রযোজক, তিনিই পরিচালক। নিজের ছবিতে কস্টিউম ডিজাইনারের কাজটিও তিনি করে থাকেন।

গুরমিত রাম রহিম সিংহ।— ফাইল ছবি।

গুরমিত রাম রহিম সিংহ।— ফাইল ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৫৫
Share: Save:

তিনি স্বঘোষিত ধর্মগুরু। ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহের ফিল্মি কেরিয়ারও কিন্তু কম বর্ণময় নয়। তাঁর যেমন গানের অ্যালবাম রয়েছে। তেমনই ঝুলিতে রয়েছে পাঁচ-পাঁচটা ছবিও। প্রতিটি ছবিরই তিনিই প্রযোজক, তিনিই পরিচালক। নিজের ছবিতে কস্টিউম ডিজাইনারের কাজটিও তিনি করে থাকেন।

২০১৫ সালে রাম রহিমের প্রথম ছবি মুক্তি পেয়েছিল। ‘এমএসজি: মেসেঞ্জার অব গড।’ বিতর্ক সে বারও পিছু ছাড়েনি। ছবিটি মুক্তির আগেই নানা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন গুরমিত। প্রথমত ছবির নামে ‘গড’ শব্দটির ব্যবহার নিয়ে আপত্তি ছিল অনেকের। ওই ছবি মুক্তির আগেই ইস্তফা দেন সেন্সর বোর্ডের তৎকালীন প্রধান লীলা স্যামসন। তাঁর যুক্তি ছিল, ছবিটি কুসংস্কারকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। কিন্তু আপিল বোর্ডে সেই আপত্তি ধোপে টেকেনি। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করে সেই ছবি করমুক্তও করিয়েছিলেন ধর্মগুরু। পঞ্জাব-হরিয়ানার হলগুলিতে ভিড় করেছিলেন অসংখ্য ভক্ত। সেই সময়ে গুরমিতের নিজস্ব সংস্থা এমএসজি দাবি করেছিল, ১০০ কোটির উপর ব্যবসা করেছে এই ছবি। অথচ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের একাংশ দাবি করে, অঙ্কটা ১৬ কোটির বেশি নয়।

আরও পড়ুন: বন্‌ধের বাজারেও পাহাড় জুড়ে শুধু রাম রহিম

এর পরে গুরমিত আরও চারটি ছবিতে অভিনয় করেন। ‘এমএসজি ২’ দ্য মেসেঞ্জার’, ‘এমএসজি: দ্য ওয়ারিয়র লায়ন হার্ট’, ‘হিন্দ কা না-পাক কো জবাব’ এবং ‘জাট্টু ইঞ্জিনিয়ার’। এর মধ্যে চতুর্থ ছবিটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ঘটনা নিয়ে। যেখানে এক ভারতীয় চরের ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন রাম রহিম। শেষ ছবিটি আবার কমেডি। প্রতিটি ছবির প্রযোজনা আর পরিচালনার দায়িত্ব ছিল তাঁরই। ‘লায়ন হার্ট’ ছবিটিতে গুরমিত ছাড়াও অভিনয় করেছিলেন তাঁর মেয়ে হানি প্রীত ইনসান। কোনও ছবিতে তিনি মোটরবাইক নিয়ে সুপার হিরো। কোনও ছবিতে তিনি মাদকাসক্ত গোটা গ্রামকে নেশামুক্তির পথ দেখানো শিক্ষকের ভূমিকায়। পঞ্জাব-হরিয়ানায় তাঁর ছবির দর্শক নেহাত কম নয়। কিন্তু প্রতিবারই গুরমিতের প্রযোজনা সংস্থা যতটা লাভের দাবি করত, বাস্তবে সেই অঙ্কের মিল খুঁজে পায়নি সংবাদমাধ্যম।

ফলাও করে নিজের ছবির পুরস্কার জেতার কথাও প্রচার করতেন ধর্মগুরু। কিন্তু স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, সিরসায় ডেরা সচ্চা সৌদার আশ্রমের কিছু সদস্যকে নিয়ে তৈরি করা একটি কমিটিই গুরমিতের ছবিকে পুরস্কার দিত। যেখানে নায়ক, পরিচালক থেকে শুরু করে শ্রেষ্ঠ ছবি— সব ক’টি পুরস্কারই পেতেন গুরমিত নিজে। তবে ‘দাদা সাহেব ফালকে ফিল্ম ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংগঠনও বছর দু’য়েক আগে তাঁকে পুরস্কারে ভূষিত করে।

গুরমিতের আশ্রমে নিয়ম করে তাঁর অভিনীত ছবি দেখানো হয়। অসংখ্য অনুরাগী সেগুলি দেখতেও আসেন। আশ্রমে আছে গান-বাজনার ব্যবস্থাও। আশ্রমে আসা ভক্তদের প্রথম কয়েক মিনিট ‘বাবা’ রাম রহিমের বক্তৃতা শোনানোর পরে চলে তাঁরই গাওয়া গান, সঙ্গে উদ্দাম নাচ।

গুরমিতের ষষ্ঠ ছবিটিও প্রায় তৈরি। কিন্তু নায়ক-প্রযোজক নিজে জেলে চলে যাওয়ায় তার ভাগ্য এখন প্রশ্নের মুখে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE