এ বার ভিন্দেশে আটক হাতি উদ্ধারে তৎপর হলেন সুষমা স্বরাজ। বাংলাদেশের মাটিতে আটকে থাকা অসমের হস্তিনীকে ফিরিয়ে আনতে মাঠে নামলেন বিদেশমন্ত্রী। হাতিটিকে অসমে ফিরিয়ে আনতে বিদেশ মন্ত্রকের মধ্যস্থতায় অসম বন দফতরের প্রতিনিধিরা যাচ্ছেন বাংলাদেশে।
মাসখানেক আগে কাজিরাঙা থেকে বন্যার স্রোতে দলছুট এক হস্তিনী গুয়াহাটি লাগোয়া চন্দ্রপুরের চরে এসে ওঠে। অনেক চেষ্টার পরও তাকে ঘুম পাড়িয়ে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ফের জলে ভেসে সে চলে যায় নামনি অসমের শেষ প্রান্ত ধুবুরিতে। সেখানেও হাতিটিকে তীরে তোলা যায়নি। জলসীমান্ত পার করে সে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।
কয়েকশো কিলোমিটারের যাত্রা শেষে হাতিটি আপাতত বাংলাদেশে বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দিতে যমুনার চরে ঘাঁটি গেড়েছে। বাংলাদেশ বন দফতর সূত্রে খবর, চরে এই সময় প্রচুর ঘাস, কলাগাছ রয়েছে। তাই তার খাদ্যের অভাব হচ্ছে না। হাতি নিয়ে সেখানকার মানুষের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ। নৌকা করে দলে দলে মানুষ হাতি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন।
অনুপ্রবেশকারী ওই হাতিকে ভারতে ফেরত পাঠাতে চাইছে বাংলাদেশ সরকার। এ নিয়ে অসম সরকারের কাছে বার্তা আসে। রাজ্য বন দফতরও হাতি ফেরত আনতে উদ্যোগী হয়। আবেদন যায় কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকে। সেখানে ছাড়পত্র মেলার পরে বিষয়টি জমা পড়ে সুষমার দফতরে। বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সবুজ সংকেত দেয় বিদেশ মন্ত্রক। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, পশুচিকিৎসক কুশলকুমার শর্মার নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল হাতি উদ্ধারের জন্য বাংলাদেশে যাবেন। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল বিকাশ ব্রহ্ম জানান, বন্যার সময় ব্রহ্মপুত্রে তীব্র স্রোত রয়েছে। তাই রাজ্যের সীমান্তে থাকার সময় বন কর্মী ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর হাতিটিকে উদ্ধার করতে পারেনি। জলে থাকা হাতিকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়াও সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের চর থেকে হাতিটিকে কী ভাবে উদ্ধার করা যাবে, তা ঠিক করতেই সে দেশে যাচ্ছেন কুশল শর্মা, অবসরপ্রাপ্ত মুখ্য বনপাল রীতেশ ভট্টাচার্য ও গোয়ালপাড়ার ডিএফও সুলেমান চৌধুরি। তাঁরা প্রাথমিক রিপোর্ট দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে। ইতিমধ্যে হাতির অবস্থা দেখতে আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংস্থা আইইউসিএনের প্রতিনিধিরা বগুড়ার ওই চরে ঘুরে গিয়েছেন।
কুশলবাবু বলেন, ‘‘ভিসা মিললে ৩ অগস্ট বাংলাদেশ যাওয়ার কথা। কিন্তু এখনই হাতিটিকে ফেরত না-ও আনা হতে পারে। ব্রহ্মপুত্রের মতো ও পারের যমুনাতেও বানের টান রয়েছে। তার মধ্যে হাতিকে ঘুম পাড়ানি গুলি ছুঁড়লে জলে ডুবে তার মৃত্যু হতে পারে। বর্ষাকাল কাটলে তবেই সেই কাজ সম্ভব।’’ তাঁর আশঙ্কা, ঘুম পাড়ানোর পরেও হাতিটিকে ভারতে আনতে সমস্যা হবে। সাধারণ বিমানে চাপিয়ে হাতি আনা সম্ভব নয়। অত বড় হাতিকে যমুনার চর থেকে ‘এয়ারলিফ্ট’ করে আনার মতো ভারী হেলিকপ্টারও রাজ্যে নেই। এক মাত্র উপায়— জলপথে বিশেষ ব্যবস্থা থাকা স্টিমারে হাতি ফেরত আনা। তার জন্য ফের দুই দেশের সরকারের মধ্যে অনেক লালফিতের ফাঁস পার করতে হবে।
তবে অসম প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, বিদেশমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় দ্রুত সে সব সমস্যাও মিটবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy