বিহারের ভোটের ঠিক মুখে নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলির যথেচ্ছে খরচ করা নিয়ে সরব হলেন প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি। আজ সন্ধ্যায় তাঁর নতুন বই ‘ডেমোক্রেসিজ হার্টল্যান্ড—ইনসাইড দ্য ব্যাটল অফ পাওয়ার ইন সাউথ এশিয়া’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তরে এই মত প্রকাশ করেন তিনি।
প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, নির্বাচনে টাকা খরচের প্রশ্নে সৎ ও স্বচ্ছতা নিয়ে। কুরেশি বলেন,‘‘রাজনৈতিক দলগুলির টাকা ঢালার বিষয়টি এ ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে এ ক্ষেত্রে। প্রার্থী কত টাকা নির্বাচনে খরচ করতে পারবে, তা আইন করে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার রাজনৈতিক দল কত খরচ করতে পারবে তার কোনও সীমা পরিসামী নেই। বিষয়টি একেবারেই অর্থহীন।”পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, “মানুষ ভাবেন নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র। এটা ভুল ধারণা। নির্বাচন গণতন্ত্রের একটি অংশমাত্র। যাঁরা ভোটে লড়েন তার ৪৫ শতাংশের হলফনামাতেই বলাহচ্ছে যে তাঁদের নামে ফৌজদারি মামলা ঝুলছে!”
প্রসঙ্গত গত বছর ভারতে লোকসভা ভোটের সঙ্গে চারটি বিধানসভা নির্বাচনে সব দলের মোট খরচ, এক লক্ষ কোটি টাকার অনেক বেশি। সবাইকে পিছনে ফেলেছে বিজেপি। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ১৭৩৭ কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে পদ্ম শিবির। এর মধ্যে ১,৪৯২ কোটি টাকার বেশি বিজেপি ব্যয় করেছে দলকেন্দ্রিক প্রচারের জন্য। প্রায় ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে প্রার্থীদের জন্য।
নির্বাচন কমিশনে পেশ করা হিসেব অনুযায়ী, ২০১৯ সালের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বিজেপির নির্বাচনী খরচ। অন্য দিকে, নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, লোকসভা ভোটে তৃণমূলের খরচ প্রায় ১৪৭ কোটি টাকা। ৪৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে তারকা প্রার্থীদের প্রচারে। ৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে প্রার্থীদের জন্য। ১১ কোটি টাকা খরচ হয়েছে ব্যানার, পোস্টার দিতে। প্রায় সাত কোটি খরচ হয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)