Advertisement
E-Paper

চায়ের পরে ভোটে এ বার গরম পকোড়া

দেশে কত রোজগার বাড়ছে, তা বোঝাতে ক’দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পকোড়া বেচে ২০০ টাকা কামানোও কী রোজগার নয়?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২১
পি চিদম্বরম।

পি চিদম্বরম।

গত বার ছিল চা বিক্রির ধুম। কারণ, নরেন্দ্র মোদী এক সময়ে চা বেচতেন। ২০১৯-এর ভোটে গরমাগরম প্রসঙ্গ হতে পারে পকোড়া!

দেশে কত রোজগার বাড়ছে, তা বোঝাতে ক’দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পকোড়া বেচে ২০০ টাকা কামানোও কী রোজগার নয়?

বাজেট অধিবেশনের এক দিন আগে মোদীর ওই ‘রোজগার-মডেল’ নিয়ে বাঁকা প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই সরকার রোজগার নিয়ে দিশাহীন। পকোড়া বিক্রি করাকেই যদি প্রধানমন্ত্রী চাকরি বলেন, ভিক্ষাও তবে চাকরি!’’

লোকসভা ভোটের আগে ১ ফেব্রুয়ারি শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করতে চলেছে মোদী সরকার। কিন্তু সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরুর মুখেই প্রধানমন্ত্রীর ‘পকোড়া-তত্ত্ব’ নিয়ে অস্বস্তি বাড়তে দেখে আসরে নেমেছে বিজেপি। গোটা ঘটনার রাজনৈতিক মোড় দিতে বিজেপির পাল্টা তোপ, গরিবদের অপমান করেছেন চিদম্বরম। ‘চাওয়ালা’ বলে অপমান করে ২০১৪ সালে হেরেছে কংগ্রেস। এ বারে ‘পকোড়া’র জবাব ২০১৯ সালে দেবে জনতা। ভোট-বাজারে এ বারে চায়ের সঙ্গে ‘পকোড়া’র স্টলও লাগানোর কথা ভাবছে বিজেপি।

আসলে সরকারের সাড়ে তিন বছর পেরোনোর পর পর্যাপ্ত রোজগার দিতে না পারার অসন্তোষ যে বাড়ছে, তা বুঝতে পারছেন খোদ মোদীও। অথচ সরকারে এলে বছরে দু’কোটি রোজগারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। রোজগার নিয়ে নিরন্তর বিঁধছেন রাহুল গাঁধীরা। এই অবস্থায় রোজগারের ছবি মেলে ধরতে নানা দিকে হাতড়ে পরিসংখ্যান দেখাতে হচ্ছে সরকারকে। কারণ, বেসরকারি বিনিয়োগ, রফতানি, চাহিদা বাড়ছে না। ইপিএফের সদস্যের সংখ্যা কমছে। অথচ সেই সংখ্যা দেখিয়েই মোদী ‘নতুন’ রোজগারের দাবি করছেন।

এই তারতম্যের ছবিটি তুলে ধরেই চিদম্বরম বলেছেন, ‘‘বাস্তব ঘটনা হল, তিন বছর ধরে কর্মহীনতা বাড়ছে। রোজগারের পথ দেখানোর প্রশ্নে সরকার দিশাহীন।’’ প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর মতে, ‘চাকরি’ ও ‘স্বরোজগার’ এক নয়। ‘চাকরি’ নিশ্চিত, নিয়মিত, অনেকটাই নিরাপদ। সরকার দাবি করেছে, মুদ্রা যোজনায় গড়ে ৪৩ হাজার টাকা ঋণ পেয়ে সেই ব্যক্তি কমপক্ষে বাড়তি এক জনের রোজগারের ব্যবস্থা করেছেন।

চিদম্বরমের প্রশ্ন, ‘‘আমাকে এক জন ব্যক্তি দেখিয়ে দিন, যিনি ৪৩ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে অন্য কাউকে চাকরি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পকোড়া বেচাও চাকরি, তা হলে তো ভিক্ষাও তাই। যে গরিব, প্রতিবন্ধী ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদেরও চাকরিজীবী বলা হোক।’’ এক মন্ত্রী একশো দিনের কাজকেও চাকরি বলছেন।
এ কথা উল্লেখ করে চিদম্বরম মনে করিয়ে দিয়েছেন, ওই প্রকল্পে বছরে একশো দিন কাজ থাকে, বাকি ২৬৫ দিন থাকে না।

সরকারের এই বেগের জায়গাটিতে আজ সর্বদল বৈঠকেও ঘা দিয়েছে বিরোধীরা। বাজেটের আগে প্রধানমন্ত্রীর সামনেই বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। বিরোধীরা একযোগে দাবি তুলেছে, বেরোজগারি নিয়ে সংসদে আলোচনা চাই। বিজেপির শঙ্কা, রোজগার বাড়াতে বাজেটে দাওয়াই দেওয়া হলেও বিরোধীরা সন্তুষ্ট হবে না। সে কারণে আপাতত ‘পকোড়া’ নিয়েই রাজনীতির মোড় ঘোরাতে তৎপর শাসক দল। আশা, ভোটে এ বার ঝড় তুলবে ‘পকোড়ে পে চর্চা’!

Narendra Modi P Chidambaram BJP Job Pakoda নরেন্দ্র মোদী পি চিদম্বরম
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy