২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তান থেকে ভারতে আমদানি অনেকটাই কমে গিয়েছিল। সদ্য পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ভারত অটারী সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় তাতে আরও ধস নামে। তবে এর পরেও পাকিস্তান থেকে ভারতে পণ্য পাঠানোর কিছু ফাঁকফোকর থেকে গিয়েছিল। বিশেষ করে ঘুরপথে বিভিন্ন দেশ হয়ে পাকিস্তানি পণ্য ভারতে প্রবেশ করার সুযোগ ছিল। উদ্ভূত দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনার মাঝে সেই পথটুকুও বন্ধ করে দিতে চাইছে ভারত সরকার। বাণিজ্যমহলের একাংশের অনুমান, সম্ভবত সেই কারণেই পাকিস্তানে তৈরি পণ্য সরাসরি বা ঘুরপথে আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আধিকারিক সূত্রে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া এবং শ্রীলঙ্কা হয়ে বিভিন্ন পাকিস্তানি পণ্য ভারতে প্রবেশ করত। সংবাদমাধ্যম ‘মানি কন্ট্রোল’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তানের ফল, শুকনো খেজুর, চর্মজাত দ্রব্য এবং বস্ত্র ভারতে পাঠানোর আগে যায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। সেখানে এই পণ্যগুলির মোড়ক বদল করে তার পরে ভারতে পাঠানো হত। একই রকম ভাবে সিঙ্গাপুর হয়ে ভারতে আসত পাকিস্তানের তৈরি রাসায়নিক পণ্য। পাকিস্তানের সিমেন্ট এবং বস্ত্রশিল্পের কাঁচামাল ভারতে পাঠানো হত ইন্দোনেশিয়া হয়ে। অনুমান করা হয়, পাকিস্তানের শুকনো ফল, নুন, চর্মজাত দ্রব্য শ্রীলঙ্কা হয়ে প্রবেশ করত ভারতীয় বাজারে। প্রতিবেদন অনুসারে, এই ভাবে ঘুরপথে প্রায় ৫০ কোটি ডলারের পাকিস্তানি পণ্য ভারতীয় বাজারে প্রবেশ করত। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে সেই পথও বন্ধ হয়ে গেল পাকিস্তানি পণ্যের জন্য।
আরও পড়ুন:
পিটিআইকে এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, কোনও পণ্য কোন দেশে তৈরি হয়েছে, সেই সংক্রান্ত তথ্যে কারসাজি করে যাতে ভারতীয় বাজারে পাকিস্তানি পণ্য প্রবেশ না-করে, তা নিশ্চিত করতেই এই নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। ঘুরপথে পাকিস্তানি পণ্যের এ দেশে আটকানো ঠেকাতে এই নিষেধাজ্ঞা যথেষ্ট কার্যকর হবে বলেও মনে করছেন তিনি। বস্তুত, পুলওয়ামা হামলার পরে ফল, সিমেন্ট, পেট্রোপণ্য, আকরিক-সহ পাকিস্তান থেকে আসা বেশ কিছু পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছিল ভারত। যার জেরে পাকিস্তানি পণ্য এ দেশে সরাসরি রফতানি অনেকটাই কমে গিয়েছিল। সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, গত ২৪ এপ্রিল পঞ্জাবের অটারী সীমান্ত বন্ধের ফলে প্রভাব পড়ে প্রায় ৩,৮৮৬ কোটি টাকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে। তার পরেও শুকনো ফল এবং রাসায়নিক-সহ বেশ কিছু পণ্য পাকিস্তান থেকে ঘুরপথে এ দেশে আসার পথ খোলা ছিল। এ বার সেটিও বন্ধ করে দিল ভারত।