Advertisement
E-Paper

মমতার পাশে বিজয়ন, অস্বস্তির প্রশ্ন সিপিএমে

বাংলায় গণতন্ত্র হত্যার অভিযোগে তারা সরব। সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে গণতন্ত্রকে ফের ভূলুণ্ঠিত করার অভিযোগে যাঁর দলের দিকে তারা আঙুল তুলেছে, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একজোট হয়েই দিল্লিতে সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষার দাবিতে দরবার করছেন পিনারাই বিজয়ন।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৮ ০৪:১৯
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বাংলায় গণতন্ত্র হত্যার অভিযোগে তারা সরব। সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে গণতন্ত্রকে ফের ভূলুণ্ঠিত করার অভিযোগে যাঁর দলের দিকে তারা আঙুল তুলেছে, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একজোট হয়েই দিল্লিতে সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষার দাবিতে দরবার করছেন পিনারাই বিজয়ন। একমাত্র বাম-শাসিত রাজ্য কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপে প্রশ্ন উঠেছে সিপিএমের অন্দরেই। বিশেষত, বাংলার নেতা-কর্মীদের বড় অংশ মমতা-বিজয়নকে একসঙ্গে বৈঠক করতে দেখে লোকসভা নির্বাচনের আগে আরও এক প্রস্ত বিভ্রান্তির আশঙ্কা করছেন! বিতর্ক সামাল দিতে আসরে নামতে হয়েছে দলের স্বয়ং সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে।

নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন বাংলা, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক ও কেরলের চার মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লির উপরাজ্যপাল (লেফটেন্যান্ট গভর্নর) অনিল বৈজলের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে শনিবার চিঠি দিয়েছেন চার মুখ্যমন্ত্রী আলোচনা করেই। নীতি আয়োগের বৈঠকের অবসরে রবিবার মমতা, বিজয়ন, চন্দ্রবাবু নায়ডু এবং এইচ ডি কুমারস্বামী একযোগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কাছে আবেদন জানিয়েছেন দিল্লির সঙ্কট নিরসনের। সামগ্রিক ভাবে এই ঘটনাকে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে ফেডারেল ফ্রন্ট জোরদার হওয়ার ইঙ্গিত হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কিন্তু বাংলায় সিপিএম ও তৃণমূল যে হেতু পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী, তাই বামেদের মধ্যে বিভ্রান্তি বেড়েছে। আবার বিজেপিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু করেছে, বাংলায় গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সিপিএমের লড়াই নেহাতই ‘দ্বিচারিতা’!

মমতা বলেছেন, ‘‘দিল্লি দেশের রাজধানী। সেখানকার সরকারকে যদি অকেজো করে দেওয়া হয়, তার চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক কিছু হয় না। এই জন্যই প্রতিবাদ করছি আমরা।’’ এই প্রতিবাদে তিনি কোনও দলের বাছ-বিচার করছেন না বলে তৃণমূল নেত্রীর ব্যাখ্যা। আবার বিজয়নেরও বক্তব্য, ‘‘সংবিধান ও গণতন্ত্রের সব শর্ত লঙ্ঘন করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। বিজেপির এই কার্যকলাপের বিরুদ্ধেই যেখানে যেখানে সম্ভব, প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’

কেজরীবালের ধর্নায় আগেই সমর্থন দিয়েছে সিপিএম। দলের পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট দু’বার সেখানে গিয়েছেন। কিন্তু মমতার পাশে গিয়ে বিজয়ন তাঁদের অস্বস্তিতে ফেলেছেন বলে বঙ্গ সিপিএমের নেতা-কর্মীদের অনেকেই মনে করছেন। দলের এক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের কথায়, ‘‘মমতা যখন বিরোধী ছিলেন, বাংলায় বাম সরকার বা সিপিএমের সঙ্গে কোনও মঞ্চে যেতেন না। সিপিএমের সঙ্গে তাঁর যে কোনও আপস নেই, এই বার্তা যাতে কোনও ভাবে লঘু না হয়ে যায়, সে দিকে সতর্ক থাকতেন। কিন্তু আমরা নিজেরাই প্রশ্ন ও বিভ্রান্তির সুযোগ তৈরি করছি!’’

বিতর্ক সামাল দিতে ইয়েচুরি ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, ‘‘কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের বিন্যাস নষ্ট করে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দুর্বল করছে বিজেপি। একের পর এক রাজ্যে রাজ্যপালের দফতরকে তারা ব্যবহার করছে। এই প্রবণতা বন্ধ না হলে সব অ-বিজেপি সরকারেরই বিপদ। তাই প্রতিবাদ।’’ ইয়েচুরি নিজেও এ দিন দিল্লিতে আপ-এর মিছিলে সামিল হয়েছেন। তবে তাঁর ব্যাখ্যার পরেও এই সপ্তাহে কেন্দ্রীয় কমিটির আসন্ন বৈঠকে প্রশ্ন তুলতে চান নেতাদের একাংশ।

Mamata Banerjee Pinarayi Vijayan TMC CPIM মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পিনারাই বিজয়ন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy