ভারতীয় রেলের গতি বাড়াতে আসছে গতিমান এক্সপ্রেস।
দু’শো কিলোমিটার গতিতে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে প্রস্তুত হচ্ছে এই এক্সপ্রেস ট্রেন। সঙ্গে আসছে মানানসই কামরা। দূরপাল্লার ট্রেনে খোলা দরজায় ঝুলে হাওয়া খাওয়া বা দরজায় দাঁড়িয়ে সিগারেটে সুখ টান দেওয়ার দিন শেষ। মেট্রোর মতো এই ট্রেনের কামরাগুলিও স্বয়ংক্রিয়। স্টেশন এলে, একমাত্র চালকের নির্দেশেই খুলবে দরজা। কামরার ভিতরে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে বাড়তি জায়গা থাকবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই রেলের কাপুরথালার কোচ ফ্যাক্টারিতে প্রোটো-টাইপ কামরা তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেই কামরাকে প্রাথমিক ভাবে ছাড়পত্র দিয়েছে কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটিও। ইতিমধ্যেই দিল্লি-চণ্ডীগড় ও দিল্লি-আগ্রা লাইনে পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হয়েছে এই ট্রেন। আসন্ন বাজেটে অন্তত এক ডজন ‘গতিমান এক্সপ্রেস’ চালানোর কথা ভাবছে মন্ত্রক। বর্তমান লাইন ও সিগন্যালিং ব্যবস্থাকে ব্যবহার করেই গতিমান এক্সপ্রেস দিল্লি থেকে মুম্বই বা কলকাতা পৌঁছে যাবে অর্ধেকের সামান্য কিছু বেশি সময়ে। অবশ্যই এই ট্রেনের ভাড়াও অনেক বেশি হবে।
এ বারও বাজেটে নতুন ট্রেনের ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই পরিষেবা ক্ষেত্রে কিছু চমক দেওয়ার কথা ভাবছেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। সূত্রের খবর, আরও বেশি দূরপাল্লার ট্রেন ও স্টেশনে ওয়াই ফাই পরিষেবা বসাচ্ছে রেল। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে জলের এটিএম বসানোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত ঘোষণা হতে পারে। দেশের যে ৪০০টি স্টেশনকে আধুনিক করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ভবিষ্যতে সেগুলিকে পরিবেশবান্ধব স্টেশন হিসাবে গড়ে তোলার কথা বলা হতে পারে।
নতুন ট্রেন সে অর্থে না থাকলেও, শহরতলিতে এ বার বাতানুকূল ট্রেন চালানোর বিষয়ে ভাবছে রেল। সূত্রের খবর, সমীক্ষা বলছে— অনেক রেলযাত্রী বাতানুকূল ট্রেনের জন্য বেশি ভাড়া গুনতেও রাজি। প্রথমে মুম্বইয়ে পাইলট প্রকল্প হিসাবে কয়েকটি বাতানুকূল ট্রেন চালু করে পরে তা কলকাতা ও চেন্নাইয়ে চালু করা হবে। রেল সূত্রের খবর, যাত্রী নিরাপত্তার ফাঁক ভরাতে জাপানের সঙ্গে হাত মেলাতে চলেছে ভারত। বিস্তারিত পরিকল্পনা রেল এখনই খোলসা করতে না চাইলেও, সূত্রের খবর, সিগন্যালিং ও ইন্টারলকিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে জাপানি প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। রেলের এক কর্তা জানান, ‘‘আগামী দিনে দু’শো কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি গতিতে ছোটা ট্রেনের সঙ্গে পাল্লা দিতে পাল্টানো হচ্ছে সিগন্যালিং ব্যবস্থা।’’ এ ছাড়া উন্নত মানের ব্রেকিং সিস্টেম, কামরায় আগুননিরোধক পদার্থ ব্যবহারেও জোর দেওয়া হচ্ছে। সুরেশ প্রভুর কথায়, ‘‘জাপানে বুলেট ট্রেনের মতো গতিসম্পন্ন ট্রেন চললেও, দুর্ঘটনা খুব কম ঘটে। তাই সুরক্ষা প্রশ্নে জাপানের সঙ্গে হাত মেলানোর কথা ভাবছে রেল।’’