ভারতীয় বায়ুসেনার পরে এ বার স্থলসেনার জন্য আরও মার্কিন ঘাতক হেলিকপ্টার ‘অ্যাপাচে এএইচ ৬৪ই’ আসতে চলেছে। সেই সঙ্গে নৌসেনার জন্য আসছে আরও ডুবোজাহাজ-বিধ্বংসী হেলিকপ্টার ‘এসএইচ-৬০ আর সি হক’। সেটিরও নির্মাতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ। চলতি মাসেই কপ্টারগুলি ভারতে আসবে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে।
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত হওয়া চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য ২২টি অ্যাপাচে ‘অ্যাডভান্সড অ্যাটাক হেলিকপ্টার’ কেনা হয়েছিল। এর পরে ২০২০ সালে আর্মি অ্যাভিয়েশন কোরের (স্থলসেনার বিমান শাখা) জন্য ছ’টি অ্যাপাচে কেনার চুক্তি হয়। গত বছরের এপ্রিলে পাওয়ার কথা থাকলেও ট্রাম্পের দেশ থেকে চলতি বছরের জুলাইয়ে তিনটি কপ্টার এসেছিল। এ বার আসতে চলেছে বাকি তিনটি।
আরও পড়ুন:
সেনা সূত্রের খবর, ‘অ্যাপাচে এএইচ-৬৪ই’ হেলিকপ্টারের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২৮৪ কিলোমিটার। লেজ়ার-চালিত হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র, ৭০ মিলিমিটার রকেট, ৩০ মিলিমিটার স্বয়ংক্রিয় কামান (অটোক্যানন) রয়েছে এই কপ্টারে। প্রয়োজনে মিনিটে ২৮০০ ফুট উচ্চতায় উঠে যেতে পারে আমেরিকায় তৈরি এই যুদ্ধ-কপ্টার। ভারতের পাশাপাশি আমেরিকা ও ইজ়রায়েলের বায়ুসেনা ওই হেলিকপ্টার ব্যবহার করে। এই কপ্টারের ডিজিটাল ককপিট রয়েছে। শত্রুপক্ষকে নিশানা করে অ্যাপাচে মিনিটে ১২৮টি নিশানায় গুলি ছুড়তে পারে। এতে হাইড্রো রকেট ছোড়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। এয়ার-টু-এয়ার স্ট্রিংগার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তেও সক্ষম অ্যাপাচে।
অন্য দিকে, আমেরিকার সংস্থা সিকরস্তির তৈরি ‘এসএইচ-৬০ আর সি হক’ চপার কেনার বিষয়ে চুক্তিও হয়েছিল ২০২০ সালে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভারত সফরের সময়। ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ২৪টি মার্কিন ‘এমএইচ-৬০আর’ হেলিকপ্টার’ কিনতে খরচ হবে ২৬০ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রায় ২১ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা। ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী টর্পোডোর পাশাপাশি ‘ম্যাকাব্রে হেলফায়ার আরএনএক্স’ ক্ষেপণাস্ত্রও ব্যবহার করা যায় সিকরস্কি ব্ল্যাক হক কপ্টারের নৌ সংস্করণ সি হক থেকে। সেই ‘ওয়ারহেড-লেস মিসাইল’-ও ভারতীয় নৌসেনাকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পেন্টাগন। আল কায়দা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরি এবং ইরানের জেনারেল কাশেম সোলেমানিকে হত্যা করতে আমেরিকা সেনা ব্যবহার করেছিল এই ক্ষেপণাস্ত্র। ‘নিনজা বোমা’ নামে পরিচিত এই ক্ষেপণাস্ত্রের বৈশিষ্ট্য হল লক্ষ্যবস্তুকে টুকরো টুকরো করে ফেলবে, কিন্তু জোরালো কোনও বিস্ফোরণ হবে না। ক্ষতি হবে না ‘মূল লক্ষ্যের’ আশপাশের বাড়িঘর এবং মানুষজনের।