—ফাইল চিত্র।
প্রথম বার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ডেকে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অচিরেই তার দাম দিতে হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে কোনও চমক না-দিলে, দ্বিতীয় ইনিংসে একই সিদ্ধান্তের পুনরাবৃত্তি করার কোনও সুযোগ তাঁর সামনে নেই বলেই মনে করছেন কূটনীতির বিশেষজ্ঞেরা। পাকিস্তানকে এড়িয়ে এ বারের শপথে বিমস্টেক দেশগুলির নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কৌশলী মোদী।
ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে গোটা দেশে প্রচার করেছেন মোদী। জিতে আসার পরই পাক রাষ্ট্রনেতাকে নিমন্ত্রণ করলে মোদীর জাতীয়তাবাদের তত্ত্ব লঘু হয়ে যাবে। তাই শপথে না ডেকে দেশীয় রাজনীতিতে বার্তা দিলেন মোদী। যদিও আগামী মাসে কিরঘিজস্তানে এসসিও সম্মেলনে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে দেখা হবে তাঁর। সেখানে দু’জনের বৈঠকের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি চলছে সাউথ ব্লকে।
বিদেশ মন্ত্রক আজ বিবৃতিতে জানিয়েছে, শপথের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য বিমস্টেক-এর নেতারা ছাড়াও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কিরঘিজস্তানের প্রেসিডেন্ট এবং মরিশাসের প্রধানমন্ত্রীকে। শপথের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। রবিবার বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ সফরে যাওয়ায় মন্ত্রিসভার প্রবীণতম সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আসবেন। হাসিনা আজ ঢাকায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পরে রাষ্ট্রপতিভবন থেকে জানানো হয়, হামিদই তিন দিনের সফরে দিল্লি আসছেন। সূত্রের খবর, মায়ানমারের প্রধানমন্ত্রী আউঙ সান সু চি নন, আসবেন প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ত্। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার আসার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। আফগানিস্তানকেও আমন্ত্রণ জানানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, গত পাঁচ বছরে বিদেশনীতির প্রশ্নে মোদী অভিজ্ঞ ও কিছুটা পরিণত হয়ে উঠেছেন। এ বারের অতিথি তালিকা তৈরি করেছেন অনেক চিন্তাভাবনা করে। এবং একসঙ্গে একাধিক বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
এক, বিমস্টেক গোষ্ঠীতে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, তাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটান। বিমস্টেক নেতাদের ডাকার ফলে পাকিস্তানকে বাদ দিয়ে সার্ক-এর বাকি দেশগুলিকে একসঙ্গে রাখা গেল। আবার চিনকে ডাকার দায়ও রইল না। কারণ চিন বিমস্টেক-এ নেই।
দুই, পূর্বে তাকাও এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া— প্রধানমন্ত্রী মোদীর দু’টি ঘোষিত এবং বহু বিজ্ঞাপিত বিদেশনীতি তাঁর দ্বিতীয় ইনিংসেও বজায় থাকবে, এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হল।
তিন, মরিশাসকে আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রবাসী ভারতীয়দের প্রতি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
চার, তাইল্যান্ড, মায়ানমারের মতো দেশের প্রধানকে ডেকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারত যে সক্রিয় নীতি নিয়ে চলবে তার পূর্বাভাসও দেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy