নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই ‘পলাতক’ তিনি। পুলিশ তাঁর খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। এমনকি, লুকআউট নোটিসও জারি করা হয়েছে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর প্রথম অগ্নিকাণ্ডে দুঃখপ্রকাশ করে মুখ খুললেন গোয়ার সেই নৈশক্লাবের মালিক সৌরভ লুথরা। তাঁর নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন তিনি। আহতদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
সোমবার গোপন আস্তানা থেকে নিজের সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেন সৌরভ। সেই পোস্টে তিনি জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর ভাবে শোকাহত এবং মর্মাহত। ক্ষতিগ্রস্তদের ‘সকল প্রকার সহায়তা এবং সহযোগিতার’ আশ্বাস দেন সৌরভ।
শনিবার মধ্যরাতের পর গোয়ার ওই নৈশক্লাবের রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণ থেকে দ্রুত গতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই অগ্নিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২০ জনই ছিলেন ক্লাবের কর্মী। মৃতদের অধিকাংশ রান্নাঘরে আটকে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বেশির ভাগের। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন অসমের তিন জন। তাঁরা কর্মসূত্রেই গোয়ায় থাকতেন। কাজ করতেন ওই নৈশক্লাবে। অসমে কাজের অভাব থাকায় সংসার চালাতে গোয়ায় যেতে হয়েছিল তাঁদের, দাবি পরিবারের।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রবিবারই নৈশক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মালিকের বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলেও ঘটনার পর থেকেই তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি।
আরও পড়ুন:
নৈশক্লাব কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাপনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। ওই ক্লাবে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না বলে দাবি তদন্তকারীদের। দমকলের ছাড়পত্র ছাড়াই ওই নৈশক্লাব চলছিল বলেও অভিযোগ। সিলিন্ডার ফেটে বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান হলেও প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মঞ্চে তখন চলছিল ‘শোলে’ ছবির ‘মেহবুবা ও মেহবুবা’ গান। গানের তালে তালে নাচছিলেন কাজ়াখস্তানের নর্তকী। আসর যখন বেশ জমে উঠেছে, তখনই আচমকা মঞ্চের পিছনে আগুনের হলকা নজরে আসে দর্শকদের। সঙ্গে ধোঁয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মঞ্চে শিল্পীরা যখন নাচছিলেন, তখন ক্লাবেরই কয়েক জন কর্মকর্তা আতশবাজি পোড়ান। আর সেই আতশবাজির ফুলকি হোটেলের অন্দরসজ্জার সংস্পর্শে আসে। যেগুলি মূলত, তালপাতা, বাঁশ, ফাইবার এবং ঘাসের মতো জিনিস দিয়ে সাজানো হয়েছিল। সিলিংয়ে আগুন ধরে যায় প্রথমে। কয়েক মিনিটের মধ্যে সেই আগুন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। তবে প্রকৃত কারণ কী, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।