Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Economy

অর্থনীতিতে আশা দেখছে সরকার

লকডাউনের ধাক্কায় চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাস, এপ্রিল-জুনে জিডিপি-র প্রায় ২৪ শতাংশ সঙ্কোচন হয়েছিল।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৪১
Share: Save:

অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে দাবি করলেও মোদী সরকারের অর্থ মন্ত্রকের আশঙ্কা ছিল, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ ফের সব ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আজ কিন্তু অর্থ মন্ত্রক দাবি করল, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ এলেও এপ্রিল-জুন মাসের মতো দেশের অর্থনীতি ফের তলানিতে গিয়ে ঠেকবে না। কারণ কোভিডের টিকা তৈরির পথে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। অর্থনীতির যে সব ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ অনেক বেশি, সেই সব ক্ষেত্রেও এখন আরও বেশি করে অনলাইনে কাজ হচ্ছে।

লকডাউনের ধাক্কায় চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাস, এপ্রিল-জুনে জিডিপি-র প্রায় ২৪ শতাংশ সঙ্কোচন হয়েছিল। পরের তিন মাস, জুলাই-সেপ্টেম্বরেও সঙ্কোচন অব্যাহত। যে কারণে মন্দা দেখা দিয়েছে। তবে সঙ্কোচনের মাত্রা ৭.৫ শতাংশে কমে এসেছে। অর্থ মন্ত্রকের যুক্তি, এপ্রিল-জুনের তুলনায় জুলাই-সেপ্টেম্বরে জিডিপি ২৩ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ, লকডাউনের জেরে অর্থনীতি যে ভাবে খাদে গিয়ে ঠেকেছিল, লকডাউন উঠতেই তেমন দ্রুত গতিতে অর্থনীতির উত্থান হয়েছে। ইংরেজির ‘ভি’-এর মতো আর্থিক বৃদ্ধির রেখচিত্র দেখিয়ে আজ অর্থ মন্ত্রক মাসিক আর্থিক রিপোর্টে দাবি করেছে, অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে অর্থনীতিতে আশার আলো দেখা যাচ্ছে।

মন্ত্রকের দাবি, দেশের অর্থনীতির ভিত যে যথেষ্ট মজবুত, এটাই তার প্রমাণ। লকডাউনের ফলে যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাওয়াতেই এপ্রিল-জুনে জিডিপি-র ২৪ শতাংশ সঙ্কোচন হয়েছিল। অর্থনীতির ভিত বা কাঠামোয় কোনও সমস্যা ছিল না।

অর্থনীতিবিদরা অবশ্য এতখানি আশাবাদী নন। তাঁদের আশঙ্কা, অক্টোবর-ডিসেম্বরে জিডিপি-র ছবি আরও খারাপ হতে পারে। কারণ উৎসবের মরসুমে বেশি বিক্রিবাটা হবে বলে লকডাউনের পরে জুলাই মাস থেকে কারখানায় বাড়তি উৎপাদন হয়েছে। উৎসবের মরসুম কেটে গেলে কারখানার উৎপাদন কমতে পারে। জিডিপি-তে তার ছাপ পড়তে পারে।

নির্মলা সীতারামনের অর্থ মন্ত্রকের পাল্টা যুক্তি, দীপাবলির আগে তৃতীয় দফার আত্মনির্ভর প্যাকেজে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে দাওয়াই দেওয়া হয়েছে। লকডাউনের সময় হারানো চাকরি ফিরিয়ে আনতে এবং নতুন চাকরি তৈরিতেও পদক্ষেপ করা হয়েছে। ফলে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়েই ভারতের অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়ানোর পথে।

একাধিক অর্থনীতিবিদ দাবি তুলেছিলেন, উৎসবের মরসুমের পরেই বাজারে বিক্রি কমে যাবে। তা ধরে রাখতে হলে মানুষের হাতে নগদ টাকা তুলে দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু মোদী সরকার কোষাগার থেকে টাকা ঢালতে নারাজ। সরকারি কোষাগারে অর্থের টানই এর প্রধান কারণ বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। আজ অর্থ মন্ত্রকের রিপোর্টে কোষাগারের সেই হাঁড়ির হালের ছবি কিন্তু স্পষ্ট। ২২ নভেম্বর পর্যন্ত হিসেবে কেন্দ্রকে ৯.০৫ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিতে হয়েছে। যা গত বছরের এই সময়কালে ঋণের তুলনায় ৬৮ শতাংশ বেশি। গোটা অর্থ বছরে ১২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ করতে হবে সরকারকে। উল্টো দিকে কর বাবদ আয় প্রায় ১৭ শতাংশ কমেছে। উৎপাদন শুল্ক বাদে, আয়কর, কর্পোরেট কর, জিএসটি সবেতেই ভাটার টান। কর ছাড়া অন্যান্য আয় এপ্রিল-অক্টোবরে গত বছরের তুলনায় প্রায় ৪৮ শতাংশ কমেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Economy Nirmala Sitharaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE