Advertisement
E-Paper

ভিতরে অল্পেশ-জিগনেশ, বাইরে হার্দিক, জোড়া ফলা বিঁধবে রূপাণীকে

বিধানসভার ভিতরে-বাইরে যে নতুন করে দ্বিমুখী আক্রমণের মধ্যে পড়তে চলেছে বিজয় রূপাণীর নতুন সরকার, তা-ও এক রকম নিশ্চিত।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৫:০৫
হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকুর এবং জিগনেশ মেবাণী।

হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকুর এবং জিগনেশ মেবাণী।

জয় এসেছে। কিন্তু দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের ১৫০ আসন পাওয়ার পূর্ব ঘোষণার ধারে-কাছেও পৌঁছতে পারেনি বিজেপি। নিজের রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে রীতিমতো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে জমি ধরে রাখতে হয়েছে মোদীকে।

এ বারের গুজরাতের ফল বরং, কিছুটা হলেও অক্সিজেন জুগিয়েছে কংগ্রেসকে। গত বারের থেকে ১৬টি আসন বেশি পেয়ে অনেকটাই চনমনে রাহুল ব্রিগেড। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও তিনটি নাম। হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকুর, জিগনেশ মেবাণী।

তাই দলের তরফে প্রকাশ্যে রেকর্ডের কথা বলেও আগামী দিনে লড়াইটা যে খুব সহজ হবে না, আড়ালে তা মেনে নিচ্ছেন বিজেপির একাংশ। বিধানসভার ভিতরে-বাইরে যে নতুন করে দ্বিমুখী আক্রমণের মধ্যে পড়তে চলেছে বিজয় রূপাণীর নতুন সরকার, তা-ও এক রকম নিশ্চিত।

হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকুর ও জিগনেশ মেবাণী- গুজরাত-যুদ্ধে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে এই তিন মূর্তিই ‘তুরুপের তাস’ ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর। গুজরাতে বিজেপি-রাজের বিরুদ্ধে পাতিদার, ওবিসি ও দলিতদের আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছেন এই তিন তরুণ তুর্কি।

এঁদের মধ্যে অল্পেশ ঠাকুর এবং জিগনেশ মেবাণী দু’জনই ভোটে জিতেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিনে তাঁরা গুজরাত বিধানসভায় মোদী তথা বিজেপি-বিরোধী আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠতে চলেছেন।

হার্দিক পটেল অবশ্য ভোটে দাঁড়াননি। তবে তিনি যে ভোটের ফলাফলে দমে যাওয়ার পাত্র নন, সোমবারই তা বুঝিয়ে দিয়েছেন এই পাতিদার নেতা। আগামী দিনে আন্দোলন যে আরও তীব্র হবে, দিয়েছেন সেই হুঁশিয়ারিও।

আরও পড়ুন: গুজরাতে শেষ হাসি হাসলেন মোদী, অক্সিজেন পেলেন রাহুল

হার্দিক পটেল গুজরাতে পাতিদারদের জন্য সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলনের প্রধান মুখ। একই ভাবে ওবিসি-আন্দোলনের মুখ অল্পেশ ঠাকুর। যিনি ইতিমধ্যেই কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। জিগনেশ গুজরাতে দলিতদের উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের স্বর।

নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে রূপাণী। ফাইল চিত্র

কলেজের ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা হার্দিকের প্রথম কাজ ছিল গ্রামের বাসস্ট্যান্ডে পানীয় জলের বন্দোবস্ত করা। সেখান থেকেই ২০১৫-য় গুজরাত জুড়ে পাতিদার আন্দোলনের প্রধান নেতা হয়ে ওঠেন ২৩ বছরের এই তরুণ। তাঁর নেতৃত্বেই তৈরি হয় ‘পাতিদার অনামত আন্দোলন সমিতি’। এদের আন্দোলনের ধাক্কায় রীতিমতো কাঁপন ধরে শাসক বিজেপির অন্দরে।

এই ধরণের খবর সরাসরি আপনার ইনবক্সে পেতে ক্লিক করুন

অন্য দিকে পাতিদারদের বিরুদ্ধেই ওবিসি-দের পাল্টা লড়াইয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন অল্পেশ। শুরু করেছিলেন গুজরাত ক্ষত্রিয়-ঠাকুর সেনা দিয়ে। লক্ষ্য ছিল, ওই সম্প্রদায়ের তরুণদের মদের নেশা থেকে মুক্ত করা। কিন্তু রাজনীতির নিয়মে ও বিজেপির বিরোধিতা করতে গিয়ে হার্দিক ও অল্পেশ একই বিন্দুতে চলে এসেছেন।

আর জিগনেশের উত্থান হয়েছে মোদী জমানায় গোরক্ষক বাহিনীর বিরোধিতা করে। সৌরাষ্ট্রের উনায় গোরক্ষক বাহিনী দলিতদের উপর অত্যাচার চালায়। তার বিরুদ্ধে দলিত ‘অস্মিতা যাত্রা’র নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জিগনেশ। জীবন শুরু করেছিলেন পেশাদার সাংবাদিক হিসাবে। এই জিগনেশের নেতৃত্বেই দলিতরা মৃত গরুর চামড়া ছাড়ানোর পেশা ছেড়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।

গোটা সৌরাষ্ট্রেই বিজেপির দুর্গে ধস নামিয়েছেন হার্দিক। মধ্য গুজরাতে নিজেদের পুরনো আসন হারিয়েও হার্দিকের হাত ধরেই সৌরাষ্ট্র-কচ্ছে আসন বাড়িয়েছে কংগ্রেস। গুজরাতের মাঠে কংগ্রেস-বিজেপি যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে, তার অন্যতম কৃতিত্ব এই হার্দিক পটেলেরই।

গুজরাত নির্বাচন নিয়ে সব খবর পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

তাই জীবনের প্রথম নির্বাচনী লড়াইয়ে হারের ধুলো ঝেড়ে ফেলে হার্দিক বলছেন, ‘‘আমার তো কোনও রাজনৈতিক দলই নেই। কোনও দলের পদাধিকারীও ছিলাম না।’’ এও বলেছেন, তাঁর ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি— ‘‘ভোটের ফল যা-ই হোক, ভিতুর মতো ঘরে বসে থাকব না। গ্রামে গ্রামে ঘুরব। গুজরাতের ভোটাররা সচেতন হচ্ছেন। আরও সচেতন করতে হবে।’’

আর বিধানসভার ভিতর নতুন করে আন্দোলনের জন্য তৈরি হচ্ছেন অল্পেশ আর জিগনেশ।

Alpesh Thakore Hardik Patel Jignesh Mevani Rahul gandhi Gujarat Assembly Election 2017 Congress BJP Vijay Rupani Narendra Modi হার্দিক পটেল অল্পেশ ঠাকুর জিগনেশ মেবাণী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy