Advertisement
E-Paper

কঠিন সময়ে রূপাণীকে বাঁচাতে প্রচারে স্ত্রী-পুত্র

রুষভের বাবা, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী। ভোটে নিজের ঘরের মাঠ, পশ্চিম রাজকোট কেন্দ্রেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে তিনি। খোদ রাহুল গাঁধী বলছেন, ‘‘রূপাণীজির মনে ভোটে হারার ভয় ঢুকেছে।’’

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:০৯
ভোট-ভিক্ষা: বাবার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার রূপাণী-পুত্র রুষভের। রাজকোটে। —নিজস্ব চিত্র।

ভোট-ভিক্ষা: বাবার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার রূপাণী-পুত্র রুষভের। রাজকোটে। —নিজস্ব চিত্র।

সদ্য মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ রুষভের একটাই অনুরোধ। সকাল সকাল গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ভোটটা দিয়ে দেবেন।

রুষভের মা অঞ্জলিকে এত দিন রাজনীতির ধারে কাছে দেখা যেত না। তিনিও প্রচারে গিয়ে একই কথা বলছেন। কথা বলতে গিয়ে আবেগে কেঁদেও ফেলছেন।

রুষভের বাবা, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী। ভোটে নিজের ঘরের মাঠ, পশ্চিম রাজকোট কেন্দ্রেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে তিনি। খোদ রাহুল গাঁধী বলছেন, ‘‘রূপাণীজির মনে ভোটে হারার ভয় ঢুকেছে।’’

ভয় কেন? এমনিতেই হার্দিক পটেলের ভেল্কিতে পাতিদারদের ভোট কংগ্রেসের ঝুলিতে পড়বে বলে আশঙ্কা। হার্দিক নিজে রাজকোটে এসে ১ লক্ষ পাতিদারকে নিয়ে জনসভাও করে গিয়েছেন।

তার উপর পূর্ব রাজকোটের কংগ্রেসি বিধায়ক ইন্দ্রনীল রাজ্যগুরু নিজের কেন্দ্র ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লড়তে নেমেছেন। ‘মারি তো গন্ডার, লুটি তো ভাণ্ডার’-এ বিশ্বাসী ইন্দ্রনীল গুজরাতের সব থেকে ধনী প্রার্থী। ঘোষিত সম্পত্তিরই মূল্য ১৪১ কোটি টাকা। প্রচারে জমি ছাড়ছেন না। শনিবারই তাঁর ব্যানার ছেঁড়াকে নিয়ে কংগ্রেস-বিজেপির ধস্তাধস্তি হয়েছে। ভাই দীপ আহত হওয়ায় রূপাণীর বাড়ির সামনেই ধর্নায় বসেছেন। সারা রাত পুলিশের হেফাজতে থেকেও হাল ছাড়েননি।

রাহুল আজ টুইট করে বলেছেন, রূপাণী ভয় পেয়ে লাঠি ধরলেও গুজরাত তাতে ডরায় না। ইন্দ্রনীলের কটাক্ষ, ‘‘রূপাণী ভয় পেয়েছেন বলেই নরেন্দ্র মোদীকে তিন বার রাজকোটে আসতে হচ্ছে। আমার প্রশ্ন, রাজকোট থেকে বিজেপির তিন-তিনজন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। কেশুভাই পটেল, নরেন্দ্র মোদী, এখন রূপাণী। তার পরেও রাজকোট উন্নয়নে অমদাবাদ-সুরাত থেকে পিছিয়ে কেন?’’

চাপের মুখে তাই ত্রিমুখী কৌশল নিয়েছেন রূপাণী।

আরও পড়ুন: মুসলিম, খ্রিস্টানদের কাছে টানতে সরব মোদী

তিনি জানেন, মোদী-অমিত শাহর ক্যারিশ্মা তাঁর নেই। তিনি নিজে জৈন। কিন্তু তাঁর কেন্দ্রে জৈন ভোটারদের সংখ্যাও তেমন নয়। তার উপর লোকে তাঁকে অমিত শাহর ‘হাতের পুতুল’ বলেই ভাবে। তাই মানুষকে রাজকোট থেকে মুখ্যমন্ত্রী থাকার উপকারিতা বোঝাচ্ছেন।

হিন্দু ভাবাবেগে সুড়সুড়ি দিতেও ভুলছেন না রূপাণী। রাজ্যের গো-হত্যা নিষিদ্ধকরণ আইন আরও কড়া করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজার ব্যবস্থা করেছেন। তার ঢাক পেটানোও চলছে।

নিজেকে ‘রাজকোট কা বেটা’ বলে স্ত্রী-পুত্রকে মাঠে নামিয়েছেন রূপাণী। তাঁর প্রথম পুত্র মাত্র তিন বছর বয়সেই দুর্ঘটনায় মারা যায়। সেই পুত্রের নামেই রাজকোটে তাঁদের বাড়ির নাম ‘পুজিত’। শিশুপুত্রর মৃত্যুর পরে রাজনীতি প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন রূপাণী। স্ত্রী অঞ্জলিই তাঁকে বুঝিয়ে কাজে ফেরান। এ বার অঞ্জলি স্বামীকে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে ফেরানোর ভার নিয়েছেন। সঙ্গে পুত্র ঋুষভ। যাঁর হাতে বাবার প্রচারপত্র, মুখে অমিত শাহের মন্ত্র।

সকাল সকাল ভোট দিতে বলা কেন? রূপাণী-পুত্রের জবাব, ‘‘অমিতভাই বলে দিয়েছেন, বিজেপির নিজের ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে আমাদের ভোটারদের বেলা ১১টার মধ্যে বুথে হাজির করাতে হবে।’’

Gujarat Assembly Elections 2017 Vijay Rupani BJP chief minister Rushabh Rupani Anjali Rupani বিজয় রূপাণী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy