এ বার চিনা সামগ্রী বর্জনের ডাক দিলেন অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
আজ খানাপাড়ার অসম অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ স্টাফ কলেজে ২০১৪ সালের মানব উন্নয়ন রিপোর্ট ও অসম-২০৩০ নামে বর্তমান সরকার ভিশন ডকুমেন্ট প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ও হিমন্তবিশ্ব শর্মা। সেখানেই গ্রামীণ অর্থনীতি ও স্থানীয় ভাবে নির্মিত সামগ্রীর উন্নয়ন প্রসঙ্গে হিমন্ত বলেন, ‘‘সামনেই পুজো-দীপাবলি। সেখানে ব্যবহৃত কাপড়, আতসবাজি থেকে শুরু করে অনেক জিনিস চিনে তৈরি। স্থানীয় শিল্পীরা মার খাচ্ছেন। জনতাকে অনুরোধ পুজোয় চিনা জিনিস দেখলেই বর্জন করুন। দেশীয় জিনিস কিনুন।’’ সম্প্রতি হিন্দু যুব ছাত্র পরিষদও চিনা সামগ্রী বয়কটের ডাক দিয়েছিল। তার প্রতিবাদে আলফা স্বাধীন জানায়— ভারত নয় চিনই অসমের বন্ধু। তাই সস্তা চিনা সামগ্রীকে আপন করে নিতে হবে।
পাশাপাশি অসম চুক্তি ও নাগরিকত্ব প্রসঙ্গে হিমন্ত ফের এ দিন বলেন, ‘‘অসম চুক্তিতে মানবিকতা বলে কিছু থাকবে না- তেমন কোথাও লেখা নেই। মানবিকতা সব কিছুর উর্দ্ধে। আমি নিজে এত দিন অসম চুক্তি রূপায়ণমন্ত্রী ছিলাম। বিজেপি মানবিকতার স্বার্থেই প্রতিবেশী দেশে অত্যাচারিত হওয়া, প্রাণভয়ে পালানো হিন্দুদের আশ্রয় দেবে। কারণ ভারতই তাঁদের স্বাভাবিক আশ্রয়স্থল।’’
এ দিন ভিশন ডকুমেন্ট প্রকাশ করার পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী ও পরিবহণমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি গুয়াহাটি থেকে শিলচর ও আইজলগামী স্পাইসজেটের নতুন বিমান পরিষেবারও সূচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী বিমানসংস্থাগুলির কাছে অনুরোধ রাখেন, গুয়াহাটিকে যেন বিমান পরিষেবার হাব হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং স্থানীয় যুবকদের নিযুক্তি দেওয়া হয়।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ এ দিন ফের বিজেপি-অগপ-বিপিএফ জোট সরকারের সমালোচনা করে দাবি করেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি স্কুল-কলেজগুলি (ভেঞ্চার স্কুল-কলেজ) সরকারি সাহায্যের আওতায় আনলে সরকারের অতিরিক্ত অনেক টাকা লাগত। সেই অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে চাইছে না বলেই নতুন সরকার বিদ্যালয় প্রদেশিকীকরণ আইন বাতিল করার বিরুদ্ধে আবেদন না জানিয়ে, ওই আইনের বিরুদ্ধে আবেদনকারীদের পক্ষ নিয়েছে।
পাশাপাশি গগৈ এও জানিয়েছেন, চিন ব্রহ্মপুত্রের উপনদীর উপরে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ায় ব্রহ্মপুত্রে জলপ্রবাহ কমবে। অবিলম্বে এ নিয়ে পদক্ষেপ করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন।
এ দিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ আরও জানিয়েছেন, রিপোর্ট অনুযায়ী গত ১৫ বছরের কংগ্রেস শাসনে সব মিলিয়ে মাত্র ২৩ শতাংশ মানুষ সরকারের কাজে সন্তুষ্ট হয়েছেন। তা বদলাতে হবে। সরকারের প্রতিশ্রুতি মতো রাজ্যের সব গ্রামকে উন্নয়নের জন্য ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কাজ শীঘ্র শুরু হবে। আগামী দেড় দশকে মোট ১৭টি ক্ষেত্রে অসমকে উন্নত করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। আগামী ১০ বছরের মধ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে, কর্মসংস্কৃতি উন্নত করে, দুর্নীতি দূর করে মানুষের সন্তুষ্টির মাত্রা ৬০ শতাংশে নিয়ে যেতে চান মুখ্যমন্ত্রী।
হিমন্ত বলেন, ‘‘গত দশ বছরে সরকার অনেক খরচ করেছে ঠিকই, কিন্তু সেই টাকায় সুতো-কম্বল কিনে মানুষের কোনও লাভ হয়নি। স্থায়ী উন্নতির ব্যবস্থাও হয়নি। শুধু কয়েক জন মুনাফা লুটেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy