Advertisement
E-Paper

বিদ্রোহ শিকেয়, সারদা কাঁটায় বেসামাল হিমন্ত

দলের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের গদি কার্যত টলিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এ বার সারদা-মামলায় টালমাটাল তাঁরই রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ! তিনি অসমের প্রাক্তন স্বাস্থ্য ও শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। দলীয় সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগেও গগৈয়ের সঙ্গে সমানে-সমানে টক্কর দেওয়া সেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা এখন প্রদেশ কংগ্রেসে অনেকটাই কোণঠাসা। সারদা-তদন্তে তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জন সিবিআইয়ের নজরে রয়েছেন। আঙুল উঠছে হিমন্তের দিকেও। এ সবে তিনি আরও জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছেন।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৪

দলের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের গদি কার্যত টলিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এ বার সারদা-মামলায় টালমাটাল তাঁরই রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ!

তিনি অসমের প্রাক্তন স্বাস্থ্য ও শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। দলীয় সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগেও গগৈয়ের সঙ্গে সমানে-সমানে টক্কর দেওয়া সেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা এখন প্রদেশ কংগ্রেসে অনেকটাই কোণঠাসা। সারদা-তদন্তে তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জন সিবিআইয়ের নজরে রয়েছেন। আঙুল উঠছে হিমন্তের দিকেও। এ সবে তিনি আরও জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছেন।

শুধু হিমন্তই নন। কয়েক হাজার কোটি টাকার সারদা মামলার আঁচ পড়েছে অসমের রাজনীতিতেও। অভিযোগের তির ছুটেছে বিজেপি, আসু-র দিকেও।

বছর তিনেক ধরে মুখ্যমন্ত্রী গগৈয়ের অপসারণ চেয়ে সরব হয়েছিলেন হিমন্ত। দলের ৭৭ জন বিধায়কের মধ্যে ৫০ জন তাঁর শিবিরে যোগ দেন। মুখ্যমন্ত্রী পদে বদল শুধু সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু হিমন্তের ছক বানচাল হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী বদলানো হলেও, কোনও মতেই হিমন্তকে ওই পদে বসানো হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় এআইসিসি। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করেছিল, দলীয় বিদ্রোহে উস্কানি দিয়ে গদি দখল করতে চাওয়া হিমন্তকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে, তা অন্য রাজ্যের কংগ্রেস নেতা-বিধায়কদের কাছে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেবে। সুযোগ বুঝে দিল্লিতে গিয়ে সনিয়া গাঁধীর হাতে ইস্তফা তুলে দেন গগৈ। কিন্তু তাঁর কাঁধেই অসমে দলের ভাঙন মেরামতের দায়িত্ব দেন কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় হিমন্ত-পন্থী অর্ধেন্দু দে ও সিদ্দেক আহমেদকে। পদত্যাগে বাধ্য হন হিমন্ত।

কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে পাশে না-পেয়ে, আড়ালে গগৈ-বিরোধী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন হিমন্ত। কিন্তু, সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তাঁর ঘনিষ্ঠ শিল্পী সদানন্দ গগৈকে জেরার জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পর হিমন্ত বেকায়দায় পড়েন। প্রাক্তন ওই মন্ত্রীর দু’টি বাড়ি, তাঁর স্ত্রী রিনিকি ভুঁইঞা শর্মার মালিকানাধীন সংবাদমাধ্যমের দফতর এবং সেখানকার কর্তাদের বাড়িতেও হানা দেয় সিবিআই। হিমন্তকে অনেক টাকা দেওয়ার কথা তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন খোদ সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন। সিবিআই সূত্রের খবর, সদানন্দর কাছ থেকে সে কথার সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা চলছে। যে কোনও সময় তলব করা হতে পারে হিমন্তকেও। দু’দিন আগে তাঁর স্ত্রী রিনিকিদেবীর সংবাদমাধ্যমে কর্মরত এক সাংবাদিককে এনডিএফবি জঙ্গিদের সাহায্যের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। গগৈ শিবিরের দাবি, এই অবস্থায় হিমন্তর ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন।

তবে, ভেঙেও মচকাচ্ছেন না হিমন্ত। তিনি বলছেন, “সিবিআই আমাকেও জেরা করুক। তা হলে অনেকের মুখোশ খুলে দিতে পারব।’’ সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে টাকা পাওয়ার কথা উড়িয়ে তিনি উল্টে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা অর্থ ও স্বরাষ্ট্র দফতরের বিরুদ্ধেই ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলিকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

এর জবাবে গগৈ-পন্থী মন্ত্রী রকিবুল হুসেন বলেছেন, “যদি কারও হাতে গগৈয়ের বিরুদ্ধে সারদাকে সাহায্য করার প্রমাণ থাকে, তিনি তা সিবিআইয়ের কাছে জমা দিচ্ছেন না কেন?”

সারদা-মামলায় শুধুমাত্র প্রদেশ কংগ্রেসের বিদ্রোহী গোষ্ঠীই নয়, সমস্যায় পড়েছে বিজেপি ও আসু। সারদার আইনি উপদেষ্টা হিসেবে বিজেপির তেজপুরের সাংসদ রামপ্রসাদ শর্মার নাম পেয়েছে সিবিআই। অন্য দিকে, সারদা সংস্থার কাছ থেকে মোটা টাকা নেওয়ার কথা প্রকাশ্যে আসায়, অস্বস্তিতে পড়েছে ছাত্র সংগঠন আসু-ও। মুখ রাখতে দলটি জানিয়েছে, তারা টাকা ফেরত দিতে প্রস্তুত।

himanta biswa sarma saradha case rajibakhsya raxit guahati cbi national news online national news Rebellion Saradha scam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy