সিনেমা হলে জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন কেউ উঠে না দাঁড়ালে তাঁর দেশপ্রেম কম, এমনটা ধরে নেওয়া যায় না। মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের। —প্রতীকী ছবি।
সিনেমা হলে জাতীয় সঙ্গীত বাজানো বাধ্যতামূলক করা নিয়ে নির্দেশ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিল সুপ্রিম কোর্ট। মানুষ নিখাদ বিনোদনের জন্য সিনেমা হলে যান, সেখানেও দেশপ্রেমের পরিচয় দিতে হবে কেন? প্রশ্ন তুলল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৬ সালে সিনেমা হলে জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টই দিয়েছিল। সেই নির্দেশ সংশোধন করতে যে আদালত প্রস্তুত, সে ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। তবে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারও আইন সংশোধন করে এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে পারে।
২০১৬ সালের নভেম্বরে সিনেমা হলে জাতীয় সঙ্গীত বাজানো ও সেই সময়ে দর্শকদের উঠে দাঁড়ানো বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টেরই একটি বেঞ্চ।
কিন্তু সোমবার সেই নির্দেশের পিছনে যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। তিন বিচারপতি জানান, তাঁরা ওই নির্দেশ খারিজ করে দিতে পারেন। অথবা বিষয়টি সিনেমা হল কর্তৃপক্ষের বিবেচনার উপরে ছাড়তে পারেন।
এর পরে বেঞ্চ জানায়, সরকারও আইন সংশোধন করে এ বিষয়ে অবস্থান নিতে পারে। বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘দেশপ্রেম জাহির করার প্রয়োজনটা কি? সিনেমা হল বিনোদনের জায়গা। এর পরে কী ধরনের পোশাক পরে দর্শকেরা হলে যাচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। আমরা কোথায় গিয়ে থামব?’’ অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালকে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘জাতীয় সঙ্গীত বাজানো বাধ্যতামূলক করা প্রসঙ্গে সরকারই বা কেন পদক্ষেপ করছে না? সব দায় আদালতের উপরে চাপানো হচ্ছে কেন?’’
২০১৬ সালের নির্দেশ বদলানোর বিরোধিতা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, ‘‘কোর্টের এই নির্দেশে সমস্যা নেই। দেশপ্রেম জাগানো প্রয়োজন।’’ জবাবে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘মূল্যবোধ অনেক উপায়ে তৈরি করা যায়। কিন্তু আদালতের নির্দেশে তা হয় না।’’ এ নিয়ে সরকার কোনও নির্দেশিকা জারি করতে রাজি কি না, তা জানতে বেণুগোপালকে নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ। ৯ জানুয়ারি ফের শুনানি হবে। আদালতের মন্তব্য, ‘‘জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর সময় কেউ যদি উঠে না দাঁড়ান, তা হলে তাঁর মধ্যে দেশপ্রেম কম, এমনটা ধরে নেওয়া যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy