ফাইল ছবি।
কান্নায় ফুঁপিয়ে উঠছেন। কোনও রকমে যে সেই কান্না চাপার চেষ্টা করছেন সেটাও স্পষ্ট। চোখ-মুখ কার্যত ফ্যাকাসে। ভিজে যাওয়া চোখে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বারে বারে একটা কথাই বলছেন, তিনি নির্দোষ। নির্দোষ তাঁর ‘বাবা’ রাম রহিমও। সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমন ভাবেই দেখা গেল হানিপ্রীত ইনসানকে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই তিনি পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করবেন।
‘বাবা’কে যে দিন পঞ্চকুলার আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়, সে দিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাম রহিমের পালিত কন্যা হানিপ্রীত। কিন্তু, রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করার পরেই পঞ্চকুলায় চূড়ান্ত তাণ্ডব চালায় ডেরা সচ্চা সৌদার ভক্তেরা। অভিযোগ, সেই তাণ্ডব হানিপ্রীতের নির্দেশেই হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে হানিপ্রীত বলেন, ‘‘আমাকে যে ভাবে উপস্থাপিত করা হয়েছে, তাতে এখন নিজেকেই নিজে প্রচণ্ড ভয় পাচ্ছি। চূড়ান্ত মানসিক চাপে রয়েছি। কী করব বুঝতে পারছি না।’’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘আমি একা মেয়ে। আর এত্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আমাকে প্রশাসন অনুমতি না দিলে কী ভাবে আদালত চত্বরে যেতাম।! কী ভাবেই বা বাবার সঙ্গে চপারে উঠতাম! ওঁরাই আমাকে অনুমতি দিয়েছিলেন। আমি কোথায় ছিলাম, তাণ্ডবের সময়! আর বাবাকে দোষী সাব্যস্ত করার পর ভীষণই ভেঙে পড়ি। কী ভাবে আমি জড়িত থাকব বলুন তো!’’
আরও পড়ুন: শর্তপূরণ হলেই কি ধরা দেবেন হানিপ্রীত
রাম রহিমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে প্রচুর জলঘোলা হয়েছে। তা নিয়ে হানিপ্রীত ভীষণই হতাশ। এক জন মেয়ের সঙ্গে তাঁর বাবার স্বাভাবিক সম্পর্ক নিয়ে এ ভাবে কাদা ছোড়াটা মোটেই ভাল চোখে নিচ্ছেন না তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বুঝতে পারছি না। বাবা-মেয়ের এমন পবিত্র সম্পর্ককে এরা কোথায় নামিয়েছে! আমি জানতে চাই, এক জন বাবা তার মেয়ের মাথায় হাত রাখে না? এক জন মেয়ে তার বাবার কাছে যায় না?’’ তিনি তাঁর প্রাক্তন স্বামী বিশ্বাস গুপ্তকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন: বোরখা পরে দিল্লির রাস্তায় কি হানিপ্রীত
গত অগস্টের শেষ দিকে ডেরা প্রধানকে দোষী সাব্যস্ত করার দিন থেকেই পলাতক ছিলেন হানিপ্রীত। সীমান্ত পেরিয়ে তিনি নেপালে চলে গিয়েছেন বলেও বারে বারে খবর হয়। কিন্তু, হানিপ্রীতের কোনও সন্ধান পায়নি পুলিশ। গত সপ্তাহে দিল্লি হাইকোর্টে তাঁর আইনজীবী ট্রানজিট অ্যান্টিসিপেটরি জামিনের আবেদন করেন। আদালত সেই আর্জি খারিজ করে দেয়। ওই সাক্ষাৎকার হানিপ্রীত বলেন, ‘‘আমি কোথাও যাইনি। নেপাল তো নয়ই। ভারতেই ছিলাম। আসলে সকলের সামনে আসতে পারিনি, এতটাই ডিপ্রেশনে ছিলাম। পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করব।’’
আরও পড়ুন: ‘বাবার সঙ্গে হানিপ্রীতকে নগ্ন অবস্থায় দেখেছি’
হানিপ্রীতের অভিযোগ, ডেরায় হাজার হাজার মহিলা রয়েছেন। সেখান থেকে মাত্র দু’জনের অভিযোগকেই গুরুত্ব দেওয়া হল কেন? এবং তা-ও চিঠির বয়ানের ভিত্তিতে! কেন ওই মহিলারা সামনে এলেন না? প্রশ্ন হানিপ্রীতের। ওই সাক্ষাৎকারে হানিপ্রীত জানিয়েছেন, তিনি নির্দোষ। কোনও ঘটনার সঙ্গেই তাঁর যোগ নেই। এমনকী ‘বাবা’ রাম রহিমও নির্দোষ। তাঁর কথায়, ‘‘সত্য সামনে আসবেই। তখন গোটা দুনিয়া আমার কথা মিলিয়ে নিতে পারবে।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমরা প্রবল দেশভক্ত। দেশকে প্রচণ্ড ভালবাসি। পাশাপাশি আমি আইন মেনে চলা এক জন মহিলা। তাই এই তদন্তে সব রকম ভাবে সাহায্য করতে তৈরি আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy