হানিপ্রীত ইনসান।— ফাইল চিত্র।
আটত্রিশ দিন পরে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন হানিপ্রীত ইনসান। জেলবন্দি ধর্ষক বাবার ৩৭ বছর বয়সি ‘পরি’।
২৫ অগস্ট জোড়া ধর্ষণ কাণ্ডে রাম রহিমের ২০ বছর কারাদণ্ড ঘোষণার দিন থেকেই ফেরার ছিলেন হানিপ্রীত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, আদালত থেকে জেলে যাওয়ার পথে বাবাকে নিয়ে পালানোর ছক কষেছিলেন। সাজা ঘোষণার দিন পঞ্চকুলা, সিরসা-সহ হরিয়ানার বিভিন্ন জায়গায় হিংসা ছড়ানো ও দেশদ্রোহের অভিযোগও দায়ের করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। হরিয়ানা পুলিশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকার একদম প্রথমে উঠে আসে প্রিয়ঙ্কা তানেজা ওরফে হানিপ্রীতের নাম। কিন্তু কিছুতেই ধরা যাচ্ছিল না তাঁকে।
আজ সকালে হঠাৎ টিভির পর্দায় ভেসে ওঠে হানিপ্রীতের মুখ। গ্ল্যামার কিঞ্চিৎ কমলেও চিনতে অসুবিধে হবে না কারও। ফোঁপাতে ফোঁপাতে তিনি বলেন, ‘‘বাবা কি মেয়ের মাথায় হাত রাখতে পারেন না? মেয়ে কি বাবাকে ভালবাসতে পারে না? আমাদের পবিত্র সম্পর্ক নিয়ে যে ভাবে কুৎসা ছড়ানো হচ্ছে, তাতে আমার মন ভেঙে গিয়েছে!’’ রাম রহিম গ্রেফতারের দিন পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘‘হরিয়ানা সরকার নিরাপত্তা দিয়েছিল বলেই তো আমি আদালত বা জেলের মতো জায়গায় যেতে পেরেছিলাম!’’
হানিপ্রীত জানান, এখন আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করার কথা ভাবছেন। ‘‘তবে মন শক্ত করতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে,’’ বলেন তিনি। কিন্তু আর দেরি করেনি হরিয়ানা পুলিশ। তৎক্ষণাৎ বিশেষ দল গড়ে রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। পুলিশের দাবি, সাক্ষাৎকার সম্প্রচারিত হওয়ার ঘণ্টা ছয়েকের মধ্যেই চণ্ডীগড় জাতীয় সড়কের কাছ থেকে গ্রেফতার করা হয় হানিপ্রীত ও তাঁর সঙ্গী এক মহিলাকে। বুধবার হানিপ্রীতকে আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন পঞ্চকুলার পুলিশ কমিশনার এ এস চাওলা।
হরিয়ানা পুলিশ হানিপ্রীতকে তাদের হেফাজতে নিলেও এই গ্রেফতার নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়ে হানিপ্রীত দিল্লিতে ছিলেন। আত্মসমর্পণ করা নিয়ে তিনি আইনজীবীর সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। এ বিষয়ে হরিয়ানা পুলিশকে জিজ্ঞাসা করা হলে কমিশনার ‘তদন্তের স্বার্থে কিছু বলা যাবে না’ বলে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
এর আগে অন্তত পাঁচ বার হানিপ্রীত পুলিশের জাল কেটে পালান বলে খবর। পুলিশের অনুমান, ২৫ অগস্ট হেলিকপ্টারে করে বাবার সঙ্গে রোহতক জেলে যাওয়ার পরে রাতটা শহরের এক গেস্ট হাউসে কাটান তিনি। পরের দিন ডেরার সদর দফতরে ছিলেন। পরে বেগতিক দেখে হনুমানগড়ে এক আত্মীয়ের বাড়ি চলে যান। পুলিশ পিছু নিলে কিছু দিন রাজস্থানে এক ডেরা-অনুগামীর বাড়িতে ছিলেন। ২ সেপ্টেম্বর উদয়পুরের এক মলে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ পৌঁছনোর আগেই ফের বেপাত্তা হয়ে যান। তার পর রাম রহিমের গ্রাম গুরুসর মোড়িয়া, লাজপত নগর, গুরুগ্রামে চলতে থাকে পুলিশের সঙ্গে হানিপ্রীতের চোর-পুলিশ খেলা। রটে যায়, নেপালে পালিয়েছেন তিনি।
অবশেষে যবনিকা পড়ল এক মাসের ওপর চলতে থাকা নাটকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy