ভারতীয় আইন অনুযায়ী, বিবাহবিচ্ছেদের পর বা আলাদা থাকাকালীন স্বামীকে নিতে হয় প্রাক্তন স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব। চলতি কথায় যা খোরপোশ নামে পরিচিত। কেউ কেউ এটি এক বারে নিয়ে থাকেন। আবার মাসে মাসে বা বছরে খোরপোশের টাকা দেওয়ার রেওয়াজও রয়েছে। সাবেক স্বামীর থেকে প্রাপ্ত ভরণপোষণের অর্থ কি আদৌ করযোগ্য? এ ক্ষেত্রে কী বলছে আয়কর দফতরের নিয়ম? আনন্দবাজার ডট কম-এর এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।
আয়করের নিয়মে বলা হয়েছে, অর্থ প্রদানের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে করযোগ্যতা। যদি কোনও বিবাহবিচ্ছিনা তাঁর সাবেক স্বামীর থেকে খোরপোশ বাবদ এককালীন মোটা অর্থ পেয়ে থাকেন, তা হলে একে মূলধনী প্রাপ্তি (ক্যাপিটল রিসিপ্ট) হিসাবে গণ্য করা হবে। এটি একেবারেই করযোগ্য নয়। অন্য দিকে মাসে মাসে বা বছরে ভরণপোষণ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ ‘অন্যান্য উৎস থেকে আয়’ হিসাবে গণ্য করে থাকে আয়কর দফতর। এর উপর কর আরোপ করার নিয়ম রয়েছে।
এককালীন বা পর্যায়ক্রমে, যে ভাবেই খোরপোশের অর্থ দেওয়া হোক না কেন, সেটা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যক্তিগত খরচ হিসাবে বিবেচনা করে থাকে আয়কর দফতর। ফলে সাবেক স্ত্রীকে ভরণপোষণের টাকা দেওয়ার জন্য কোনও কর দিতে হয় না তাঁকে। বিবাহবিচ্ছেদের আগে দান সামগ্রী একে অপরকে ফিরিয়ে দিলে, তার উপর ধার্য হবে না কোনও কর। কারণ, তখন সেগুলি বিয়েতে পাওয়া উপহার হিসাবে গণ্য করবে আয়কর দফতর।
কিন্তু, আইনি পথে দাম্পত্য ভেঙে যাওয়ার পর একে অপরকে বিভিন্ন সামগ্রী ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টিকে করের আওতায় রেখেছে প্রশাসন। তখন আর মা-বাবা, আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবদের থেকে প্রাপ্ত পণ্যগুলিকে আর উপহার হিসাবে গণ্য করা হয় না। ফলে সেগুলির দাম ৫০ হাজার টাকার বেশি হলেই কর দিতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে।
আরও পড়ুন:
কোনও মহিলা তাঁর সাবেক স্বামীর থেকে ভরণপোষণ বাবদ কত অর্থ পেতে পারেন, তা হিসাব করার একটা পদ্ধতি রয়েছে। তবে বিষয়টি আদালতের উপর নির্ভরশীল। বিচারপতি বা বিচারকেরা উভরের আর্থিক অবস্থার মূল্যায়ন করে খোরপোশের বিষয়টি ঠিক করেন। এর মাধ্যমে বিয়ের সময়কার জীবনযাত্রার মান বজায় রাখতে সাহায্য করেন তিনি।